খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিপা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত

খুলনা ব্যুরো: দুই বছর পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবারও নিপা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়েছে। বারবার মাত্রা অতিরিক্ত জ্বর ও অজ্ঞান হওয়ায়ার কারনে গোপালগন্জের বাসিন্দা রাশিদা (২০) গত ১১ জানুয়ারী খুমেক এ ভর্তি হয়।
তার রোগের লক্ষণ দেখে পরীক্ষা নীরিক্ষা করে মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে চিকিৎসকরা নিশ্চিত  হন শরীরে নিপা ভাইরাস বহন করছেন রাশিদা। অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে খুমেক হাসপাতালে মেডিসিন ইউনিট-১ এ সম্পুর্ন  আলাদা করে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
রোগীর পিতা মোঃ বাবুল হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বারবার মাত্রা অতিরিক্ত জ্বর ও অজ্ঞান হওয়ায় গোপালগঞ্জ থেকে মেয়ে রাশিদা (২০)-কে নিয়ে গত ১১ জানুয়ারী হাসপাতালে আসেন তিনি।
অতিমাত্রায় ছোঁয়াছে এ ভাইরাসের ৮০ শতাংশের বেশী রোগীর মৃত্যুর রেকর্ড রয়েছে। ফলে শীত মৌসুুমের শুরুতে স্বাস্থ্য প্রশাসনের যে সচেতনতা মূলক প্রচারণা চলেছে তা আরও বাড়ানোর পাশাপাশি সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। গত দুই বছর খুলনা ও আশে পাশের এলাকাগুলোতে কোন নিপা ভাইরাস রোগী শনাক্ত না হলেও ২০১৬ সালে শনাক্ত হওয়া দুই রোগীই মৃত্যুবরণ করেছে এই রোগে।
নিপা ভাইরাস সম্পর্কে  খুমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ এস এম কামাল হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, নিপা ভাইরাসটি মূলত বাদুর থেকে ছড়ায়। খেজুরের কাঁচা রসে বাদুর বসে তাই কাঁচা রস থেকেই মূলত নিপা ভাইরাসের অন্যতম প্রধান উৎস। বাদুর ছাড়াও শুকুর-এর লালা ও পায়খানা থেকে নিপা ভাইরাস ছড়াতে পারে। নিপা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে প্রথমত কাঁচা খেজুরের রস একেবারেই খাওয়া যাবে না। ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেজুরের রস খেতে হবে।
এছাড়া শুকুর ও বাদুর-এর লালা ও পায়খানা লেগে থাকতে পারে। এমন যে কোন জিনিস সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেন এ চিকিৎসক।
খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, জেলাতে এ বছর এখনও নিপা ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হয়নি। একজনমাত্র রোগী খুমেক হাসপাতালে রয়েছে, যা খুলনার বাইরে থেকে এসছে। বর্তমানে নিপা ভাইরাসের মৌসুম চলছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও স্বাস্থ্য কর্মীরাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে সচেতন করছে।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ রাশিদা খানম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, গত দুই বছরে খুলনায় কোন নিপা ভাইরাসের রোগী ছিল না। মানুষ সচেতন হয়েছে। এরপরও আমরা মৌসুমের শুরু থেকে সচেতনতা মূলক প্রচারণা চালাচ্ছি। সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছি। যেহেতু নিপা ভাইরাসের কোন চিকিৎসা নেইতাই সতর্কতাই একমাত্র উপায়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে খুলনায় নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত দুইজনই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.