কেসিসির তিন কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা দু’টিতে ইভিএম

 

খুলনা ব্যুরো : খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি কেন্দ্র সিসি(ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরার আওতায় আসছে। এ সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তও ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। এছাড়া দু’টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ করা হবে ইভিএম(ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন) পদ্ধতিতে। সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটারদের ইভিএম সম্পর্কে ধারনা দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় দু’টি কেন্দ্রে ইভিএম সম্পর্কিত মালামাল পৌঁছে গেছে। সেখানে পরীক্ষামূলক ভিডিও চিত্র চালু করা হয়েছে রাত থেকেই। নির্বাচন কমিশনের আইসিটি অধিশাখার সিনিয়র মেনটেইনেন্স ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, কেসিসির সরকারি বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ(কলা ভবন), পাইওনিয়ার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়(পশ্চিম পাশ) এবং খুলনা পিটিআই’র প্রশিক্ষণ ভবন (২য় ও ৩য় তলা) এ তিনটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।

স্থাপিত সিসিটিভি সিস্টেমের মাধ্যমে ভোট কেন্দ্র এবং ভোট গ্রহণ পরিস্থিতি নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বলেও ওই পত্রে উল্লেখ করা হয়। রিটার্নিং অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো: ইউনুচ আলী বলেন, এ সংক্রান্ত পত্রটি তিনি মঙ্গলবারই পেয়েছেন। যার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

কেন্দ্র তিনটির একটি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের, একটি ২২ নম্বর ওয়ার্ডের এবং একটি ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অপর এক পত্রে কেসিসির দু’টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ কেন্দ্র দু’টি হচ্ছে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের শেরে বাংলা রোডস্থ সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের পিটিআই’র জসিম উদ্দীন হোস্টেল(নীচতলা)।

এ প্রসঙ্গে রিটার্নিং অফিসার মো: ইউনুচ আলী বলেন, ঢাকা থেকে একটি বিশেষজ্ঞ টিম এসে ইভিএম পদ্ধতি সম্পর্কে ভোটারদের ধারনা দেয়া এবং মক ভোটিং কার্যক্রম পরিচালনা করবে। বুধবারই ওই টিম খুলনা এসে পৌঁছেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই ইভিএম সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র এলাকায় প্রচারনা চালানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এজন্য সংশ্লিষ্ট সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের পাশাপাশি আরও একজন নির্বাচন কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পুরো টিমের দেখভালের জন্য। নির্বাচন কমিশনের সূত্রটি বলছে, কিভাবে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে হয় সে বিষয়গুলো ভোটারদের ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে পড় পর্দায় দেখানো হবে। পাশাপাশি মক ভোটিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে ১৫ মে’র আগেই।

মক ভোটিংয়ের মাধ্যমে ভোটাররা কিভাবে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেবেন সেটিও বাস্তবে দেখানো হবে। অর্থাৎ দু’টি কেন্দ্রের দু’হাজার ৯৭১জন ভোটারকে ভোট দিতে হবে দু’বার। এর মধ্যে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক হাজার ৯৯ জন এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের পিটিআই জসিম উদ্দীন হোস্টেল কেন্দ্রে এক হাজার ৮৭৯ জন ভোটার রয়েছেন।

সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মহিলা এবং পিটিআই জসিম উদ্দিন কেন্দ্রে পুরুষ ভোটাররাই ইভিএম পদ্ধতির ভোটের সুযোগ পাচ্ছেন। অপরদিকে, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটদান থেকে বিরত থাকার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে বেশ আগে থেকেই দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু ভোটারদের সচেতন করার জন্য পরীক্ষামূলক কিছু কেন্দ্রে এ পদ্ধতি চালুর বিকল্প নেই নির্বাচন কমিশনের সূত্রটি বলছে, এর মধ্যদিয়ে ভবিষ্যতে সহজে ভোটগ্রহণ পদ্ধতি সহজ করা হবে।

তবে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের দাবিটি এতো সহজে বাস্তবায়ন সম্ভব নয় উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের সূত্রটি বলছে, ভোটিং পদ্ধতি পর্যবেক্ষনের জন্য কেসিসি নির্বাচনের তিনটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তার জন্যই অতিরিক্ত লোকবল নিয়োগ করতে হচ্ছে। অবশ্য খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ ছাড়াও নগরীর বেশি কিছু প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সিসি ক্যামেরাগুলোর সুযোগ নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশন নিতে পারে কি না সে বিষয়টিও কমিশনের ভাবনায় রয়েছে।

এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গত ২৯ এপ্রিল খুলনা সার্কিট হাউজে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী (অব.) বলেন, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

কেএমপি কমিশনার মো: হুমায়ুন কবির বলেন, নির্বাচন কমিশন চাইলে কেএমপির সিসি ক্যামেরাগুলো ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে অপরয়, কেসিসির ২৮৯টির মধ্যে প্রায় অর্ধেক কেন্দ্রই সিসি ক্যামেরার আওতায় আছে। এর মধ্যে কেসিসিরই ৮৮টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে নগরীর বিভিন্ন স্থানে। রয়েছে কেএমপির নিজস্বও কিছু। এছাড়া বেশকিছু স্কুল-কলেজেও সিসি ক্যামেরা রয়েছে। এগুলোকে নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র নিয়ন্ত্রণ করলেই অনেকটা সহজ হবে বলেও সংশ্লিষ্টদের মন্তব্য।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.