খুলনায় ভোটের মাঠে উৎসবের আমেজ

 

খুলনা ব্যুরো: দিন যতই ঘনিয়ে আসছে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন ততই উৎসবমুখর হয়ে উঠছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের পদভারে প্রকম্পিত হয়ে উঠছে খুলনা। নগরীর হোটেলগুলোতে যেমন সীট পাওয়া দুষ্কর হচ্ছে তেমনি সরকারি-বেসরকারি রেষ্ট হাউজগুলোও পূর্ণ হয়ে আছে।

আগামী ১৫ মে’র সিটি নির্বাচনকে ঘিরে প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতারাই এখন খুলনায়। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের মেয়রপ্রার্থী আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেকের পক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানের জনপ্রতিনিধিরাই আসছেন বেশি। মন্ত্রী-এমপিদের নির্বাচনী প্রচারনায় অংশ নেয়ার সুযোগ না থাকায় জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং কোন কোন পৌরসভার মেয়রও আসছেন নৌকার পক্ষে প্রচারনায়।

পক্ষান্তরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর পক্ষে আসছেন কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির একাধিক নেতাসহ অনেক কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী-মেয়র-এমপি। আসছেন চলচ্চিত্র তারকারাও। একমাত্র জাতীয় পার্টি ও সিপিবি ছাড়া বাকী তিনটি দলের কেন্দ্রীয় নেতারা খুলনার ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। সব মিলিয়ে খুলনা এখন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে।

আওয়ামীলীগের মেয়রপ্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের পক্ষে শুধু নয়, বরং নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করে তফশীল ঘোষণার পর থেকেই খুলনা অবস্থান করছেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন। যদিও মেয়ের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের কারনে তিনি ৬ মে অবস্থান করবেন ঢাকায়।

এরপরই তিনি ফিরে আসবেন খুলনায়। এছাড়া কেসিসি নির্বাচনী প্রচারনায় অংশ নেয়ার সুযোগ না থাকায় আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে শহরের বাইরে গল্লামারী স্মৃতিসৌধ চত্বরে গত ১৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সভা থেকেও কেসিসি নির্বাচনী প্রচারনা চালানো হয়।

ওই প্রতিনিধি সভায় ছিলেন, দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ ও আব্দুর রহমান এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম ও আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, নির্বাহী সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি ও এস এম কামাল হোসেন, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, কেন্দ্রিয় নেতা এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন, ইসাহাক আলী খান পান্না, মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান এমপি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগসহ অনেকে।

ওই প্রতিনিধি সভাকে অবশ্য বিএনপির মেয়রপ্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু ‘ভোট ডাকাতি’র পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। নগরীতে আওয়ামীলীগের মেয়রপ্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের নৌকার পক্ষে প্রচারনা চালিয়েছেন বরিশালের বাকেরগঞ্জের পৌরমেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়াসহ অনেক জনপ্রতিনিধিও।

অপরদিকে, বিএনপি মনোনীত ও ২০ দলীয় জোট মেয়রপ্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর পক্ষে কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই খুলনায় অবস্থান করছেন। ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করছেন নগরীর বিভিন্ন স্থানে গিয়ে। খুলনায় রয়েছেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মোঃ মিজানুর রহমান মিনু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক, জাসাসের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খান, জাকির হোসেন রোকন, খলনায়ক আজাহার আলী চৌধুরী শিবা সানু, মোহাম্মদ ফেরদৌস ফকির, আমির হোসেন বাবু, ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুর মিয়া, চিত্র নায়িকা শাহ নূরসহ বেশ কয়েকজন চলচ্চিত্র তারকা।

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা মুজ্জাম্মিল হকের পাখা প্রতীকে ভোট চেয়ে নগরীতে গণসংযোগে অংশ নেন আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা সৈয়দ মোঃ ফয়জুল করীমসহ আরও অনেক কেন্দ্রীয় নেতা। শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় ও শীর্ষস্থানীয় নেতাবিহীন প্রচারনা চালাচ্ছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক। কেন্দ্রীয় নেতারা না থাকলেও স্থানীয় নেতাদের নিয়ে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন সিপিবি মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান বাবু।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.