খুলনায় লকডাউন কার্যকরে প্রশাসনের ব্যস্ততা, উদাসীন জনগন, আটক-৭


খুলনা ব্যুরো: বিনা প্রয়োজনে বের হলেই জরিমানা। বাশ দি‌য়ে ব‌্যরি‌কেড দেয়া হ‌য়ে‌ছে শহরে অধিকাংশ রাস্তাঘাট। প্রশাসন সদস্যদের লকডাউন কার্যকরে রয়েছে ব্যস্ত। তবে ভিন্ন চিত্রও রয়েছে। জেলখানা ও রূপসাঘা‌টের মা‌ঝি‌দের লকডাউন মানার ক্ষে‌ত্রে চরম উদাসীনতা দেখা গে‌ছে। দুরপাল্লার কোন বাস খুলনা থে‌কে ছে‌ড়ে যায়নি। আটক করা হয়েছে বেশ কয়েজনকে।
খুলনায় ক‌রোনা সংক্রমণ রো‌ধে জেলা প্রশাস‌নের সাত‌দি‌নের লকডাউ‌নের প্রথম দি‌নের শুরু‌তে সাধারণ মানু‌ষের উপ‌স্থি‌তি কম থা‌ক‌লেও বেলা বাড়ার সা‌থে সা‌থে তা‌দের উপ‌স্থি‌তি কিছুটা বাড়‌ছে। শিববাড়ি মোড়ে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। কৌতুহল নিয়ে অনেকেই রাস্তায় বের হচ্ছেন।
নি‌র্দেশ পাল‌নে ব‌্যস্ত থাক‌তে দেখা গে‌ছে প্রশাস‌নের সদস‌্যদের। লকডাউন’ সর্বাত্মকভাবে পালনে বাধ্য করতে পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক ও মোড়ে মোড়ে টহল দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
খুলনার অ‌ধিকাংশ রাস্তাঘাট বাশ দি‌য়ে ব‌্যরি‌কেড দেয়া হ‌য়ে‌ছে। রূপসা ট্রাফিক স্ট‌্যান্ড মো‌ড়ে গতকাল সোমবার রাত থে‌কে চার পা‌শের রাস্তা বাশ দি‌য়ে বে‌ঁধে দে‌য়া হ‌য়ে‌ছে। প্রশাসন ও স্বেচ্ছা‌সেবক‌দের উ‌দ্যোগে শহ‌রের বি‌ভিন্ন ওয়া‌র্ডে বাঁশ বে‌ধে রাস্তা বন্ধ ক‌রে দেওয়া হ‌য়ে‌ছে।
ত‌বে জেলখানা ও রূপসাঘা‌টের মা‌ঝি‌দের লকডাউন মানার ক্ষে‌ত্রে উদাসীনতা দেখা গে‌ছে। প্রশাস‌নের পক্ষ থে‌কে বলা হ‌য়ে‌ছে ১০ জ‌নের অ‌ধিক যাত্রী পারাপার করা যা‌বে না। স্বাভা‌বিক সম‌য়ে ট্রলা‌রের মা‌ঝিরা ১০ থে‌কে ১২ জন ওঠা‌লেও আজ ৩০ জন যাত্রী নি‌য়ে নৌকা পার কর‌ছেন। তারা নিয়ম নী‌তির কোন তোয়াক্কা কর‌ছেন না। সকাল কিছু ফ‌লের দোকান খোলা থাক‌লেও অন‌্য কোন দোকানপাট খুল‌তে দেখা যায়‌নি। ত‌বে কিছু দোকা‌নের সাম‌নে মা‌লিক ও কর্মচারী‌দের উপ‌স্থিত থাক‌তে দেখা গে‌ছে।
সকাল থেকে নগরীর ডাকবাংলা, পিকচার প্যালেস মোড়, শিববাড়ি ও সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়া মতো। ডাকবাংলা ও পিকচার প্যালেস মোড়ের সব দোকান বন্ধ ছিল। সোনাডাঙ্গা বাস স্টান্ড থেকে কোন বাস ছেড়ে যায়নি।
এদিকে ঘোরাফেরা ও মাস্ক না থাকায় নগরীর সাতরাস্তা মোড় থেকে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম।
খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, খুলনায় সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জনসাধারণকে সচেতন করতে সমগ্র জেলায় মাইকিং ও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন দু’দিন আগে থেকে চালানো হয়েছে। খুলনার সঙ্গে সাতক্ষীরার সংযোগ চুকনগর, যশোরের সংযোগ যুগনীপাশা ও বাগেরহাটের সঙ্গে সংযোগ কুদিরবটতলায় নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি সেবার কাজে নিয়োজিত পরিবহন ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
এসপি আরো জানান, জেলায় ২৬টি চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে পুলিশের যত দায়িত্ব আছে, সব বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে জেলার ৯ থানাকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেভাবেই মাঠে কাজ করছে পুলিশ। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুলিশের পক্ষ থেকে যা যা করার সবই করা হচ্ছে। যা লকডাউনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন, খুলনায় সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। লকডাউন বাস্তবায়নে জেলাজুড়ে ২৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্টেট দায়িত্ব পালন করছেন। লকডাউন চলাকালে সপ্তাহব্যাপী প্রশাসনের এ কঠোরতা অব্যাহত থাকবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.