কিবরিয়া হত্যা মামলায় দীর্ঘ ১৫বছরেও বিচারকার্য সম্পুন্ন হয়নি, ক্ষোভ পরিবার পরিজন ও জেলাবাসীর

হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:  আজ সোমবার মর্মান্তিক বৈদ্যের বাজারের ট্র্যাজেডি। এ দিনে ভয়ানক গ্রেনেড হামলায় নিহত হন হবিগঞ্জ-লাখাই ৩ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া তার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদাসহ ৫ জন।
অন্যান্য নিহতরা হলেন, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী। এতে আহত হন কমপক্ষে আরো শতাধিক নেতাকর্মী। দীর্ঘ ১৫ বছরেও এর বিচার কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে নিহতদের পরিবারসহ সমগ্র জেলাবাসির মধ্যে। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে কিবরিয়া হত্যার বিচার সম্পন্ন করা না হলে কোনদিনই এর সুষ্ঠু বিচার হবেনা বলেও জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা।
ফিরে দেখা বৈদ্যের বাজার ট্রাজেডি:  ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ পরবর্তী এক জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তৎকালীন হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। তার উপস্থিতিতে জনসভা ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। সভা শেষে যখন তিনি সহকর্মীদের নিয়ে বৈদ্যের বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেইটে আসেন তখন দিনের আলো নিভে প্রায় সন্ধ্যা। আর ঠিক সেই সময়েই তাকে লক্ষ্য করে ভয়ানক গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটায় দূর্বৃত্তরা। বিকট শব্দ শোনে চারদিকে শুরু হয় হৈচৈ। হুড়োহুড়িতে শোনা যায় গগনবিদারী চিৎকার। গ্রেনেডের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হন শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ অনেক নেতাকর্মী। স্থানীয় লোকজন ক্ষত-বিক্ষত কিবরিয়াসহ আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে। শাহ এএমএস কিবরিয়া ও তৎকালীন জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহিরের প্রচন্ড রক্তক্ষরণ কোন ভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছিল না। এ সময় দ্রুত হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করতে না পেরে অ্যাম্বুলেন্সে করেই কিবরিয়া ও আবু জাহিরসহ অন্যান্য আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকা যাওয়ার পথে রাস্তায়ই শাহ এএসএম কিবরিয়া অতিরিক্ত রক্তকরণে মারা যান। তার মৃত্যুতে স্তম্ভিত হয়ে পড়ে গোটা জাতি। হরতাল অবরোধে হবিগঞ্জ শহর কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

কিবরিয়া হত্যা মামলা ও তদন্ত কার্যক্রম: এ ঘটনার পরদিন ২৮ জানুয়ারি তৎকালীন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান এমপি বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে কাজ করে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু মামলাটির স্বাভাবিক তদন্ত না হয়ে দলীয় বিবেচনায় পরিচালিত হতে থাকে। সিআইডি’র তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার মুন্সি আতিকুর রহমান মামলাটি তদন্ত করে ১০ জনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২০ মার্চ ১ম অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই অভিযোগপত্রে তৎকালীন জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবদুল কাইয়ুম, জেলা বিএনপির কর্মী ও ব্যাংক কর্মকর্তা আয়াত আলী, কাজল মিয়া, জেলা ছাত্রদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক সেলিম আহমেদ, জিয়া স্মৃতি গবেষণা পরিষদ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী, বিএনপি কর্মী তাজুল ইসলাম, বিএনপি কর্মী জয়নাল আবেদীন জালাল, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জমির আলী, ওয়ার্ড বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন মোমিন ও ছাত্রদল কর্মী মহিবুর রহমানকে অভিযুক্ত করা হয়। আব্দুল কাইয়ুমকে স্বীকারোক্তির জন্য ৪৭ দিন রিমান্ডে নেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্র দেয়ার পর মামলার বাদী অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান ২০০৬ সালের ৩ মে সিলেট দ্রুত বিচার আদালতে না-রাজি আবেদন করেন। আদালত তার আবেদন খারিজ করলে ১৪ মে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন। আপিলের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ সরকারের প্রতি ‘কেন অধিকতর তদন্ত করা যাবে না’ মর্মে রুল জারি করেন। এই রুলের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ১৮ মে লিভ টু আপিল করে সরকার। আপিল বিভাগ সরকারের আপিল খারিজ করেন। এরপর ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এ মামলার অধিকতর তদন্ত শুরু হয়। দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডি’র সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামকে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তিনি ২০১১ সালের ২০ জুন আরও ১৪ জনকে আসামী করে এই আলোচিত মামলার অধিকতর তদন্তের অভিযোগপত্র দাখিল করেন। কিবরিয়া হত্যাকান্ডের সাড়ে ৬ বছর পর লুৎফুজ্জামান বাবর, মুফতি হান্নানসহ ২৪ জনকে আসামী করে অধিকতর তদন্তের অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছিল। সম্পুরক চার্জশীটে ১ম ১০ জনের বাইরে অভিযুক্তরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান, লস্কর ই তৈয়বা সদস্য আব্দুল মজিদ কাশ্মীরি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু’র ভাই মাওলানা তাজ উদ্দিন, মহিউদ্দিন অভি, শাহেদুল আলম দিলু, সৈয়দ নাঈম আহমেদ আরিফ, ফজলুল আলম মিজান, মিজানুর রহমান মিঠু, মোহাম্মদ আব্দুল হাই, মোহাম্মদ আলী, মুফতি সফিকুর রহমান, বদরুল এনায়েত মোঃ বদরুল, বদরুল আলম মিজান।

২০১১ সালের ২৮ জুন কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া চার্জশীটের উপর হবিগঞ্জ জুডিসিয়াল আদালতে না-রাজি আবেদন করেন। আবেদনে আসমা কিবরিয়া উল্লেখ করেন, যেহেতু তদন্তকারী কর্মকর্তার দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে উলে¬খ রয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, চারদলীয় জোটের অন্যান্য মন্ত্রী ও নেতা কর্মীদের পরস্পর যোগসাজসে হরকাতুল জিহাদ সদস্যদের সহায়তায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, সিলেটের মেয়র বদর উদ্দিন কামরানের উপর দুই দফা হামলা, আওয়ামীলীগের এমপি জেবুন্নেছা হকের বাসায় গ্রেনেড হামলা, বৃটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা, সুরঞ্জিত সেনের জনসভায় গ্রেনেড হামলা ও কিবরিয়ার উপর বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলা সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু অন্য কারো নাম অভিযোগপত্রে নেই। তাই তা যথাযথভাবে তৈরি হয়নি। এছাড়াও তৎকালীন জেলা প্রশাসক এমদাদুল হককে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মুল তথ্য উদঘাটন হবে বলে আসমা কিবরিয়া দাবি করেন। তিনি আরও দাবি করেন, অভিযোগপত্রে দন্ডবিধি ১১৪ ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এই ধারা কার উপর বর্তায় তা পরিস্কার ভাবে সামনে আসেনি। তার দৃঢ় বিশ্বাস, অভিযোগপত্রে যাদের নাম এসেছে তার বাইরেও আরও অনেকেই জড়িত রয়েছেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার মুল নথি সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে থাকায় বিচারক রাজিব কুমার বিশ্বাস উপনথির মাধ্যমে আবেদনটি সিলেটে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি হত্যাকান্ডের অধিকতর তদন্তের অভিযোগপত্রের না-রাজি আবেদন গ্রহণ করেন সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক দিলীপ কুমার বণিক। তিনি সিনিয়র পুলিশ অফিসারের মাধ্যমে মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন।

৩য় সম্পূরক অভিযোগপত্র: ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া আক্তারের আদালতে কিবরিয়া হত্যা মামলার ৩য় সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডি সিলেট অঞ্চলের সিনিয়র এএসপি মেহেরুন নেছা পারুল। অভিযোগপত্রে নতুন ১১ জনকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। অন্তর্ভূক্ত আসামীরা হলেন, সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গউছ, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি তাজ উদ্দিন, মুফতি সফিকুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, বদরুল, মহিবুর রহমান, কাজল আহমেদ, হাফেজ ইয়াহিয়া। একই সাথে পূর্বের চার্জশীটভূক্ত ইউসুফ বিন শরীফ, আবু বক্কর আব্দুল করিম ও মরহুম আহছান উল¬াহকে চার্জশীট থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। ৩ ডিসেম্বর মামলার শুনানিকালে অভিযোগপত্রে দ্রুটির কথা উলে¬খ করে সংশোধিত অভিযোগপত্র জমা দেয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ প্রেক্ষিতে ২১ ডিসেম্বর সংশোধিত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। একই সাথে পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির আদেশ দেয়া হয়। ২৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ৩২ জনকে আসামী ও ১৭১ জনকে সাক্ষী করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মেহেরুন নেছা পারুল।

সিসিক মেয়র আরিফ ও হবিগঞ্জ পৌরসভার তৎকালীন মেয়র গউছের আত্মসমর্পণ: ৩য় দফা সম্পূরক চার্জশীট গৃহিত হওয়ার পর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন হবিগঞ্জ পৌরসভার তৎকালীন মেয়র জি কে গউছ। এর দু’দিন পর একই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। দীর্ঘ কারাবাসের পর গত ৪ জানুয়ারী ২০১৭ আরিফুল হক চৌধুরী ও জিকে গউছ জামিনে মুক্তি পান।

আসামীরা কে কোথায়: কিবরিয়া হত্যা মামলার উল্লেখযোগ্য আসামীদের মধ্যে লুৎফুজ্জামান বাবর কারাগারে রয়েছেন। এছাড়াও মুফতি হান্নানসহ অন্য মামলায় ৩ আসামীর ফাসি কার্যকর করা হয়েছে। সিসিক মেয়র আরিফ, হবিগঞ্জ পৌরসভার তৎকালীন মেয়র জি কে গউছসহ জামিনে রয়েছেন ১২ জন। হারিছ চৌধুরীসহ অন্যান্যরা পলাতক রয়েছেন।

মামলার সর্বশেষ অবস্থা: জানতে চাইলে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি কিশোর কুমার কর বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ‘বার বার নিহতের পরিবারের না-রাজি আবেদন, অসহযোগীতা, বিচারক সংকট, আইনী জঠিলতা, আসামীদের অসুস্থ্যতা ও নিরাপত্তাসহ নানা কারণে বিচার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। এসব জঠিলতা না থাকলে আশাকরি আগামী ২/৪ তারিখের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়ে যাবে।’ মামলা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়ায় সকলেই হতাশ হলেও গ্রেনেড হামলায় আহত জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপি আশাবাদী এই সরকারের আমলেই এর বিচার হবে। একই আশা মামলার বাদী ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান এমপি’রও। মামলায় ১৭১ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ৪৩ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহন করা হয়েছে।

আহতদের আর্তনাদ: বৈদ্যের বাজার ট্র্যাজেডিতে অনেকই এখনও পঙ্গু অবস্থায় জীবন যাপন করছেন। সেই ভয়াল স্মৃতি এখনও তাদেরকে তাড়িয়ে বেড়ায়। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমি বেচে থাকার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ হলেও এখনও আমার গায়ে গ্রেনেডের শত স্পি¬ন্টার। পায়ে স্টিল লাগানো। তবে আল্লাহর রহমতে বেচে আছি এটাই বড় কথা।

মামলার বাদী হবিগঞ্জ-২ আসনের এমপি আব্দুল মজিদ খান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, মূলত আইনী জঠিলতার কারণেই বিচার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। এটাই প্রধান অন্তরায়। যদিও সরকার চায় বিচার কাজ  দ্রুত নিষ্পত্তি হউক। তিনি বলেন, এ মামলার প্রায় সকল আসামীই অন্য আরও ৫/৭ টি মামলার আসামী। একই তারিখে দেশের বিভিন্ন আদালতে অন্য মামলারও হাজিরা থাকে তাদের। তাছাড়া তারা প্রায়ই অসুস্থ্য থাকে। যে কারণে তাদের উপস্থিতি ছাড়া স্বাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হয়না। তবে আমি আশাবাদী সকল জঠিলতা কাটিয়ে অতি দ্রুতই বিচার কাজ সম্পন্ন হবে।

গ্রেনেড হামলায় আহত অ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ ফারুক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছি। তবে শরীরের যে বেদনা বইতে হয়েছিল তা ছিল কঠিন। আল্লাহর রহমতে এখন সুস্থ আছি। সরকারীভাবে অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। (২৭ জানুয়ারী)র কথা স্মরণ করতেই আতকে উঠেন তিনি। এছাড়াও ওইদিন গ্রেনেড হামলায় নিহতের পরিবারের লোকজনের মধ্যে চলছে এখনো শোকের আহাজারি। ওইদিনের কথা স্বরণ হলে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। হবিগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও গ্রেনেড হামলায় পঙ্গুত্ববরণকারী আব্দুল্লা সর্দার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ভয়ানক এই গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে আজ আমি পঙ্গু জীবন যাপন করছি। জননেত্রী শেখ হাসিনার সহযোগীতায় বেচে আছি। না হয় এত দিনে মরেই যেতাম।

এ প্রসঙ্গে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া পুত্র ও গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা ড. রেজা কিবরিয়া বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমরা বার বার মামলাটির সুষ্টু তদন্ত দাবী করছি। হামলার প্রকৃত মদদদাতা ও গ্রেণেডের উৎস কি এ দুটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চায়না কেউ। বার বার আংশিক অথবা পরিপূর্ন মিথ্যা চার্জশীট দেয়া হচ্ছে। আমরা চাই, প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যসহ সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনী বেড়িয়ে আসুক। অপরাধী যে দলেরই হোক তার শাস্তি নিশ্চিত হোক। কিন্তু এ ব্যাপারে বর্তমান সরকারের সদইচ্ছার ঘাটতি আছে। তাদের উপর আমাদের কোন  আস্থা নেই। আমরা মনে করি, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরই কেবল সুষ্টু বিচার সম্ভব।

এদিকে, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ১৫ম মৃত্যুবার্ষিকী দিবসটি পালন উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে আওয়ামীলীগ অঙ্গ সংগঠন ও কিবরিয়া স্মৃতি পরিষদ।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হবিগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ জুনাইদ চৌধুরী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.