খালেদাকে কারাগারে রেখে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না : নজরুল

ছবি: সৈয়দ নাবিল

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন হতে হবে অংশগ্রহণমূলক। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। আগামী রোববার (১৫ এপ্রিল) বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন বিএনপির এই নেতা।
ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে প্রেরণের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে তাঁর নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে রোববার বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে রাজশাহী মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচন হতে হবে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, বিশ্বকাপে আর্জেণ্টিনা ও ব্রাজিল না থাকলে যেমন খেলা জমে না; আবার মোহামেডান ও আবাহনী না থাকলেও খেলা জমে না। তেমনি নির্বাচনী খেলায় বিএনপি না থাকলে সে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। কারণ বিএনপি এদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মানুষ। তিনি ইতোপূর্বে যতগুলো নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তার সবগুলোতেই জয়ী হয়েছেন। এটা রেকর্ড। তিনি কখনো নির্বাচনে পরাজিত হননি। তিনি বলেন, বিএনপি হলো গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠাকারী দল। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এদেশে প্রথম গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি আরো বলেন, প্রশাসন চাপে রয়েছে। এই চাপ কেন? দাবি করা হয়- দেশে গণতন্ত্র আছে। কিন্তু একটি গণতান্ত্রিক দল এদেশে শান্তিপূর্ণ সভা করতে পারবে না এটা কোন ধরণের গণতন্ত্র।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, রাজশাহীতে বিএনপি মূল রাজনৈতিক দল। সব নির্বাচনে এখানে বিএনপি বিজয়ী হয়েছে। রাজশাহীতে গত মেয়র নির্বাচনে জনগণ বিএনপির পক্ষে ছিল। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারিতে ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচন করে সরকার ক্ষমতায় এসেছে। সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, জনগণের ম্যা-েট ছাড়াই দেশ চালাচ্ছেন। আর নয়।

ছবি: সৈয়দ নাবিল

রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশের জন্য নগরীর ঐতিহাসিক ভুবন মোহন পার্ক বরাদ্দ দেয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছোট পরিসরে আলোচনা সভা বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য এই স্থানটি বেছে নেয়া যেতে পারে। কিন্তু বিএনপির মত একটি বড় রাজনৈতিক দলের বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠানের জন্য এই জায়গা বরাদ্দ দেয়া কতটুকু যৌক্তিক।

তিনি বলেন, সমাবেশের আগের দিন প্রশাসনের তরফ থেকে মাইকিং করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। প্রচারণা চালাতে দেয়া হচ্ছে না। কতটি মাইক ব্যবহার করা যাবে তাও নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, অনেক মানুষ সমাবেশের কথা শুনতে পাবে না। তারপরেও সমাবেশ হবে নীরব বিপ্লব। নগরীর ভুবন মোহন পার্ক হবে সমাবেশের মঞ্চ। আর গোটা নগরীজুড়ে হবে সমাবেশ। এদিন বেলা ২টায় রাজশাহী নগরী বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হবে। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দেয়া সরকারের আরেকটি ভুল। সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যখন পতন ঘনিয়ে আসে তখন একের পর এক ভুল হতেই থাকে। বেগম খালেদা জিয়াকে যতদিন কারাগারে রাখা হবে মানুষের ক্ষোভ ও ক্রোধ বাড়তেই থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী সিটি মেয়র ও মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন বক্তব্য রাখেন। এতে অন্যদের মধ্যে বিএনপির বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শহীদুন্নাহার কাজী হেনা, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম সমাপ্ত, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল হক রানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.