খুবি’র অপরাজিতা হলে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার চেষ্টা, রাতভর বিক্ষোভ

খুলনা ব্যুরো: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজিতা হলে এক মেয়ের আত্মহত্যার চেষ্টার কারণে ছুরি, দা ও বটিসহ সকল রান্নার জিনিস নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রীরা।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাতে অপরাজিতা হলের ছাত্রীরা বিক্ষোভ করে। সর্বশেষ শিক্ষকরা পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য হলে অবস্থান করেন।
শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবিতে উল্লেখ করেন, রাইস কুকার ও রান্নার সরঞ্জামাদি ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে, সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টের প্রতিবাদে সোস্যাল মিডিয়ায় কথা বলার কারণে ব্যক্তিগত আক্রমণ ও পারিবারিক শিক্ষা তুলে কথা বলায় ক্ষমা চাইতে হবে, হলে প্রয়োজনে অভিভাবক ও মহিলা আত্মীয়দের থাকার অনুমতি প্রদান করতে হবে, পানির পোকার ও খাবারের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে, প্রভোস্ট তার নিজ ডিসিপ্লিনের স্টুডেন্টদেরকে ডেকে ব্যক্তিগত এবং একাডেমিক বিষয়ে হয়রানি বন্ধ করতে হবে ও ক্ষমা চাইতে হবে, হলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে হবে, যেকোন পরিস্থিতিতে সিট বাতিলের হুমকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে, যেকোন পরিস্থিতিতে হলের ছাত্রীদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে, আজকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোন শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগতভাবে হুমকি দেওয়া যাবে না, এ দাবিসমূহ না মানলে প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগ দাবি করছি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, হলের প্রোভোস্ট, সহকারী প্রোভোস্ট ছাত্রীদের সাথে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ধমক দেওয়া থেকে শুরু করে সিট বাতিলের হুমকি দেয়। আজ মঙ্গলবার এক ছাত্রী ওই হলে বটি দিয়ে গলা কাটার চেষ্টা করলেও হাসপাতালে নিয়ে গেলে বেঁচে যায়। এর পরিপেক্ষিতে ছাত্রীদের রান্না করার সরঞ্জাম জব্দ করার নিদের্শ দেয় হলো কর্তৃপক্ষ। নির্দেশনায় বলা হয়, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, রাইস কুকার, হিটারসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি না সরালে যার রুমে এগুলো পাওয়া যাবে তার সিট বাতিল হয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, কিছু দিন আগে ফেসবুকে কমেন্ট করাকে কেন্দ্র করে এক ছাত্রীকে ৪৫ মিনিট ধরে ধমক দেয় এবং শাসায় হল কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করে। এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে জানালে সমস্যা সমাধান না করে উল্টো শাসানো হয়।
ছাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, সহকারী প্রভোস্ট ছাত্রীদের হুমকি দিয়ে বলে, হল তোমাদের সুযোগ, অধিকার নয়। যার সমস্যা সে হল থেকে নেমে যাও। এ কারণে আজ রাতে তারা বিক্ষোভ শুরু করেছে।
অপরাজিতা হলের শিক্ষার্থীদের এই প্রতিবাদে একাত্মতা প্রকাশ করে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল ও ছেলেদের হলের শিক্ষার্থীরা। রাত পৌনে এগারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও সহকারী পরিচালকরা এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মো. শরীফ হাসান লিমন বিটিসি নিউজকে বলেন, আজকে যেহেতু একটি অনভিপ্রেত ঘটনা (আত্মহত্যার চেষ্টা) ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে হল কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু তিনি হয়তো পাবলিক সেন্টিমেন্ট বুঝতে পারেননি। এর একটা সমাধান করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.