করোনা সামগ্রী লোপাট : স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দূর্ণীতি গোমস্তাপুর আমলী আদালতের বিচারকের স্বপ্রনোদিত তদন্তের আদেশ


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সারোয়ার জাহানের ‘করোনা সামগ্রী লোপাট নানা দূর্ণীতি ও অনিয়মের প্রতিবেদন বিটিসি নিউজ সহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা, জেলার দৈনিক পত্রিকা ও বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ আমলে নিয়ে গোমস্তাপুর আমলী আদালতের বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট স্বপ্রণোদিত হয়ে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর এ আদেশ দিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর আমলী আদালতের বিচারক আব্দুল মালেক। আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিচারক আব্দুল মালেক নিজে স্বপ্রনোদিত হয়ে এ ঘটনায় একটি মিস কেস করেন। যার নম্বর ক্রিমিনাল মিস কেস-১/২০২০।

ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ ধারা মতে স্বপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন বিচারক। আদেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নি¤œ নহেন এমন কোন পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত অপরাধমূলক কর্মকান্ডের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ২৯ অক্টোবর ২০২০’র মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য পুলিশ সুপার চাঁপাইনবাবগঞ্জ কে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আদালতের আদেশ আমরা হাতে পেয়েছি এবং নির্দেশনা অনুযায়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোমস্তাপুর (সার্কেল) জাহিদুর রহমানকে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যথা সময়েই তদন্ত শেষে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে বলেও তিনি জানান।

আর স্বপ্রনোদিত হয়ে আদালতের একজন বিচারকের এ ধরনের আদেশকে স্বাগত জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির আইনজীবিগণ। করোনাকালে এ ধরনের অনিয়ম-দূর্ণীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তে যদি সত্যতা বেরিয়ে আসে তবে তা হবে দৃষ্টান্তমূলক। যা আগামীতে অন্য বিচারকদের অনুপ্রাণিত করবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীগণ।

এদিকে, এসব অনিয়ম-দূর্নীতির বিষয়ে এলাকাবাসী ও হাসপাতালের আরএমও ডা. সালাহ উদ্দীন আহমেদের লিখিত অভিযোগে এবং গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর রাজশাহী স্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয় পরিচালকের নির্দেশে আরেকটি তদন্ত শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

সিভিল ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরীকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি এরই মধ্যে শুরু করেছে। গত ২১ সেপ্টম্বর থেকে এই তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয় এবং ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সিভিল সার্জনকে লিখিত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

গোমস্তাপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, এবিষয়ে আমাকে পুলিশ সুপার অফিস থেকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত করে সময়ের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

তবে অভিযোগকারীদের অভিযোগ, সিভিল সার্জন তদন্তের নামে অভিযুক্ত ইউএইচএফপিও ডা. সারওয়ার জাহানকে বাঁচানোর জন্য নানা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। তাই এই তদন্ত কমিটি বাদ দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত টাস্কর্ফোস অথবা মহাপরিচালক বা বিভাগীয় পরিচালকের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি করে সুষ্ঠ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন অভিযোগকারীরা।

অভিযোগকারীরা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, তড়িঘড়ি করে তদন্তের কাজ শেষ করে চলে গেছেন ঘটনাস্থলে একদিন গিয়ে পরবর্তীতে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে তদন্তের কাজ করেছেন তদন্ত কমিটি। ফলে এই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহের কৌশল হিসেবে ডা. সারওয়ার জাহান সরকারি বাসভবন থেকে এসি খুলে হাসপাতালে জমা দিয়েছেন এবং রাতে গোপনে ফুল বাগান থেকে ভেষজ বাগানের গাছের গুড়িগুলো তার লোকজন দিয়ে উঠিয়ে আলামত নষ্টের অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী, হাসপাতালের ষ্টাফ এবং আরএমও ডা. সালাহ্ উদদীন আহম্মেদ।

অভিযুক্ত ডা. সারোয়ার জাহানের সাথে আদালতের আদেশের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি জেনেছেন বলে জানান। সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালকের নির্দেশে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। এখন পর্যন্ত ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে এবং তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। শীঘ্রই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.