নিজস্ব প্রতিবেদক: পাবনার বেড়া উপজেলার কাজিরহাট এবং মানিকগঞ্জের আরিচা নৌরুটে প্রচন্ড ঢেউ এবং অদক্ষ (হেলপার) দিয়ে স্পিডবোট চালানোয় স্পিডবোট ডুবির ঘটনা ঘটেছে। ভাসমান অবস্থায় ১৮ জন যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (২৫ জুন) বিকেল তিনটার দিকে আরিচা ফেরিঘাট থেকে কাজিরহাট ঘাটে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শিবালয় থানা পুলিশের এএসআই আবুল কালাম বলেন, আরিচা থেকে কাজিরহাট যাওয়ার পথে স্পিডবোট ডুবির ঘটনা ঘটে। তলা ফেটে যাওয়া এ বোটের ১৮ জন যাত্রীকে অপর একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা এসে উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের কাজিরহাট নৌ পুলিশের মাধ্যেমে পার্শ্ববর্তী চর থেকে কাজিরহাট ফেরিঘাটে পাঠানো হয়। প্রবল স্রোতে ভেসে যাওয়া স্পিডবোট প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে উপজেলার ঝড়িয়ারবাগ এলাকায় উদ্ধার হয়।
জানা গেছে, আরিচা ফেরিঘাট থেকে বিকেল ৩টার দিকে কাজিরহাট স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি ও বেড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিজউদ্দিনের স্পিডবোটটি ১৮ জন যাত্রী নিয়ে ঝুকিপূর্ণভাবেই কাজিরহাটের দিকে যাত্রা শুরু করে
প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরবর্তী গোয়ালন্দ উপজেলার দেওলিয়া মৌজাস্থ যমুনায় প্রবল স্রোতে ও ঢেউয়ের কারণে স্পিডবোট উল্টে যায়।সে সময় অন্তত ৪০ মিনিট ভাসমান অবস্থায় বোট ধরে দাঁড়িয়ে থাকে যাত্রীরা।এ সময় পাশ দিয়ে যাওয়া একটি লঞ্চ ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা দ্রুত এগিয়ে এসে ডুবন্ত স্পিডবোট থেকে সকল যাত্রীকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যাত্রীদের কাজিরহাট নৌপুলিশ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পুনরায় কাজিরহাট ঘাটে পৌঁছে দেওয়া হয়।
উল্টে যাওয়া যাত্রী মাসুদ রানা বিটিসি নিউজকে বলেন, ঢাকা থেকে আরিচা ঘাট থেকে পাবনার একটি স্পিডবোটে আমরা ১৮ জন যাত্রী উঠি। মাঝপথে বড় বড় ঢেউ এসে আঘাত করতে থাকে বোটের উপর। এক পর্যায়ে চালক বোটটি বন্ধ করে ফেলে। তারপরই বোটটি উল্টে যায়। বোট বন্ধ না করলে হয়ত ডুবির ঘটনা ঘটত না। চালক অদক্ষ মনে হয়েছে। ডুবন্ত বোটের যাত্রীদের মধ্যে ৫ বছর বয়সী শিশু সুরাইয়াকে তিনি উদ্ধারের আপ্রাণ চেষ্টার একপর্যায়ে একটি নৌকা আসলে তাতে সকলকে তুলে নেওয়া হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বিটিসি নিউজকে বলেন, কাজিরহাট ফেরিঘাটের স্পিডবোটের মালিকরা অল্প টাকায় অদক্ষ চালক দিয়ে বোট চালায়। যদি এসব যাত্রীদের বড় ধরনের ক্ষতি হতো তাহলে এর ক্ষতিপূরণ দিতে কে?। ঝুকিপূর্ণভাবে যাতায়াত করতে হয় যাত্রীদের। চালাকদের কোন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় না। মাঝেমধ্যে দূর্ঘটনা ঘটে থাকে। উপজেলা প্রশাসন কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। উনারা তেমন তদারকিও করেনা। স্পিডবোট মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে। প্রশাসনের মাধ্যমে চালকদরর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেশি বেতন দিয়ে দক্ষ চালক দেওয়ার দাবি করেছেন।
বেড়া উপজেলার কাজিরহাট নৌ পুলিশের (ইনচার্জ) অরবীন্দ সরকার বিটিসি নিউজকে জানান, বেড়ার দক্ষিণ প্রান্তে স্পিডবোট দুর্ঘটনার খবরে দ্রুত পৌঁছে উদ্ধার হওয়া ১৮ জন যাত্রীকে গন্তব্যে পৌছে দেয়া হয়। স্পিডবোটটি দুর্ঘটনার ৬ কিলোমিটার দক্ষিণ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বড় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। স্পিডবোট চালকদের সতর্ক ও দক্ষ চালক দিয়ে পরিচালনা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও) মোর্শেদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগে চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এজন্য বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম / পাবনা। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.