খুলনার জিআরপি থানার হাজতে নারীকে গণধর্ষণ, সেই ওসিসহ ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

 

খুলনা ব্যুরো:  খুলনার জিআরপি থানায় এক নারীকে আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনায় ওসি উসমান গণি পাঠানসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় গণধর্ষণের সময় থানায় দায়িত্বে থাকা ওসি, ডিউটি অফিসারসহ অজ্ঞাত তিনজনকে আসামী করা হয়েছে।

আজ শনিবার সকালে এ ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রধান কুষ্টিয়া সার্কেলের এএসপি ফিরোজ আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান কুষ্টিয়া সার্কেলের এএসপি ফিরোজ আহমেদ বলেন, জিআরপি থানায় গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যা নিবারণ আইনে মামলা করা হয়েছে। এ মামলার বাদী ভুক্তভোগী নারী। মামলা নম্বর ০৩ ও তারিখ ৯ আগস্ট। জিআরপি থানা খুলনায় মামলাটি করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলে, তবে সময় আরও বাড়তে পারে বলে জানান তদন্ত কমিটির প্রধান কুষ্টিয়া সার্কেলের এএসপি ফিরোজ আহমেদ।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে ভুক্তভোগী নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল তদন্ত কমিটি। জিজ্ঞাসাবাদের পরেই আদালতের নির্দেশে পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করে ওই নারী।

গত মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) কুষ্টিয়া সার্কেলের এএসপি ফিরোজ আহমেদসহ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করে। তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- পুলিশ পরিদর্শক শ ম কামাল হোসেইন ও মো. বাহারুল ইসলাম।

ঘটনার সূত্রে জানা যায়, খুলনা জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উসমান গণি পাঠানসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য তিন সন্তানের জননীকে গণধর্ষণ করেছে বলে আদালতে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন ওই নারী। খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই নারী অভিযোগ করেন। ঘটনা তদন্তে পাকশী রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম গত সোমবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ ছাড়া আদালতের নির্দেশে গত সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

নারীর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, গত শুক্রবার বিকেলে ওই নারী যশোরে ডাক্তার দেখাতে যান। এর পর তিনি খুলনায় আসার জন্য বেনাপোল থেকে খুলনাগামী কমিউটার ট্রেনে ওঠেন। ট্রেনটি ফুলতলা এলাকায় পৌঁছালে ট্রেনে থাকা জিআরপি পুলিশ মোবাইল চুরি করার অভিযোগ তুলে তাকে আটক করে। এর পর ট্রেন থেকে নামিয়ে তাকে খুলনা জিআরপি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

খবর পেয়ে তারা থানায় গেলে জিআরপি থানার ওসি উসমান গণি পাঠান এক লাখ টাকা দিলে তাদের বোনকে ছেড়ে দেবে বলে জানান। কিন্তু তারা টাকা দিতে না পেরে বাড়ি চলে যান। সকালে থানায় গেলে কাঁদতে কাঁদতে তার বোন জানায়, রাতে থানা হাজতে ওসি তাকে ধর্ষণ করেছে। ওসি ধর্ষণ করে চলে যাওয়ার পর পর্যায়ক্রমে আরও চার পুলিশ সদস্য তাকে ধর্ষণ করে।

এর পরের দিন গত শনিবার সকালে তার বোনকে পাঁচ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। ধর্ষণের আগে তার বোনকে পুলিশ সদস্যরা মারধরও করে বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর পরিবার।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.