কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে কুড়াল দিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা মামলার আসামি সত্য চন্দ্র শীল মারা গেছেন। কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে বন্দী অবস্থায় গত শুক্রবার তিনি অগ্নিদগ্ধ হন। পরদিন শনিবার রাতে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারের জেলার আবু ছায়েম এ তথ্য বিটিসি নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত শুক্রবার বিকেলে কুড়িগ্রাম কারাগারের ভেতরে সত্য চন্দ্র শীল নিজ শরীরে আগুন দেন বলে দাবি করেন জেলার আবু ছায়েম। তিনি বলেন, ‘কারা হাসপাতালের পেছন দিকে উত্তর পাশে নিজ শরীরে আগুন দেন সত্য চন্দ্র শীল। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল হয়ে রংপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি।’
কারাবন্দি অবস্থায় আসামি নিজ শরীরে আগুন দেওয়ার সুযোগ পাওয়া প্রশ্নে জেলার আবু ছায়েম বলেন, ‘সম্ভবত সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে তিনি লুকিয়ে নিজ শরীরে আগুন দেন। আমাদের কাছে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।’
কারারক্ষীদের দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে তিন জন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেল সুপার মো. শফিকুল আলম বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘আসামি নিজেই শরীরে আগুন দিয়েছে। আমাদের কাছে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। কারাবন্দি আসামি অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিন কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
এর আগে, গত ২১ জানুয়ারি ভোরে নাগেশ্বরী পৌর এলাকার কবিরের ভিটা গ্রামে নিজ ঘরে স্ত্রী লতা রানীকে (৪০) কুড়াল দিয়ে হত্যা করা হয়। তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্বামী সত্য চন্দ্র শীল কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ করেন তাদেরই দুই ছেলে। গৃহবধূর ঘরের বিছানার নিচ থেকে রক্তমাখা কুড়াল উদ্ধার করে পুলিশ। ২৬ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটানোর পর স্ত্রীকে হত্যায় অভিযুক্ত সত্য চন্দ্র শীল ঘটনার পর পালিয়ে যান। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের আদিতমারী থানার পুলিশের সহায়তায় সীমান্ত এলাকায় তার ভগ্নিপতির বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ২২ জানুয়ারি আদালতে স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন সত্য চন্দ্র। পরে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাফিজুর রহমান হৃদয়। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.