কোম্পানীগঞ্জে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, আটক-৯

সিলেট ব্যুরো: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে পাথরবাহী ট্রাক থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে ৯ জনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত দেড়টার দিকে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কলাবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার মধ্যরাতে উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় নৌকার শ্রমিক ও মাঝিদের কাছে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করেন তারা। একপর্যায়ে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নয়জনকে আটক করা হয়।
স্থানীয়রা আরও জানান, একটি অসাধু চক্র সাদা পাথরের ‘লাইন ছেড়ে দেয়’ অর্থাৎ পাথর চুরির সুযোগ করে দেয়। ফলে স্থানীয় পাথর চোরেরা নৌকাযোগে পাথর চুরি করে বিভিন্ন স্থানে স্তূপ করে রাখে। সেইগুলো একই রাতেই ট্রাকযোগে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে বিজিবি, আরএনবি ও পুলিশকে ম্যানেজ করে সাদা পাথর নিয়মিতভাবে চুরি করতো একটি চক্র।
আটককৃতরা হলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবু সাঈদ রবিন (২২), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ জাহান আহমদ (২৯), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরিফ হাসান জুবায়ের (২৭), পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি মো. রাজন মিয়া (২৫), দিদার হোসেন (২৫), পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি সেলিম মিয়া (২৫), মো. রফিকুল ইসলাম (২৬), নাসির মিয়া (২৫) ও সোলায়মান (২৭)।
এ ঘটনায় কলাবাড়ি গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে নুর আহমদ বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে কোম্পানীগঞ্জ থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামিরা হলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমদ রানা (৩০) ও হাবিবুর রহমান মামুন (২৭)।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মোহম্মদ বদিউজ্জামান কালবেলাকে বলেন, চাঁদাবাজির চেষ্টাকালে স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তাদের মধ্যে তিনজন নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করলেও কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে ৯ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে কোম্পানীগঞ্জে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে কয়েকজন যুবককে বিভিন্ন অপকর্মে যুক্ত হতে দেখা গেছে। এরইমধ্যে মইনুল ইসলাম নামের এক যুবকের নেতৃত্বে গরু ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই সময় সেনাবাহিনী তাদের আটক করে। আটককালে মইনুল নিজেকে সিলেট জেলা ছাত্রদলের সদস্য ও ছাত্র সমন্বয়ক দাবি করেন। পরে গরু ফেরত দেওয়ায় ছাড়া পান মইনুল।
এ ছাড়াও কয়েকদিন আগে তেলিখাল এলাকায় আব্দুল্লাহ নামের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা লুটকালে দক্ষিণ বুরদেও গ্রামের কামরুল নামের একজনকে আটক করা হয়। তিনিও নিজেকে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দেন। বর্তমানে কামরুল কারাগারে রয়েছেন। এ ঘটনায় গত ৪ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলা ছাত্রদলের প্যাডে কোম্পানীগঞ্জের তেলিখাল ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম মিয়া, ছাত্রদল কর্মী কামরুল ও জুনেদকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর সিলেট ব্যুরো প্রধান মো. জাকিরুল হোসেন জাকির। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.