নিজস্ব প্রতিবেদক:সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, পদোন্নতিতে স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
আওয়ামী সরকারের পতনের পরও তিনি কীভাবে একই পদে বহাল তবিয়তে আছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খাদ্য বিভাগের অভ্যন্তরে।
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এবং খাদ্য কর্মকর্তা ওমর ফারুক উভয়েই নওগাঁ জেলার বাসিন্দা।
অভিযোগ রয়েছে, সাবেক মন্ত্রীর আশীর্বাদেই উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মর্যাদার কর্মকর্তা ওমর ফারুক প্রায় দুই বছর আট মাস আগে রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের চেয়ারে বসেন। এই পদটি তার দুই গ্রেড উপরের।
মন্ত্রীর পতনের পরও তার স্বপদে বহাল থাকা এবং সম্প্রতি সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ায় তাকে বর্তমান চেয়ারে বসার আইনি বৈধতা দিয়েছে। কিন্তু বিভাগীয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে।
ওমর ফারুক অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, মন্ত্রীর আশীর্বাদ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। যাঁরা আশীর্বাদ নিয়ে পদ পেয়েছিলেন, তাঁরা সরকার পরিবর্তনের পর সে পদে থাকতে পারেননি। তিনি দুই আমলেই বহাল তবিয়তে রয়েছেন। কর্তৃপক্ষের ইচ্ছায় এবং নিজের যোগ্যতায় নিয়োগ পেয়েছেন। এখনো নিরপেক্ষভাবে কাজ করেছেন বলেই টিকে আছেন।
জানা গেছে, গত বছর জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আসাদুজ্জামান খানকে সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছিল। তিনি ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু পরদিনই তার আদেশ বাতিল করা হয়। যদিও একই সময়ে পদোন্নতি পাওয়া অন্য তিন কর্মকর্তার আদেশ বহাল থাকে। এ ঘটনা ওমর ফারুকের প্রভাব বিস্তারের কারণেই হয়েছে।
ওমর ফারুকের দাবি, রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের পদটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং এবং কেউ এখানে আসতে চান না, এমনকি তিনিও থাকতে চান না। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাকে ছাড়েন না। তবে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই দাবি তার দীর্ঘমেয়াদী অবস্থানকে জায়েজ করার একটি চেষ্টা মাত্র, যার পেছনে শক্তিশালী রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক যোগসৃত্র থাকতে পারে।
সম্প্রতি জেলার দুটি খাদ্যগুদামে বিপুল পরিমাণ খাওয়ার অনুপযোগী চাল পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, অভিযুক্ত ডিলারদেরই নিজেদের দায়িত্বে খারাপ চাল পাল্টে দেওয়ার কথা এবং তাদের শাস্তি হওয়ার কথা।
কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা নিজেরাই এই চাল পরিবর্তনের কাজ করছেন এতে ওমর ফারুকের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় আটটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও, তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা মোঃ মাইন উদ্দিন বলেছেন, পরিদর্শক না পাওয়ার কারণে বাচ্চু মিয়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি দাবি করেন, দক্ষ হলেই একজন উপ-পরিদর্শককে পরিদর্শকের কাজে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তবে, এই অভিযোগ গুলো খাদ্য বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.