করোনা আক্রান্তের ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে টাকা হাতিয়া নেওয়ার অভিযোগ

নাটোর প্রতিনিধি: শহর থেকে গ্রামে ফেরা ব্যক্তিরা শরীরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাড়ি ফেরার অভিযোগ এনে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামে ওই ঘটনা ঘটেছে।

এনিয়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা গ্রামবাসীর সহায়তায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। ওসি তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী ব্যক্তির পরিবার ও গ্রামবাসীরা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ঢাকা, গাজীপুর ও গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকা থেকে নারীসহ কমপক্ষে ১০ জন ৩-৪ দিন আগে গ্রামে ফেরেন। পরিস্থিতি বিবেচনা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে হোমকোরাইন্টানে বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন তাঁরা।

এসুযোগে পাশের বিয়াঘাট বাবলাতলা গ্রামের রোস্তাম আলী স্থানীয় গ্রাম পুলিশ শহিদুল ইসলামের সাথে যোগসাজশ করে গ্রাম ফেরত ওই ব্যক্তির পরিবারকে করোনা আক্রান্তের ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, তাঁর ছেলে রাজু আহম্মেদ ৪-৫দিন আগে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফেরেন। তার পর থেকে বাড়িতেই অবস্থান করছে। গ্রামে পুলিশ শহিদুল ইসলামের সাথে রোস্তাম আলী এসে বলেন ‘ তার ছেলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত’ দুই হাজার টাকা দিলে বিষয়টি পুলিশে জানানো হবেনা। ভয়ে গ্রাম পুলিশের উপস্থিতিতে রোস্তম আলীর হাতে দুই হাজার টাকা তুলেদেন তিনি।

একই রকম পরিস্থিতির শিকার গাজীপুর থেকে ফেরা রিক্সা চালকের স্ত্রী রমেলা বেগম ৫০০ টাকা, গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ফেরা শাহাদৎ হোসেন ৫০০ টাকা ও আব্দুল মান্নান এক হাজার টাকা করে তুলে দিয়েছেন ওই প্রতারক চক্রের হাতে।

কমপক্ষে ১০জন গ্রামবাসী অভিযোগ করে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন,  রোস্তাম আলী এলাকা চিহ্নিত দালাল। নানা রকম অপকর্মের সাথে জড়িত তিনি। সম্মান ও ঝামেলায় জড়ানোর ভয়ে রোস্তমআলীর বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে চায়না গ্রামের সাধারন মানুষ।

শহর থেকে গ্রামে ফেরা কমপক্ষে ১০জনের কাছ থেকে এভাবে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসলেও অনেক ঘটনাই রয়ে গেছে আড়ালে। তবে গ্রাম পুলিশের সাথে যোগ সাজশ করে এ প্রতারণা মেনে নিতে পারছে না গ্রামের মানুষ।

অভিযুক্তদের এ অপকর্মের বিষয়টি থানা পুলিশও বিয়াঘাট ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন গ্রামের মানুষ। এব্যাপারে অভিযুক্তদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. মোজাহারুল ইসলাম সত্যতা নিশ্চিত করে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, গ্রামবাসীর মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার পর বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে স্থানীয়ভাবে দেখার জন্য বলা হয়েছে। তারপর বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ।

বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হক মুঠোফোনে অভিযোগটি তিনিও পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করে জানান, ‘ ঘটনা যাই ঘটুক গ্রাম পুলিশকে অভিযোগকারীদের সাথে সমঝোতা করে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তমাল হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন অভিযোগ কাম্য নয়। তার পরও তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.