কানসৈকতে আলোচনায় ‘রেহানা মরিয়ম নূর’

বিটিসি বিনোদন ডেস্ক: কান উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশনে যেসব চলচ্চিত্র স্থান পায়, সেগুলোর কলাকুশলীদের লালগালিচাসহ নানান আয়োজনে অংশ নিতে হয়। বাংলাদেশের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবির সঙ্গে সম্পৃক্ত আটজন এসব সম্মান পাচ্ছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) বিকালে কান উৎসবের প্রাণকেন্দ্র পালে দে ফেস্টিভাল ভবনের ছাদবারান্দায় ফটোকলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের আলোকচিত্রীদের সামনে দাঁড়িয়েছেন পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, প্রযোজক জেরেমি চুয়া এবং নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু। আয়োজকদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দুটি স্থিরচিত্র প্রকাশিত হয়েছে।
কানের সম্মানজনক অফিসিয়াল সিলেকশনের আঁ সার্তে রিগা বিভাগে বাংলাদেশের প্রথম ছবি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। পালে দে ফেস্টিভাল ভবনের সাল দুবুসিতে বৃহস্পতিবার কান উৎসবের তৃতীয় দিনে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট) ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ আবার দেখানো হয়। এদিনও ১ হাজার ৬৮ আসনের প্রেক্ষাগৃহটি পরিপূর্ণ ছিলো দর্শকে। প্রদর্শনী শেষে সবাই ছবিটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এরপর সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা) কান শহরের মাল্টিপ্লেক্স ‘সিনেয়ুম অরা’য় এর আরেকটি প্রদর্শনী হয়েছে। এখানেও বেশ উৎসাহ নিয়ে ছবিটি দেখতে সমবেত হন দর্শকরা।
গত বুধবার (০৭ জুলাই) সাল দুবুসি প্রেক্ষাগৃহে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারের পর থেকে প্রশংসায় ভাসছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। প্রদর্শনী শেষের পর দর্শকরা দাঁড়িয়ে করতালির মাধ্যমে অভিবাদন জানিয়েছেন। এরপর আমেরিকান সংবাদমাধ্যম দি হলিউড রিপোর্টার, ব্রিটিশ ম্যাগাজিন স্ক্রিন ডেইলি, ফ্রান্স টোয়েন্টি ফোর, ভারতের ইংরেজি ভাষার সংবাদ চ্যানেল উইওন ছবিটি নিয়ে ইতিবাচক পর্যালোচনা প্রকাশ করেছে। কানে আসা বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র বোদ্ধারা ইত্তেফাকের কাছে তাদের ভালোলাগার কথা জানিয়েছেন। রেহানা চরিত্রে আজমেরী হক বাঁধনের অভিনয় এবং পরিচালক সাদের গুনগান গেয়েছেন তারা।
আঁ সার্তে রিগায় প্রতিযোগিতা করছে ২০টি ছবি। এর মধ্যে গতকাল দেখানো হয় অস্ট্রিয়ার সেবাস্টিয়ান মায়েসের ‘গ্রেট ফ্রিডম’, বেলজিয়ামের লরা বন্দেল পরিচালিত প্রথম ছবি ‘অ্যা ওয়ার্ল্ড’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোগোনাডার ‘আফটার ইয়াং’।
মূল প্রতিযোগিতা: গতকাল বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) উৎসবের তৃতীয় দিনে দিনভর ছিলো নানান আয়োজন। মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে দেখানো হয় ইসরায়েলের খ্যাতিমান পরিচালক নাদাভ লাপিডের “আহেদ’স নি”, নরওয়ের ইওয়াকিম ট্রিয়ারের ‘দ্য ওর্স্ট পারসন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ এবং চাদের প্রখ্যাত পরিচালক মোহাম্মদ সালাহ হারুনের ‘লিঙ্গুই।
সিনেমা ডি লা প্লাজ: সূর্যাস্তের পরপরই কানের মাচি সৈকত ভরে ওঠে আলোয়। এখানে উৎসবের ব্যাজধারীদের পাশাপাশি পথচারীরা বিনামূল্যে উপভোগ করছেন এই আয়োজন। গতকাল রাত ৯টা ৩০ মিনিটে দেখানো হয় ৭৪তম কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে স্থান পাওয়া ‘টম মেদিনা’। ২০০৪ সালে কান উৎসবে সেরা পরিচালক হওয়া টনি গ্যাটলিফ রক, ফ্লামেঙ্কো ও জিপসি সংগীতের সম্মিলন ঘটিয়েছেন তার নতুন নির্মাণে।
প্রতিযোগিতার বাইরে: হলিউড তারকা ম্যাট ডেমনের নতুন ছবি ‘স্টিলওয়াটার’-এর উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়েছে গতকাল। এতে তাকে দেখা গেছে একজন বাবার ভূমিকায়। নির্দোষ মেয়েকে খুনের বোঝা থেকে মুক্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান তিনি। ছবিটি পরিচালনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের টম ম্যাককার্থি। কান প্রিমিয়ার বিভাগে ছিলো তিনবার জুরি প্রাইজ পাওয়া ব্রিটিশ পরিচালক আন্ড্রেয়া আর্নল্ডের ‘কাউ’। তিনি এবারের আঁ সার্তে রিগা বিভাগের বিচারকদের প্রধান হিসেবে আছেন।
কান ক্ল্যাসিকস: প্রতি আসরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ধ্রুপদি ছবি দেখায় কান। কান ক্ল্যাসিকসে গতকাল প্রদর্শিত হয়েছে ফ্রান্সের আলা রেনের ‘দ্য ওয়ার ইজ ওভার’ (১৯৬৬), ইতালির রবার্তো রসেল্লিনির ‘দ্য ফ্লাওয়ার্স অব সেন্ট ফ্রান্সিস’ (১৯৫০), ইতালির পিয়েত্রো জেরমির ‘দ্য পাথ অব হোপ’ (১৯৫০), ফ্রান্সের জিল গ্রঞ্জিয়ের পরিচালিত ‘নট ডেলিভার্ড’ (১৯৫৭)।
এছাড়া বর্ষয়ান ফরাসি নির্মাতা আন্দ্রে বনজেলের নিজের জীবনের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘ফ্লিকারিং গোস্টস অব লাভস গন বাই’ এবং জাপানের প্রয়াত নির্মাতা সাতোশি কোনের ওপর নির্মিত ফ্রান্সের পাসকেল আলেক্স ভানস্যঁর ‘সাতোশি কোন: দ্য ইল্যুশনিস্ট’ দেখানো হয়েছে কান ক্ল্যাসিকসে।
এছাড়া উৎসবের তিন প্যারালাল বিভাগ ডিরেক্টর’স ফোর্টনাইট, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিটিকস উইক এবং এসিডে নির্বাচিত বিভিন্ন দেশের ছবির প্রদর্শনী হয়েছে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.