খুমেক হাসপাতালের এম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের তিন আসামী রিমান্ডে

 

খুলনা ব্যুরো: খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মৃত ব্যক্তিকে এ্যাম্বুলেন্সে নেয়ার সময় চাঁদাবাজি ও মারপিটের অভিযোগে গ্রেফতার তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। পুলিশের ৫দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে সোমবার মহানগর হাকিম মো. শাহীদুল ইসলাম প্রত্যেকের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আসামীরা হলেন সোনাডাঙ্গা থানাধীন বয়রা মসজিদ রোডের মো. সিদ্দিকের ছেলে মো. সাইদুজ্জমান শুকুর (২২), ছোট বয়রা মসজিদ রোডের রাজাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া হারুন অর রশিদ শিকদারের ছেলে মো. আল আমিন ওরফে কালু (৩০) ও ছোট বয়রা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মাদ্রাসা রোডস্থ মো. কায়কোবাদ মোড়লের ছেলে মো. ফারুক হোসেন (৩৩)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলার দরগামহল গ্রামের খন্দকার আছাদুজ্জামানকে (৬০) গত ১৩ জুন দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিষধর সাপে কামড় দেয়। তাকে স্বজনরা উদ্ধার করে পাইকগাছা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ১৪জুন সকাল ৮টায় এ্যাম্বুলেন্সযোগে খুমেক হাসপাতালে সাপের কামড়ে অসুস্থ খন্দকার আছাদুজ্জামানকে নিয়ে পৌছায় তার ছেলে খন্দকার কামরুজ্জামান। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে আসাদুজ্জামানকে মৃত ঘোষণা করেন।

এরপর পিতার লাশ নিয়ে পাইকগাছা থেকে যে এ্যাম্বুলেন্সে খুমেক হাসপাতালে আনা হয়েছিলো সেই এ্যাম্বুলেন্সে করেই রওনা হওয়ার সময় বিপাকে পড়েন মৃতের ছেলে কামরুজ্জমান। ৪/৫জন যুবক খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে এসে লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্স আটকে দেয়। কারণ জানতে চাইলে ওই যুবকরা বলেন আমাদের এখান থেকে এ্যম্বুলেন্স ভাড়া নিয়ে লাশ বহন করতে হবে। তা না হলে আড়াই হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে যেতে হবে বলে লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সটি আটকে রাখে।
এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে মৃত পিতার লাশের সামনেই ওই যুবকরা কামরুজ্জমানকে মারপিট শুরু করে। ঘটনাটি দেখে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে প্রতিবাদ জানায়।

এ সময় প্রতিবাদকারীদের ওপরও ওই যুবকরা চড়াও হলে সাধারণ মানুষের রোষানলে পড়ে তারা। খবর পেয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় মৃত ব্যক্তির ছেলে খন্দকার কামরুজ্জামান বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করেন ।

এবিষয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মমতাজুল হক জানান, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগত রোগীদের নানা ভাবে ভয়ভীতি ও বেকায়দায় ফেলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদের সাথে জড়িতরা যেই হোক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

অপরদিকে, ঘটনার সময় এম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের সদস্যদের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সভাপতি রবিউল ইসলামও। এজন্য হাসপাতালের কর্মচারীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিষয়টি নিয়ে তত্ত্বাবধায়কের কাছে বিচার দাবি করলে তিনি তাৎক্ষনিক হাসপাতাল অভ্যন্তর থেকে বহিরাগত এম্বুলেন্স বের করে দেন। এখন পর্যন্ত বহিরাগত এম্বুলেন্সগুলো হাসপাতালের বাইরে অবস্থান করছে।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.