কুবিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আসা শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের মারধর

কুমিল্লা ব্যুরো: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২৯ জুলাই) বেলা ২টায় পূর্বঘোষত কর্মসূচিতে আসতে থাকা ‍শিক্ষার্থীদের বাধা প্রদান করেন তারা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ছাত্র আন্দোলন চত্বর ও কোটবাড়ি বিশ্বরোড় এলাকায় স্থানীয় ও ক্যাম্পাসের ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা অবস্থান নিয়ে আন্দোলনে আসা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। এই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষার্থী হেনস্তা ও মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সোমবার দুপুর ২ টায় কুমিলল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সমাবেশ ছিল। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শহর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশ থেকে আসতে থাকে শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে বাধা প্রদানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ছাত্র আন্দোলন চত্বরে স্থানীয় ২৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামিলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী অংশ নেন।
এরপর কুমিল্লা মহানগর জেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য বাহাউদ্দীন বাহারের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী যুক্ত হয়। তাদের অধিকাংশের হাতে দেশীয় অস্ত্র ও পিস্তল নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়। এসময় তাঁদের উপস্থিত নেতাকর্মীদের কুমিল্লা শহর থেকে আগত শিক্ষার্থীদের ছাত্র আন্দোলন চত্বর, কোটবাড়ি মোড়, কোটবাড়ি বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন স্থানে মোবাইল ফোন চেক করার পাশাপাশি চড় থাপ্পড় দিতেও দেখা যায়। কোনো সিএনজিচালিত অটোরিকশা ক্যাম্পাস মুখে আসলে থামিয়ে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা। আন্দোলনে যাচ্ছে বললে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বললে গাড়ি আটকে শিক্ষার্থীদের হেনস্তা ও মারধর করেন নেতা–কর্মীরা।
মারধরের শিকার গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মারুফ শেখ বলেন, ‘দুপুর ২ টার দিকে আমি শহর থেকে সিএনজি করে আসছিলাম ক্যাম্পাসে। এই সময় গাড়ি আন্সারক্যাম্প পর্যন্ত আসলে ছাত্রলীগের কিছু ছেলে আমাকে ও সিএনজিতে থাকা বাকিদের নামিয়ে চড় থাপ্পড় মারতে শুরু করে। আমি যখন বলি আমি বন্ধুর বাসায় যাচ্ছি তখন আমাকে আবার গাড়িতে তুলে বলে শহরে চলে যেতে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে যাওয়া যাবে না।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা মারধরের ভিডিও করতে গেলে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র হাতে তেড়ে এসে হেনস্তা করেন।
এদিকে মোড়ে মোড়ে মারধরের পরও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশেপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
এবিষয়ে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সমন্বায়ক বলেন, সারাদেশে আমাদের বেশ কয়েকজন সমন্বয়ককে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে গেছেন। এছাড়াও ডিবি অফিসে স্ক্রিপ্ট ধরিয়ে জোর পূর্বক বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তার প্রতিবাদে আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুমিল্লা ব্যুরো প্রধান আব্দুল্লাহ আল মানছুর। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.