খালেদা জিয়ার অবশ্যই মুক্তি চাই : ড. কামাল

 

ঢাকা প্রতিনিধিআজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ গ্রেফতার রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। দেশে আইনের শাসন নেই। যেন-তেনভাবে বিরোধীদের সবাইকে গ্রেফতার ও হয়রানি করা চলবে না। আইন বিরোধী দলের জন্য এক রকম আর সরকারি দলের জন্য একরকম, এটা চলতে পারে না। একটা অনির্বাচিত সরকার এটা করতে পারে না। অমি অবশ্যই খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, সাথে অন্যান্য রাজবন্দিদেরও মুক্তি চাই।

তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, এই সরকার যখন গঠন হলো তখন আমি কোর্টে ছিলাম, তখন বলেছিলেন আরেকটি নির্বাচন দেবো। ২০১৫ গেল, ২০১৬ গেল, কই নির্বাচন দিলেন না। এই সরকারের কথার এক পয়সাও দাম নেই।

ড. কামাল উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা দেশের মালিক, আপনারা মালিক হিসেবে আছেন। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে গণতন্ত্র মূল্যহীন থাকে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দাঁড়াতে হবে।আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি, ঐক্যবদ্ধ থাকবো। ঐক্যবদ্ধ থেকে সকল সিদ্ধান্ত নেব। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আপোষহীন আন্দোলন চালিয়ে যাবো,যোগ করেন এই সিনিয়র আইনজীবী। আমি কোনো দলের সদস্য হিসেবে বলছি না। দেশের মালিক হিসেবে আপনারা দাঁড়িয়ে যান। যেভাবে দেশ চলছে তা হতে পারে না। সুষ্ঠু ভোটের জন্য শপথ নিন। সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন কারো সঙ্গে আপস করবেন না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে বলেন, আমরা সংলাপের মাধ্যমে সমাধান চাই। কিন্তু সংলাপ নিয়ে নাটক করলে চলবে না।

প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে ফখরুল ইসলাম বলেন, আপনাকে চলে যেতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সেইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তারেক রহমানের মামলাও প্রত্যাহার করতে হবে। কিছু দূরে হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় সময় কাটাচ্ছেন খালেদা জিয়া। তিনি যেটা আশা করেছিলেন, আজকে জাতীয় নেতৃবৃন্দ একমঞ্চে উঠেছেন।

জনসভার প্রধান বক্তা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, গায়েবি মামলা বন্ধ করতে হবে, নাইলে খবর আছে। জনতার আদালতে বিচার হবে।

আ স ম আবদুর রব আরো বলেন, এটা কোনো দলের জনসভা নয়, এটা জাতীয় ঐক্যের জনসভা। সরকারকে বলবো, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে দেখে যান, মানুষ কিভাবে জেগে উঠেছে। এখন আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করলে হবে না, গ্রামে-গঞ্জে যেতে হবে। দাবি মেনে নিন, নাইলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় আরো বক্তব্য দিয়েছেন- কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা সুলতান মনসুর।

আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মাদ ইবরাহীম, জামাল মোস্তফা, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান খোকন, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের (একাংশ)  চেয়ারম্যান ড. নুরুল আমিন ব্যাপারী, এলডিপি মহাসচিব রেদওয়ান আহমদ, মহিলাদলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ কায়সার, খেলাফত মজলিশের মহাসচিব আহমদ আব্দুল কাদের, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান আব্দুর রকিব প্রমুখ।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.