কিছু মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র জমা না দিয়ে চুরি-ডাকাতি করতো : নাটোরে আ. লীগ নেতা (ভিডিও)

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুসফিকুর রহমান মুকু বলেছেন, ‘কিছু লোকজন, কিছু মুক্তিযোদ্ধা এ দেশে অস্ত্র জমা দিয়েছিল না। না দেওয়ার কারণে দেশে প্রতিদিন, প্রতিরাতে চুরি-ডাকাতি হতো।’
গতকাল সোমবার (১০ জানুয়ারী) বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। পরে তার বক্তব্যেও ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় । নিন্দার ঝড় উঠে।
মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে বির্তকিত বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মুসফিকুর রহমান মুকু বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘রাজাকারদের কথা বলতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বলে ফেলেছি। আমি বলেছি একাত্তরে কিছু রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে চুরি-ডাকাতি করেছে।”আমার নিজ দলের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এডিটিং বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে আমার সম্মানহানির চেষ্টা করছে।
অনলাইন এ্যাকটিভিস্ট আঃ কাদের গনি ফেসবুকে লিখেছেন,‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমাদের এমনই দুর্ভাগ্য, মুক্তিযোদ্ধার ইতিহাস শেখাচ্ছে রাজাকারের বাচ্চারা!
রায়হান আলী নামে এক যুবলীগ কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বিটিসি নিউজকে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চোর ডাকাতের তকমা লাগানোর সাহস তিনি কোথা থেকে পেলেন ? ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে তাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কার করা উচিত।
নাটোর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুর রউফ এমন বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার এবং তাদের সন্তানরা একাত্তরেও এমন প্রচারণা করে বহু মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির মিথ্যা অভিযোগ করে জেল খাটিয়েছে। এখনও এসব ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে।’
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নাটোর সদর ও নলডাঙ্গা উপজেলা কমান্ডের সহ-কমান্ডার হাকিম উদ্দিন বিটিসি নিউজকে জানান, ‘মুসফিকুর রহমান মুকুর বাবা হযরত আলী ছিলেন শান্তি কমিটির সদস্য। তার ছেলে হয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। রাজাকারের সন্তান বলেই সে এমন বক্তব্য দিয়েছে।’
তিনি অরোও বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের পর মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেব যে এমন বক্তব্যের প্রতিবাদের আমরা কী কর্মসূচি গ্রহণ করব।’
এ বিষয়ে নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস শুকুর বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘মুসফিকুর রহমানের গ্রামের পার্শ্ববর্তী ধনোকড়া গ্রামে কিছু মুক্তিযোদ্ধা একাত্তরের পরে অস্ত্র জমা না দিয়ে চুরি-ডাকাতি করে এবং জনগণ তাদের ধরে পুলিশে দিয়েছিল। পরে তারা জেল খেটে বের হয়েছে। এখন তারা মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পাচ্ছে। সেই বিষয়টি তুলে ধরে কিছু বিপথগামী মুক্তিযোদ্ধার কথা বলতে গিয়ে ভুল করে এমন কথা বলে ফেলেছেন মুসফিকুর রহমান।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.