খুলনার কয়রায় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদককে কুপিয়ে জখম

খুলনা ব্যুরো: খুলনার কয়রায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক আল আমীনকে (৩৩) কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা।স্থানীয় একটি খালের পানি সরানো ও ভেঙ্গে যাওয়া সংযোগ সড়ক নির্মাণকে কেন্দ্র করে গতকাল শনিবার (০৭ আগস্ট) রাত ৭ টার দিকে উপজেলার মহারাজপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
দুর্বৃত্তরা এসময় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামক একটি পাঠাগারও ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আহত আল আমীন উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মহসীন রেজা ও মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন লাবলুর ভাগ্নে। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, সকালে বড় ব্রীজের সংযোগ সড়কের পানি সরার এক স্থানে ভেঙে যাওয়ায় গাড়ি চলাচল ও পানি নিষ্কাশনে বিঘ্ন ঘটে। এজন্য ভাঙ্গন স্থানে ইজিবাইক শ্রমিক কাজ করছিলো, এসময় জিনারুল কাজ বন্ধ করে দেয়। বিকেলে আল আমীন কাজ বন্ধ করে দেওয়ার কারন জানতে চাইলে দুজনের কথা কাটাকাটির শুর হয়। এক পর্যায়ে জিনারুলকে গলাধাক্কা দিলে সে ঘটনা স্থল থেকে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে জিনারুল তার ভাই দের সাথে করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ফিরে আসলে। আবারও জিনারুল ও আল আমীন দুজনের কথা কাটাকাটি শুরু হয় এক পর্যায়ে শুরু হয় সংঘর্ষ। এ সময় আলামিন খোকন গুরুতর জখম হয়।
এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আল আমীনের বাড়ি থেকে লোকজন গিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করে। এ সময় তারা পার্শ্ববর্তি হায়াতখালি বাজারে অবস্থিত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা ক্লাবে আশ্রয় নেয়। পরে সেখানে গিয়ে হামলা চালায় আল আমীনের লোকজন। এসময় ক্লাবের আসবাবপত্রসহ বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি এলোপাতাড়ি পড়ে থাকতে দেখা যায়। ওই ক্লাবটি আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদের নির্বাচনী অফিস হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয়রা জানান, এবারের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে বর্তমান চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন ও স্থানীয় আ.লীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ কেন্দ্রে ব্যাপক লবিং চালায়। শেষ পর্যন্ত মাহমুদ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মনোনীত হন। ওই সময় থেকে দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয় এবং একে অপরকে প্রতিপক্ষ ভাবতে শুরু করে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘মাহমুদের নির্দেশে তার লোকেরা আমার ভাগ্নেকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছে। এখন তারা ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে নিজেরা পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করে আমাদের উপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।’
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মাহমুদ বিটিসি নিউজকে বলেন, এলাকার কৃষি জমির পানি সরবরাহের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বর্তমান চেয়ারম্যানের ভাগ্নে ও তার লোকজন মাছ ধরার চেষ্টা করছিলেন। স্থানীয় মানুষ এহেন কাজে বাঁধা দিতে গেলে তাদের পিটিয়ে বের করে দেয়। তারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ক্লাবে আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা চালানো হয়।
কয়রা থানার ওসি রবিউল হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘দু’পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ক্ষিপ্ত জনতা লালমিয়া নামের একজনকে আমাদের কাছে তুলে দেয়, তাকে আমাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মৃতি সংসদ ভাঙচুরের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, বিষয়টি গভীর ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.