কর্মক্ষেত্রের বাইরে সরকারি গাড়ি নিয়ে দুর্ঘটনা, ব্যাখ্যা চেয়েছে অধিদপ্তর

নেত্রকোনা প্রতিনিধি: বিনা অনুমতিতে কর্মক্ষেত্রের বাইরে সরকারি গাড়ি নিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার ঘটনায় নেত্রকোণা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের কাছে সন্তোষজনক বিস্তারিত ব্যাখ্যা চেয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর।
রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. শাখাওয়াত হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৯ মার্চ খাদ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক মামুন আল মুর্শেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত পত্রে নেত্রকোণা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখা চাওয়া হয়েছিল।
ওই পত্রে আরও বলা হয়েছে, গত ১৩ জানুয়ারি ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের ত্রিশাল এলাকায় নেত্রকোণা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের ব্যবহৃত সরকারি জিপ গাড়িটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। কিন্তু গাড়িটি কর্মক্ষেত্রের বাইরে কীভাবে ব্যবহৃত হলো এবং দুর্ঘটনা সংগঠিত হলো তা বোধগম্য নয়। এমন কার্যকলাপ সরকারি যানবাহন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণবিধি ও সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা পরিপন্থী। এ বিষয়ে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে কেন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার সন্তোষজনক ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। ব্যাখ্যা প্রাপ্তির পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে এর সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. শাখাওয়াত হোসেন এ তথ্য বিটিসি নিউজকে নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় প্রথমে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী এবার অধিদপ্তর থেকে তার (মিজানুর রহমান) কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। ব্যাখ্যার বিষয়ে লিখিত বক্তব্য এখনও হাতে পাইনি। তবে এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
খাদ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের গাড়িচাপায় নারীসহ দুইজন নিহত ও অধীনস্থ গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মাসিক মোটা চাঁদা উত্তোলনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এসব বিষয় নতুন করে জানলাম। তবে এ বিষয়েও তদন্ত করা হবে।
বিষয়টি অবহিত করলে খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন এসডিসি বলেন, ওই দুর্ঘটনায় নারীসহ দুই জনের মৃত্যুর বিষয়সহ অধীনন্ত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মাসিক মোটা অঙ্কের চাঁদা বিষয়েও তদন্ত করা হবে। আপনি আমার হোয়াটসঅ্যাপে সব তথ্য প্রমাণ দিয়ে রাখুন। দেখে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি বিকেলে ঢাকা-ময়মনসিংহের ত্রিশালে নেত্রকোণা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের ব্যবহৃত সরকারি জিপ গাড়িটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। বেপরোয়া গতিতে চলা জিপ গাড়িটি উল্টো সড়কের ওপারে গিয়ে একটি প্রাইভেটকারকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেটকারের চালক শহিদ মিয়া নিহত হন। প্রাইভেটকারে থাকা মেহজাবিন আক্তার রুমকী ও তার স্বামী আলী আজম ভূঁইয়া রোমান গুরুতর আহত হন।
ছয়দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রুমকী। শুরু থেকেই টাকার বিনিময়ে ঘটনা ধামা চাপা দেওয়া অভিযোগ ওঠে কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। সেই সময় দুর্ঘটনার খরচ মেটাতে অধীনস্ত সকল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা তোলার অভিও রেকর্ডও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। আলোচনায় আসে মাসোহারার টাকায় খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিজানুর রহমানের ভ্রমণ বিলাসের বিষয়। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমেও উঠে আসে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নেত্রকোনা প্রতিনিধি মো. জুলফিকার আলী মানিক। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.