ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের অভিনব আবিষ্কার, বিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনই উদ্দেশ্য

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: কেউ এসেছে শিক্ষকের হাত ধরে, কেউবা মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে। বন্ধুদের সঙ্গেও এসেছে অনেকে। কেউ নিয়ে এসেছে তার উদ্ভাবনী প্রকল্প, কারও বগলে পোস্টার আর কেউ কেউ উপস্থাপন করবে বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ। স্কুল-কলেজের ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের কত কী যে আবিষ্কার ! ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী কলেজ মাঠে বসেছিল এ রকম অনেক খুদে বিজ্ঞানীর মিলনমেলা। রাজশাহী কলেজ সাইন্স ক্লাবের আয়োজনে সেখানে হয়েছে দুই দিনব্যাপী রাজশাহী কলেজ সপ্তম ন্যাশনাল সাইন্স ফেস্ট ২০২৪।
আগামী দিনে বিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধন ও এর অনন্যতা উপলব্ধি করা মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতাকে প্রকাশের সুযোগ করে দেয়াই ছিল মেলার উদ্দেশ্য। এ বিজ্ঞান মেলায় প্রধান অতিথি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট তথ্য ও প্রযুক্তিবিদ ও বাংলাদেশ গনিত অলিম্পিয়াড অন্যতম অগ্রদূত প্রফেসর মনির হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশ বরেণ্য উদ্ভিদ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এম মঞ্জুর হোসেন।
বিভিন্ন স্কুল- কলেজের ১৪৮ জন ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞান মেলায় মোট ৩২টি প্রকল্প উপস্থাপন করে। এসব প্রকল্পের মধ্যে বর্জ্য পদার্থ দ্বারা বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পরিকল্পিত নগরায়ন,স্মাট কৃষি ব্যবস্থাপনা , ব্যবহার্য পানি পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ ও সাগরের পানি থেকে শক্তি উৎপাদন, বায়োগ্যাসের বর্জ্য মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার ইত্যাদি অন্যতম।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি স্টলের সামনেই কৌতূহলীদের ভিড়। বিভিন্ন বয়সী মানুষ স্টল ঘুরে দেখছেন। তাঁদের উদ্ভাবনের খুঁটিনাটি বুঝিয়ে বলছেন উদ্ভাবকরা। এরপরও প্রশ্ন। সব প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছিল। তবুও ক্লান্তি নেই। তবুও হাসিমুখ।
শেখ রাছেল মডেল স্কুলের একটি স্টলে গিয়ে দেখা যায় , গ্রীণ সিটি নামের একটি পরিকল্পিত শহরে মডেল। যেখানে রয়েছে নিদিষ্ট দূরুত্বে কলকারখানা, শিক্ষা পতিষ্ঠান, আবাসিক এলাকা ও রাস্তার পাশে রয়েছে বর্জ্য সরবাহের জন্য ডাসবিনের ব্যবস্থা। সেখান থেকে বর্জ্য পরিবহণের জন্য রয়েছে বর্জ্য সংরক্ষনাগার। কী হবে এসব বর্জ্য দিয়ে? জানতে চাইলে চমৎকার শুরু করে ইসরাতুল আজমী এশা। পরে একে একে আত্মবিশ্বাসের সাথে ব্যাখ্যা করে চিত্র লেখা রঞ্জন, রিফা সানজিদা সাবা ও আব্দুল্লাহ সাফি। তাদের ব্যাখ্যা থেকে বেরিয়ে আসে বর্জ্যর বহুবিধ ব্যবহার।
জানা গেল, বর্জ্য সংরক্ষনাগারে জমা করা বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। যা বায়ু দূষণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে হবে আধুনিক পরিকল্পিত বাসযোগ্য গ্রীণ সিটি।
পাশেই শিমুল মেমোরিয়াল নর্থ সাউথ স্কুল এন্ড কলেজের একটি টেবিলে স্মাট কৃষির মডেল। উদ্ভাবক ইকবাল হাসান মাহমুদ, সানোয়ার হোসেন ইমন ,রুফাইদা রিজভী ও তাহমিনা আঞ্জুম। জানতে চাইলে তারাও প্রকল্প কিভাবে কাজ করবে তা দেখিয়ে দেয়।
সে অনুযায়ী, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কৃষি জমিতে ঘর-বাড়ি তৈরী করতে হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে তৈরী করা হয়েছে ইনডোর ফ্যামিলি সিস্টেম। এই সিস্টেমের মাধ্যমে ঘর-বাড়ির মধ্যেই ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি মাছ উৎপাদন করা যাবে। পাশাপাশি ভূমিকম্প দুর্যোগে খাদ্য সংকট হলে মোকাবেলা সক্ষম হবে। এছাড়াও জমি বীজ ছিটানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে ড্রোন। মেলায় ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা নিজেদের এমন আবিষ্কার দিয়ে বিচারকদের একরকম অবাক করে দেয়।
এ বিজ্ঞান মেলায় আরও ছিল স্পীড ক্লাবিং,প্রোবলেম সলভিং, ওয়াল ম্যাগাজিন, সায়েন্টিফিক পেইন্টিংসহ অনলাইনে- সায়েন্টিফিক ফটোগ্রাফি ও রিসার্চ পেপার সাবমিশন। আরও ছিল প্রকৃতি সম্পর্কিত অনুসন্ধানী মনকে জাগিয়ে তুলতে ইকো ইনফরমেশন কোয়েস্ট। সব মিলিয়ে বিজ্ঞানমনস্ক করার কার্যকর একটি উদ্যোগ। পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে রাজশাহী কলেজ সপ্তম ন্যাশনাল সাইন্স ফেস্ট শেষ হয়েছে।
বার্তা প্রেরক: এস আলী দুর্জয়, সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.