কেসিসি নির্বাচন ২০১৮ বিশেষ অভিযান শুরু, প্রস্তুত ৫ হাজার পুলিশ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা: খুলনা সিটি কর্পোরেশন-কেসিসি নির্বাচনকে সামনে রেখে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পাঁচ হাজার পুলিশ এখন প্রস্তুত। তারা পাহারা দেবে ২৮৯টি ভোট কেন্দ্র। এদিকে, শুক্রবার রাত থেকে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান। আগামী ১৫ মে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশের এই ব্যবস্থা। কেএমপির সূত্রটি বলছে, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, পলাতক আসামী গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া এ অভিযান চলবে টানা ১০দিন অর্থাৎ ৩০এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর দুই-তিন দিন বিরতি দিয়ে আবারও শুরু হয়ে ১৫মে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত চলবে।

নির্বাচনী তফশীল অনুযায়ী আগামী ২৪ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দের পরই প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নেমে পড়বেন। নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোটের আগের দিন এবং ভোটের দিন সন্ত্রাসী অস্ত্রধারীরা বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রভাবিত করতে পারে এমন অনুমানের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে। সকল প্রার্থী তাদের নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট প্রদান করতে পারে সে লক্ষ্যে কেএমপির পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলে কেএমপির সূত্রটি বলছে। সন্ত্রাসী অস্ত্রধারীদের কারণে নির্বাচন যাতে কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে লক্ষ্যে প্রাণান্ত চেষ্টা চালাবে কেএমপি।

বিশেষ অভিযানের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, জিরোপয়েন্ট, রূপসা ঘাট, জেলখানা ঘাট, আইডব্লিউটিএ ঘাট, পথের বাজার, আড়ংঘাটা বাইপাস রোড, খালিশপুরের বিভিন্ন ঘাট এলাকা।কেএমপির সূত্র জানায়, নগরীর আটটি থানা যথাক্রমে খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর, খানজাহান আলী, আড়ংঘাটা, হরিণটানা ও লবণচরা থানা এলাকায় নিয়মিত যে ফোর্স রয়েছে সেখানে আরও বেশী ফোর্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার জন্য।

অপরদিকে আগামী ১৫মে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন উপলক্ষে নগরীর ২৮৯ ভোট কেন্দ্রে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে ৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে দুই থেকে আড়াই হাজার পুলিশ সদস্য এবং অবশিষ্ট পুলিশ সদস্য অন্যান্য জেলা থেকে এনে প্রয়োজন মেটানো হবে। পুলিশের সাথে আনসার সদস্যরা থাকবেন সহায়তায় এবং বিজিবি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও থাকবে র‌্যাবের টহল। নির্বাচনে কোনো প্রকার সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে কেএমপির সূত্রে জানা গেছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার (সিটিএসবি) রাশিদা বেগম বলেন, কেসিসি নির্বাচন উপলক্ষে শুক্রবার থেকে নগরীর আট থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযানে সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, পলাতক আসামী ও অবৈধ অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার করা হবে। এছাড়া আগামী ১৫মে খুলনার ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে ৫হাজার পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। তবে গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ ভোট কেন্দ্র হিসেবে চি‎িহ্নত কেন্দ্রগুলোতে কতজন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে তা’ এখনো নিশ্চিত হয়নি। কোন ভোট কেন্দ্রে কত সংখ্যক পুলিশ থাকবে তা’ আগামী ২৬এপ্রিল নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভার পর ঠিক হবে।

অবশ্য এর আগে কেসিসির ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ২২৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৬৩টি কেন্দ্রকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে কেএমপির পক্ষ থেকে ২২৬টি আসনকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মেয়র প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত দলের খুলনা মহানগর সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক, বিএনপি মনোনীত দলের মহানগর সভাপতি ও সাবেক সাংসদ নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টি মনোনীত দলের মহানগর সদস্য সচিব এস এম শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত দলের মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মুজাম্মিল হক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মনোনীত দলের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু।

সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডে ১৮১জন এবং সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে ৪৪জন প্রার্থী রয়েছেন। তবে ২৩ এপ্রিল প্রত্যাহারের পরই চূড়ান্তভাবে বলা যাবে কতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন। এবারের মোট ভোটার সংখ্যা ৪লাখ ৯৩হাজার ৯৩। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২লাখ ৪৮হাজার ৯৮৬ এবং নারী ভোটার ২লাখ ৪৪হাজার ৭জন। নির্বাচনে ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রে ভোট কক্ষ থাকবে ১হাজার ৫৬১টি এবং ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা থাকবেন ৪হাজার ৯৭২জন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.