কয়লা বিক্রির প্রতারকরা রিমান্ডে

বাগেরহাট প্রতিনিধি: ভুয়া ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে কয়লা বিক্রির নামে প্রতারণা করে নারায়ণগঞ্জ, বাগেরহাটসহ ৭টি জেলার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত প্রতারক চক্রের মূলহোতা মো. আব্দুল আলী ফকিরসহ ৩ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
আজ সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. খোকন হোসেন প্রতারক চক্রের মূলহোতা মো. আব্দুল আলী ফকিরকে ৩ দিন, অপর দুই প্রতারক মো. আরিফ ও মো. হারুন হাওলাদারের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, প্রতারক চক্রের মূলহোতা বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মো. আব্দুল আলী ফকির (৫০) আলিফ এন্টারপ্রাইজ, খান জাহান এন্টারপ্রাইজ ও আলম এন্টারপ্রাইজ নামে ভুয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে অপর দুই সহযোগী বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার মো. আরিফ (৪২)ও ঝালকাঠি জেলা সদরের মো. হারুন হাওলাদারকে (৬২) সাথে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীদের কাছে কয়লা বিক্রির কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
এভাবে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী একেএম আজিজুল হকের কাছে কয়লা বিক্রির কথা বলে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ফয়লাহাট বজারে বসে প্রতারণা করে ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ওই ব্যবসায়ী এসব প্রতারকদের বিরুদ্ধে রামপাল থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনার পর র‌্যাব সদস্যরা এই প্রতারক চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে। র‌্যাব ছায়া তদন্তে জানতে পারে প্রতারক চক্রের মূলহোতা মো. আব্দুল আলী ফকির ও তার সহযোগীদের নামে বাগেরহাট, খুলনা, যশোর, শরীয়তপুর, নোয়াখালী, পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন থানায় প্রতারণার মামলা ও একাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।
গত ২৮ ফেব্রয়ারী দিবাগত রাতে র‌্যাব-৬ এর একটি দল খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার চক্রাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের মূলহোতা আলিফ এন্টারপ্রাইজের কথিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল আলী ফকিরকে দুই সহযোগী প্রতারক মো. আরিফ ও মো. হারুন হাওলাদারকে গ্রেফতার করে রামপাল থানায় সোপর্দ করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব জানতে পারে গ্রেফকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ শতাধিক মোবাইল সিমকার্ড ব্যবহার ভিন্ন ভিন্ন ছদ্মনাম ব্যবহার করে কয়লা বিক্রির ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে নারায়ণগঞ্জ, বাগেরহাট, খুলনা, যশোর, শরীয়তপুর, নোয়াখালী, পিরোজপুর এই ৭ জেলার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে এনে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া ব্যবসায়ী একেএম আজিজুল হকের ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারসহ মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য আলোচিত এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামপাল থানার এসআই শেখর চন্দ্র বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামীদের রিমান্ডের আবেদন জানান।
বাদীপক্ষে বাগেরহাট জেলা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. শাহ ই-আলম বাচ্চু, অ্যাডভোকেট শেখ বাহাদুর ইসলাম ও আসামীপক্ষে অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রিমান্ড শুনানিতে অংশ নেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. খোকন হোসেন কয়লা প্রতারক চক্রের মূলহোতা মো. আব্দুল আলী ফকিরকে ৩ দিন, অপর দুই প্রতারক মো. আরিফ ও মো. হারুন হাওলাদারের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.