কালের বির্বতনে গ্রাম-বাংলায় থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে রেডিও

দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি: এক সময় দেশ-বিদেশের খবরা-খবর জানার একমাত্র মাধ্যম ছিল রেডিও। তখন খবরের সময়ে শহর কিংবা গ্রামের লোকজন একটা নির্দিষ্ট স্থানে খবর শোনার জন্য সমবেত হত। কারণ তখনো সবাব ঘরে ঘরে রেডিও’র প্রচলন ছিলনা।
ফলে অনেকেই বিয়েতে উপঢৌকন হিসেবে সনি, সুজন সখি, ডেলট্রন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রেডিও (বেতার) গ্রহণ করত। এরপর অবশ্য রেডিও’র প্রচলন বৃদ্ধি পেয়ে সবাব ঘরে ঘরে জায়গা করে নিয়েছিল। এর ফলে আর শহর কিংবা গ্রামের মানুষকে দল বেঁধে জড়ো হয়ে খবর শুনতে হতো না।
কারণ প্রত্যেকেই তখন নিজ নিজ রেডিও টুইনিং করে খবর শুনতেন। সে সময়ে তরুন সমাজের কাছে রেডিও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তারা রবীন্দ্র-নজরুল সঙ্গীত,গানের ডালি, দূর্বার, সুখী সংসার, দর্পন, ছায়া ছবির গান, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান, নাটক, শোনায় অভ্যস্থ হওয়ায় রেডিও’র প্রচলন ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল।
তবে সেই জনপ্রিয়তা তরুন প্রজন্ম বেশি দিন ধরে রাখতে পারেনি। সময়ের বিবর্তনে তারা রেডিও ছেড়ে টেপ রেকর্ডার (ক্যাসেট) এর দিকে ঝুঁকে পড়ে। পরবর্তীতে সেটিরও বিলুপ্তি ঘটিয়ে মোবাইল তাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। বর্তমানে মোবাইলের কারনে রেডিও’র অনুষ্ঠান জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলেছে। এখন আর তরুন-তরুনীরা আগের মত রেডিও শোনেন না।তবে এখনো কিছু ব্যক্তি আছেন যারা রেডিও বিবিসি’র খবরের উপর নির্ভশীল।
তাদেরই একজন দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গা বাজার পাড়ার মৃত গোলাম রহমান মালিতার ছেলে হাজি মো. সাদিকুল ইসলাম (৫৮) বিটিসি নিউজকে জানান, ১৯৮২ সালে আমার কার্পাসডাঙ্গা বাজারে মুদি দোকান ছিল। তখন আমি সন্তোষ রেডিও টি সখের বশে ২শ ৫০ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম। মাঝে মধ্যে দেশ বিদেশের খবরাখবর এখন ও শুনি। রেডিও টি যত্ন সহকারে রেখে দিয়েছি।
নিয়মিত শ্রোতা দামুড়হুদা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান হবি ও কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল আজিজ ভুনা বিটিসি নিউজকে জানান, বর্তমানে বিজ্ঞানের আবিষ্কারে ফলে অতি সহজেই মোবাইল এফ.এম-এর মাধ্যমে আমরা রেডিও অনুষ্ঠান গুলো শুনতে পাই।
ফলে নতুন করে আর রেডিও (বেতার যন্ত্র) ক্রয় করে খবর শোনার প্রয়োজন পড়েনা। ফলে দিন দিন আমাদের সেই ঐতিহ্যবাহী রেডিও (বেতার যন্ত্র), যার বৈজ্ঞানিক নাম টেনডেষ্টার হারিয়ে যেতে বসেছে।
দামুড়হুদা উপজেলার আরামডাঙ্গা গ্রামের বদিউর রহমান বদি একটু অন্যভাবে বিটিসি নিউজকে জানান, রেডিও’র গুরুত্ব এখনো কমে যায়নি। যাদের কাছে এটির গুরুত্ব থাকা প্রয়োজন তাদের কাছে এখনো এর যথাযথ গুরুত্ব রয়েছে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, এই স্বাধীন বাংলার প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা রেডিও’র মাধ্যমেই শুনেছি।
তাই আসুন আমরা সবাই আমাদের হারিয়ে যাওয়া এই রেডিওটির গুরুত্ব ও জনপ্রিয়তা ফিরিয়ে আনি।তাই এই বেতার যন্ত্রটিকে টিকেয়ে রাখাতে এখনই প্রয়োজন সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে যুগোপোগী অনুষ্ঠান নির্মাণ করা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি মোস্তাফিজ কচি। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.