মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার চৌধুরী বাজার-ভবানীপুর লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান না থাকায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করল স্থানীয় এক কিশোর। ট্রেন আসতে দেখে সে দৌড়ে গিয়ে গেট বন্ধ করে দেয়। ট্রেন পার হওয়ার পর আবার গেট খুলে দেয় সে। এ ঘটনায় পথচারীরা বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান।
গত রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেলে এ ঘটনাটি ঘটে। পরে ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় ২৭ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, খালি গায়ের কিশোরটি ট্রেনের শব্দ শুনে ছুটে গিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে গেট নামিয়ে দিচ্ছে। ট্রেন যাওয়ার পর আবার গেট উঠিয়ে দেয় সে। এরপর দুই পাশে অপেক্ষায় থাকা পথচারীরা ক্রসিং পার হন।
ভিডিওটি ধারণ করেন স্থানীয় মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ময়জুল ইসলাম।
গতকাল সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বাড়ি পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজার এলাকায়। গত রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেলে তিনি ভবানীপুরে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। পথে চৌধুরী বাজার-ভবানীপুর ক্রসিংয়ে পৌঁছে দেখেন, ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তনগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস কিছুদূরে। তখনই তিনি দেখেন, এক কিশোর প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে গেট বন্ধ করছে। দ্রুত তিনি ঘটনাটি ভিডিও করেন।
ময়জুল আরও জানান, ট্রেন যাওয়ার কিছুক্ষণ পর সেখানে একজন গেটম্যান আসেন। তিনি গেটম্যানকে প্রশ্ন করলে গেটম্যান জানান, এখানে তিনজন গেটম্যান থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে দায়িত্বে আছেন দুজন। পালা করে তারা দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময় অপর সহকর্মীর দায়িত্ব ছিল, তবে তিনি দাপ্তরিক কাজে কুলাউড়া রেলস্টেশনে চলে যাওয়ায় সাময়িকভাবে গেট ফাঁকা ছিল।
দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার কার ওপর পড়ত—এমন প্রশ্নে ওই গেটম্যান কোনো উত্তর দেননি বলে জানান ময়জুল। পরে কিশোরের সাহসিকতা তুলে ধরে এবং কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণে তিনি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন। তবে ওই কিশোরের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। তার বয়স আনুমানিক ১৪ থেকে ১৫ বছর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
লেভেল ক্রসিংয়ের গেট পরিচালনার দায়িত্ব রেলওয়ের প্রকৌশল (পথ) বিভাগের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুলাউড়া জংশন রেলস্টেশনের উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, তিনি দাপ্তরিক কারণে গতকাল কোনো গেটম্যানকে ডাকেননি। চৌধুরী বাজার-ভবানীপুর ক্রসিংয়ে তিনজন গেটম্যান নিয়োজিত ছিলেন। তাদের একজন প্রায় এক বছর আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান। বর্তমানে দুইজন দায়িত্ব পালন করছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.