কলা চাষ করে স্বাবলম্বী পবার মিজানুর রহমান

পবা (রাজশাহী) প্রতিনিধি: সবজি ভান্ডার হিসেবে খ্যাত রাজশাহীর পবায় বৈচিত্রময় কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে। ফুল, ফল, শাক-সবজি, ধান, গম, ভুট্টা, আলু, টমেটো, মরিচ, সরিষা মসুর, কলা, মাসকলাইসহ নানাবিধ ফসলের চাষ হচ্ছে এই অঞ্চলে।

পবার বায়ার বাসিন্দা মোঃ মিজানুর রহমান মিজান লেখাপড়া করে চাকুরি আশায় বিভিন্ন অফিসে আবেদন করতে থাকেন। কিন্তু চাকুরী নামের সেই সোনার হরিণটি ধরতে পারেননি।

অবশেষে সিদ্ধান্ত নেন চাকুরীর পেছনে আর ছুটবেন না। কৃষি প্রধান এই দেশে কৃষিতে আত্মনিয়োগ করবেন। তাঁর শিক্ষা ও মেধাকে কৃষিকাজে ব্যবহার করবেন। এই চিন্তা চেতনা থেকে বাবার সংসারের হাল ধরেন। কিন্তু একমাত্র ফসল ধান চাষ করে সংসার চালাতে হিমশিম খান। ভাবতে থাকেন বিকল্প কোন ফসল চাষ করে লাভবান হওয়া যায় কিনা।

প্রায় দুই বছর আগে তিনি বানেশ্বর বেড়াতে গিয়ে কলা বাগান দেখে কলা চাষে অনুপ্রাণিত হন। ২০১৮ সালে বড়গাছি ইউনিয়নের দাদপুর বিলে প্রায় ৭ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সেখানে উন্নত মানের জিন জাতের কলার চাষ করেন।

আজ শুক্রবার সকালে তাঁর কলা বাগানে গেলে এই কথাগুলো বলেন, মিজানুর রহমান। তিনি বলেন , কলা চাষ করতে সে সময়ে প্রায় ৭ লাখ টাকা ব্যায় হয়। কলা বিক্রি হয় প্রায় ১৫ লাখ টাকার। প্রথম বছরে লাভ হয় প্রায় ৮ লাখ টাকা। প্রতি কাদি কলা প্রায ৭০০-১৪০০ টাকায় বিক্রয় করা হয়।

এছাড়াও কলা গাছের চারা প্রতি পিচ ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রয় করা হয়। কলা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কলা গাছ লাগাতে হলে ৩ ফুট গভীর ও ৩ ফুট লম্বা এবং ৩ ফুট আড়াআড়ি গর্ত বানাতে হবে। ওপরের মাটি নিচে এবং নিচের মাটি ওপরে দিতে হবে। গর্তের মাটি ১-২ দিন রোদে শুকিয়ে নিলে ভালো হয়। পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য মাটির সাথে দানাদার বিষ মেশাতে হবে। প্রতিটি গর্তে ৮-১০ কেজি গোবর সার মেশাতে হবে। চারা রোপনের ১০-১৫ দিন পর মিশ্র সার গাছের ২-৩ ফুট দুরে মাটিতে দিতে হয়। প্রতিটি গাছের গোড়ায় পরিমাণমত পানি দিতে হবে। চারা রোপনের পর চারার গোড়া যেন শুকিয়ে না যায় আবার অতিরিক্ত পানি যেন জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের দুরত্ব হবে ৭-৮ ফুট। দিনে কমপক্ষে ৫-৭ ঘন্টা রোদ থাকে এবং বৃষ্টির পানি জমে না থাকে এমন জমি নির্বাচন করতে হবে। তাতে গাছের রোগ বালাই কম হবে। কলা বাগান সবসময় আগাছামুক্ত রাখতে হবে।

কলা চাষ করে তিনি স্বচ্ছল ও স্বাবলম্বী হয়েছেন বলে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান। বাজারদর ভালো থাকলে এ বছর আরো বেশী লাভের আশা করছেন তিনি। তাঁর কলা চাষে সফলতায় এখন অনেকেই কলা চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর পবা (রাজশাহী) প্রতিনিধি মেরাজ মোল্লা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.