খুলনায় একদিনেই করোনা পজেটিভ সনাক্ত ৪৩ জন

খুলনা ব্যুরো: একদিনে একই পরিবারের চারজনের করোনা পজেটিভসহ আজ বুধবার (১০ জুন) খুলনা মহানগরীতে ১৯ জনের করোনাভাইরাস পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। এদিন খুলনা জেলায় সনাক্ত হয় ১১ জনের। এ নিয়ে খুলনা মহানগরীতে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮৫ জনে এবং জেলায় ৮৫ জন।
এছাড়া  খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে সনাক্ত হয় যশোরের সাতজন, সাতক্ষীরার একজন, মাগুরার একজন, ঝিনাইদহের একজন, বাগেরহাটের একজন এবং নড়াইলের একজন।
শুরু থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সনাক্ত হয় আজ বুধবার। গত ৭ এপ্রিল থেকে খুলনা মেডিকেলের পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস(কোভিড-১৯) পরীক্ষা শুরু হয়। বুধবার পর্যন্ত এ ল্যাবে সর্বমোট নমুনা পরীক্ষা হয় আট হাজার ৪৪৬টি। যার মধ্যে সর্বমোট আক্রান্ত হন ৪৪৮জন। এর মধ্যে ১০জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে খুলনা মহানগরীর দু’জন, জেলার চারজন এবং অন্যান্য জেলার চারজন রয়েছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবির্ক সমন্বয়কারী এবং খুমেক’র উপাধ্যক্ষ ডা: মো: মেহেদী নেওয়াজ এ তথ্য বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন। আজ আক্রান্তদের মধ্যে নগরীর মুজগুন্নির একই পরিবারের চারজন রয়েছেন। ওই পরিবারের আগেও একজন আক্রান্ত হন। সব মিলিয়ে ওই পরিবারে করোনা রোগীর সংখ্যা পাঁচজন।
এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের দু’জন চিকিৎসক দম্পতির এক সন্তান এবং গৃহপরিচারিকারও  করোনা সনাক্ত হয়েছে । নগরীর সোনাডাঙ্গা নাসির সড়কের একজন বিএনপি নেতার বাড়ির ভাড়াটিয়া এবং খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফার্মাসিষ্টেরও করোনা পজেটিভ হয়। পজেটিভ হয়েছেন পাইকগাছার কপিলমুনির একজন সাংবাদিক পত্নিরও।
খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবের তথ্য মোতাবেক আজ আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন নগরীর মুজগুন্নির তাজমুন্নাহার(২০), কাজী লিটন(৪৫), লাকী সুলতানা(৩৫) ও লুনা আক্তার(৩০), ভৈরব ষ্ট্যান্ড রোডের মিথুন সাহা(৩৩), জেলা কারাগারের নুর মোহাম্মদ(৩২), ক্রিসেন্ট পাকা কলোনীর সুরাইয়া আক্তার(২৪) ও মো: মিনহাজুল আবেদীন(২১), সোনাডাঙ্গা সিদ্দিকীয়া মহল্লার বাসিন্দা লতিফ হাওলাদার(৭০), সিভিল সার্জন দপ্তরের সাবিনা ইয়াসমিন, খুলনা মেডিকেল কলেজের মো: সালাউদ্দিন শেখ(৪৬) ও মো: রুহুল আমিন, খুমেক হাসপাতালের ফার্মাসিষ্ট ও নগরীর নাসির সড়কের নাজির উদ্দিন আহমেদ নান্নুর বাড়ির ভাড়াটিয়া অবনী বিশ্বাস(৪৬), খুমেক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: আসাদুল্লাহিল গালিবের মেয়ে তারান্নাম গালিব(১২) ও গৃহপরিচারিকা কমলা বেগম(৬৫), লবনচরা থানাধীন ইসলামপাড়ার মো: একরাম আলী(৩৩), খালিশপুর এনএফ-১৫৪এর বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন(৬০), দোলখোলা ইসলামপুর রোডের বাসিন্দা কালিপদ পোদ্দার(৫৫), বয়রা হাজী ফয়েজ উদ্দিন রোডের মুসফিকা জান্নাত সুরাইয়া, জেলার দাকোপের পুটখালির ইন্দ্রজিত রায় ও গড়ইখালীর জলিল শেখ(৩৮), রূপসার জুগিহাটির শিল্পী রানী(৫০), জিহাদী মসজিদ গলির ব্যবসায়ী রবাট নিক্সন ঘোষ(৪২), আইচগাতীর মরিয়ম(১২) ও রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী আঞ্জুয়ারা(৪০), তেরখাদার সুমন (২৫), বটিয়াঘাটার মো: ফখরুল ইসলাম(৩৮), পাইকগাছার কপিলমুনির তৃপ্তি পাল (৩৬) এবং কয়রার হাতিয়ারভাঙ্গার রমিশ সরকার। 
অপর একটি সূত্র জানায়, ইতোপূর্বে কারও করোনা সনাক্ত হলেই সাথে সাথে ওই বাড়িটি লকডাউনসহ আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রাতিষ্ঠানিক অথবা হোম আইসোলেশনে নেয়া হতো। স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হতো তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা। কিন্তু গত ৩১ মে থেকে হঠাৎ খুলনায় করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনকে অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে।
যে কারণে অনেক বাড়িই লকডাউন না করে শুধুমাত্র রোগীদেরকে পৃথক করে রাখা হচ্ছে। তবে ওই বাড়ির অন্যান্য লোকের অবাধ বিচরণ ছিল লক্ষ্যনীয়। এমনই একটি বাড়ি নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন নাসির সড়কের। ওই বাড়িটিতে দু’জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। রয়েছেন ব্যবসায়ীসহ আরও অনেক ভাড়াটিয়াও। গত ৪ জুন ওই বাড়ির মালিকের করোনা পজেটিভ হলেও বাড়িটি লকডাউন করা হয়নি। আজ ওই বাড়িরই একজন স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা পজেটিভ হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে আতংক। এভাবে নগরীর আরও অনেক বাড়ি এখনও রয়েছে লকডাউনবিহীন। যেটি করোনা সংক্রামনকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে বলেও অনেকে মনে করেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.