খুলনা জেনারেল হাসপাতালে করোনা টেষ্টের টাকা আত্মসাৎ, খোঁজ মেলেনি লাপাত্তা প্রকাশের গত ১০ দিনেও

খুলনা ব্যুরো: লাপাত্তা খুলনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট প্রকাশ কুমার দাসের খোঁজ মেলেনি বিগত ১০ দিনেও। তার বিরুদ্ধে মামলারও অনুমতি মেলেনি দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে প্রকাশ লাপাত্তা।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কাম সিভিল সার্জনের অভিযোগ প্রকাশ দুই কোটি ৫৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অনেকটা একতরফা এ অভিযোগের কতটা সত্যতা আছে তার প্রমান মিলবে প্রকাশকে উদ্ধারের পরই। এজন্য পুলিশ, দুদক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পৃথক পৃথকভাবে কাজ করছে।
এদিকে, কেএমপির খালিশপুর থানায় প্রকাশের স্ত্রী গত দু’দিন ধরে ঘুরেও তার স্বামীর নিখোঁজের জিডি করতে পারেননি। খালিশপুর থানার ওসি তাকে জানিয়েছেন প্রকাশের বিরুদ্ধে দুদকসহ একাধিক সংস্থা খোঁজ-খবর নিচ্ছে। তার সন্ধানের জন্য মোবাইল ট্র্র্যাকিং হচ্ছে। সুতরাং তার সন্ধান চেয়ে কোন জিডি নেয়া হবে না।
খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট(ল্যাব:) প্রকাশ কুমার দাস গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ হন।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা: নিয়াজ মোহাম্মদ বিটিসি নিউজকে বলেন, তার বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দেখা যায় বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার ইউজার ফি বাবদ আদায়কৃত টাকা থেকে অন্তত: দু’কোটি ৫৮ লাখ টাকায় ঘাপলা পাওয়া যায়। যে টাকা তিনি সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
তাকে ওই টাকার জন্য চাপ দেয়া হলে তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুর থেকে লাপাত্তা। এরপর ২৫ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কাম সিভিল সার্জন বাদী হয়ে কেএমপির খুলনা থানায় একটি করেছেন। এ বিষয়ে খুলনা দুদকে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। দুদক ওই অভিযোগ ঢাকায় পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় অনুমোদন চেয়েছে। কিন্তু বিগত এক সপ্তাহেও এ ব্যাপারে কোন অনুমতি আসেনি।
খুলনা দুদকের উপপরিচালক মো: নাজমুল হাসানকে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি। তবে অন্য একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কেন্দ্রের অনুমোদন আসলেই তারা মামলা করে সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করবেন। কিন্তু অনুমতি না হওয়ায় তারা কিছুই করতে পারছেন না। তবে এটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে নোটও দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, কেন্দ্রের অনুমোদন পেতে এক সপ্তাহ নয়, এর চেয়ে আরও অনেক বেশি সময়েরও প্রয়োজন হয়। অনুমোদন দেয়া না দেয়া ঢাকার ওপর নির্ভর করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অবশ্য, বিগত ১০দিন ধরে প্রকাশ নিখোঁজ থাকায় তার পরিবারেও দেখা দিয়েছে হতাশা। তার স্ত্রী মাধবীলতা খুলনা শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের ফার্মাসিষ্ট হিসেবে কর্মরত। গতকাল শনিবার ও আজ রবিবার (০৩ অক্টোবর)  তিনি খালিশপুর থানায় গিয়েছিলেন তার স্বামী নিখোঁজ এ বিষয়টি জানিয়ে জিডি করতে। কিন্তু পুলিশ বলেছে, এটি নিয়ে দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে, জিডি হবে না।
এ ব্যাপারে খালিশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো: কামরুল হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন, যেহেতু বিষয়টি একটি স্পর্শকাতর
সেহেতু জিডি হবে না। তাছাড়া তিনিতো খালিশপুর থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ হননি। তিনি তার বোনের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়িতে গিয়ে নিখোঁজ হন। সুতরাং জিডি হলে সংশ্লিষ্ট থানায় হবে, খালিশপুরে নয়।
অপরদিকে, খুলনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিষ্টের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগটি এখন পর্যন্ত রয়েছে সেটি অনেকটা এক তরফা। যে কারণে প্রকাশের উপস্থিতিই এখন মূল লক্ষ্য। এ নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। সিভিল সার্জন নিজেও এমন ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, আগে প্রকাশ উদ্ধার হোক, তারপর তিনি বলুক টাকা আত্মসাতের সাথে আর কারা কারা জড়িত।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.