কেনিয়াজুড়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন চরমে, নিহত-৩৯

 

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সরকারের করনীতির প্রতিবাদে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়েছে পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায়। আন্দোলনের কেন্দ্র রাজধানী নাইরোবিতে গত এক সপ্তাহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ৩৯ জন, আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩৬১ জন।
এছাড়া এখনও নিখোঁজ আছেন অন্তত ৩২ জন এবং গত মঙ্গলবার থেকে এ পর্যন্ত আন্দোলন ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬২৭ জনকে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আফ্রিকা বিষয়ক সহযোগী পরিচালক ওটসিয়েনো নামওয়ায়া বলেন, ‘কোন যৌক্তিকতা ছাড়াই বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালানো হয়। এমনকি যেসব বিক্ষোভকারী পালিয়ে যাচ্ছিল তাদেরকে লক্ষ্য করেও গুলি চালানো হয়। কেনিয়ার এবং আন্তর্জাতিক আইনে নিরাপত্তা বাহিনীর এ ধরনের পদক্ষেপ একেবারে অগ্রহণযোগ্য।’ খবর এএফপি
গত মঙ্গলবার প্রায় সব ধরনের পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধিসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাস হয় কেনিয়ার পার্লামেন্টে। প্রস্তাবটি পাসের সঙ্গে সঙ্গেই পার্লামেন্ট চত্বরসহ পুরো নাইরোবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ। আন্দোলনকারীরা পার্লামেন্ট চত্বরের একটি পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন, বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি শুরু করে পুলিশ।
আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর পদত্যাগ, যিনি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতাসীন হয়েছেন। সেই নির্বাচনের পর থেকেই কেনিয়ায় দিন দিন রাজনৈতিক বিভক্তি তীব্র হয়ে উঠেছে।
গত রোববার কেনিয়ার সরকারি টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন উইলিয়াম রুটো। সেই ভাষণে তিনি বলেছেন, আন্দোলনে এ পর্যন্ত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। তবে তাদের মৃত্যুর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়ী নয়, নিজেদের মধ্যে সংঘাত ও বিশৃঙ্খলার কারণে প্রাণ হারিয়েছেন তারা।
ভাষণে রুটো আরও বলেছেন, আপাতত নিকট ভবিষ্যতে পদত্যাগ করার কোনো প্রকার ইচ্ছা বা পরিকল্পনা তার নেই।
কেএনসিএইচআর জানিয়েছে, রোববারের ভাষণ সম্প্রচারের পর থেকে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বিক্ষোভকারীরা। তারা এখন ভাঙচুরের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগও শুরু করেছেন।
সেই সঙ্গে দেশজুড়ে আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার ডাকও দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। কেনিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো ভরে উঠেছে ‘সব জায়গা দখল করো’, ‘রুটোর বিদায় চাই’, ‘বাজেট দুর্নীতিবাজদের বাতিল করো’ প্রভৃতি হ্যাশট্যাগে।
আফ্রিকা মহাদেশের হাতে গোণা যে কয়েকটি দেশ রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল, সেসবের মধ্যে কেনিয়া ছিল অগ্রসারিতে; কিন্তু সরকারবিরোধী আন্দোলন ও তার তীব্রতা সেই স্থিতিশীলতাকে অনেকখানি নড়বড়ে করে দিয়েছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.