ঐতিহ্যবাহী বালানগর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হলেন এসএম মাহবুবুর রহমান


বাগমারা (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় অবস্থিত বালানগর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। সকল প্রকার নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষে শনিবার দুপুরে গভর্নিং বডির পক্ষে এস,এম, মাহবুবুর রহমানকে বালানগর কামিল মাদ্রাসায় নতুন অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি আলহাজ্ব জাকিরুল ইসলাম সান্টু তাঁর নিয়োগ বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, গত ৩১ জানুয়ারী/২০ইং মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অবসরে যাওয়ায় পদটি শুন্য হয়। দীর্ঘ সময়ে অধ্যক্ষ শুন্যতায় ভারপ্রাপ্ত দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাতে বেশ সমস্যায় সন্মুখীন হতে হয়েছে। সৃষ্টি হয় নিয়োগ জটিলতা। ফলে সকল নিয়ম নীতি অনুসরণ ও কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক গতকাল শনিবার (১৭ জুলাই/২১ইং) মাদ্রাসার আরবী বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক এসএম মাহবুবুর রহমানকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। মাওলানা এস,এম, মাহাবুবুর রহমান ১৯৯০ সালে অত্র মাদ্রাসায় প্রথম প্রভাষক পদে যোগ দেন।
১৯৯৮ সালে তিনি সহকারী অধ্যপক পদে উন্নতি হন। এছাড়া তিনি ওই মাদ্রাসার এক সময়ে কৃতি শিক্ষার্থী ছিলেন।
গতকাল শনিবার (১৭ জুলাই/২১) আরবী বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক এস,এম, মাহবুবুর রহমান নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে ওই দিনই তিনি অধ্যক্ষ পদে মাদ্রাসায় যোগদান করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলা তথা উত্তরবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বালানগর কামিল মাদ্রাসা। বাগমারা থানার নিকটে দিগন্ত মাঠ পেরিয়ে মনোরম পরিবেশে ১৯১৭ সালে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় মাদ্রাসাটি স্থাপিত হয়।
প্রাচীণ এই প্রতিষ্ঠান ১৯১৭ইং সালে প্রথমে খারিজী হিসেবে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত করেন। সে সময়ে ভারতের অযোদ্ধা থেকে আসা আঃ সাত্তার নামে জনৈক এক মৌলভী সাহেব স্থানীয় বালানগর গ্রামের মৃত তমির উদ্দিনের সহায়তায় প্রতিষ্ঠানটির গোড়াপত্তন করেন।
১৯৬১ সালে দাখিল হিসেবে মাদ্রাসাটি প্রথম স্বীকৃত পায়। স্বীকৃত পাবার পথ থেকে পর্যায়ক্রমে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন হতে থাকে। এই প্রতিষ্ঠানের ধারা অব্যাহত রাখতে হাল ধরেন দেশ বরেন্য আলেম আলহাজ্ব মাওলনা ওমর ফারুকী। তৎকালীন তাঁর প্রচেষ্টায় ও স্থানীয় ম্যানেজিং কমিটির আঃ করিম (ক্যাশিয়ার), আলহাজ্ব আঃ আজিজ (মেম্বর), ডাঃ আঃ গাফ্ফার, আলহাজ্ব মাষ্টার তফিল উদ্দিনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় প্রতিষ্ঠানটি ১৯৬৩ সালে আলিম ও পরবর্তীতে ১৯৬৫ সালে ফাজিল শ্রেণীতে উন্নতিসহ প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক উন্নয়ন হয়।
এই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক উন্নতি ও সফলতা অব্যাহততে পুকুরের চারি ধার নিয়ে বিশাল দ্বিতল ভবনে ঘেরা প্রাচীর ও বাইরে করা হয়েছে বিশাল ছাত্রাবাস। প্রতিষ্ঠানটি কামিল শ্রেণীতে অনুমতি অনুমোদান হয়েছে। প্রতি বছরে একবার এই প্রতিষ্ঠানে ইসলামী মহা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামী মহা সমাবেশকে ঘিরে ৩ দিন ধরে চলে বিশাল আয়োজন হয়। সমাবেশে দেশ বরেণ্য ওলামায়ে কেরামসহ স্থানীয় আলেমরা দিন -রাত ওয়াজ নছিয়ত করেন। এতে এলাকার হাজার হাজার মুসলীদের সমাগম ঘটে। সমাবেশে ওয়াজ মাহফিল ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার মুসল¬ীদের দানের বরকতে লক্ষ লক্ষ টাকা মাদরাসার আয় হয়।
মাদ্রাসাটির বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হলেও বর্তমানে মাদ্রাসাটির সার্বিক অবস্থান যথেষ্ট। পুরাতন এই প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে নব-নিযুক্ত অধ্যক্ষকের কাছে বড় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এলাকাবাসী। এব্যাপারে নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ এস এম, মাহবুবুর রহমান এক সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় জানান, দেশ আমার, গ্রাম আমার, সব দায়িত্ব আল্লাহর ইচ্ছায়, আপনাদের দোয়ায় সার্বিক ভাবে পরিচালিত হবে ইনশাল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষা বান্ধব সরকার, মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে শিক্ষার ডিজিটাল শিক্ষার প্রসার ঘটনার জন্য তিনি সর্বাত্ম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন এবং সকল বাস্তবায়নে তিনি অঙ্গিকার বদ্ধ বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগমারা প্রতিনিধি মোঃ আফাজ্জল হোসেন / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.