BTC News | বিটিসি নিউজ

আজ- বুধবার, ২৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৭ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

আজ- ২৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ঐকমত্য কমিশন ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দিয়েছে, এটা প্রতারণা : মির্জা ফখরুল

ঐকমত্য কমিশন ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দিয়েছে, এটা প্রতারণা : মির্জা ফখরুল

ঢাকা প্রতিনিধি: জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত সুপারিশে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দিয়ে প্রতারণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদের ‘বিচার সংস্কার নির্বাচন: অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেনন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের জাতীয় ঐক্যমত কমিশন তারা তাদের রিকমন্ডেশন দিয়ে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার কাছেৃ প্রধান উপদেষ্টার সইও আছে সেখানে তিনিও এই কমিশনের চেয়ারম্যান। এখন অবাক বিষ্ময় আমরা যেটা লক্ষ্য করেছি যে, আমরা খুব একেবারে অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে যে বিষয়গুলোর সঙ্গে আমরা একমত ছিলাম না আমরা সেখানে নোট অফ ডিসেন্ট দিয়েছিলাম। সেই নোট অফ ডিসেন্টগুলো লিপিবদ্ধ করার একটা প্রতিশ্রুতি ছিল তাদের(জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের)।

মির্জা ফখরুল বলেন, কিন্তু অবাক বিষয় আমরা লক্ষ্য করলাম যে, কালকে(বুধবার) যখন তারা এটা প্রকাশ করলেন সেই নোট ডিসেন্টগুলো নেই পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে ইগনোর করা হয়েছে। এটা তো ঐক্যমত্য হতে পারে না। তাহলে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনটা করা হয়েছিলো কেনো? এই ঐক্যমত্য কমিশন আমি বলব জনগণের সঙ্গে এটা একটা প্রতারণা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটা প্রতারণা এবং আমি বলব যে এগুলো অবিলম্বে সংশোধন করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আপনি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ-ওয়াদাবদ্ধ যে আপনি (বাংলাদেশে) এখানে সত্যিকার অর্থেই যেটুকু সংস্কার দরকার সেই সংস্কারগুলো করে আপনি একটা জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটা নির্বাচন দেবেনৃ সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পার্লামেন্ট আসবে সেই পার্লামেন্ট এই দেশের সংকটগুলো সমাধান করবে। আজকে যদি এর থেকে যদি কোন ব্যতয় ঘটে, এর থেকে বাইরে যদি আপনি যান তার দায় দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনাকেই(প্রধান উপদেষ্টা) বহন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ৩১ দফা দিয়ে আমরা সব রাজনৈতিক দলগুলো এই ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনটা করেছি সেখানে সংস্কারের কথাই রয়েছে। বিএনপির জন্ম সংস্কারের মধ্য দিয়ে। কিন্তু অত্যন্ত সচেতনভাবে একটা প্রচারণা চালানো হলো বিএনপি সংস্কার বিরোধীৃ এটা মিথ্যা প্রচারণা। যে দলটির সংস্কারের মধ্য দিয়ে জন্ম সে কখনো সংস্কার বিরোধী হতে পারে না। সবচেয়ে বড় প্রমাণ এখানে জোনায়েদ সাকি সাহেব বলেছেন, এসব নিয়ে আমরা অনেক আগেই কাজ শুরু করেছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, একটি কথা খুব পরিষ্কারভাবে আগেও বলেছিলাম, এখনো বলছি যেÑ আমরা মনে করি সমস্ত সংকটগুলোর মূলেই যে বিষয়টা আছে এটা হচ্ছে যে সত্যিকার অর্থে একটা গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের যে পার্লামেন্ট তৈরি হবে সেই পার্লামেন্টে এই সমস্ত যে সংস্কারগুলো হয়েছে তাকে তারা সংবিধানের মধ্যে নিয়ে আসবে এবং সেভাবে সেভাবে দেশ চলবে। আমরা সেই কারণেই কিন্তু ৫ আগস্ট বিপ্লবের পরে পরেই আমরা নির্বাচনের কথা বলেছিলাম। তখন আমাদেরকে অনেকে বলা হয়েছিল আমরা ক্ষমতা চাই সেজন্য আমরা অধিক দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছি। আজকে প্রমাণিত হচ্ছে যে, এই নির্বাচনটা যত দেরি হচ্ছে তত বেশি সেই ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলো শক্তিশালী হচ্ছে যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল দেখতে চায়, এখানে একটা এনার্কি তৈরি করতে চায়, এখানে একটা গণতন্ত্র যেন সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠিত না হয় সেই ব্যবস্থাটা দেখতে চায় ।

আলোচনা সভায় গণসংহতি আন্দোলেনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বিচার, সংস্কার, নির্বাচন- এ তিনটি দেশের জাতীয় স্বার্থে অপরিহার্য বিষয়ের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন একটি জাতীয় যাত্রা শুরু করা দরকার, না হলে জনগণের অর্জন রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, যদি বিচার ব্যবস্থা ন্যায়বিচার দিতে না পারে, নির্বাচন অবাধ না হয় এবং সংস্কার প্রক্রিয়া রাজনৈতিকভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক না হয়, তাহলে রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরবে না। তিনি বলেন, দেশে ভয় ও দমননীতির সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মানুষ আজ ভয় নিয়ে কথা বলে, ভয় নিয়ে রাস্তায় নামে-এটা গণতন্ত্রের চর্চা নয়, এটা শাসনের ভীতিকর রূপ। এক দলের জন্য এক রকম বিচার, আরেক দলের জন্য আরেক রকম- এটা ন্যায়বিচার নয়, এটা অন্যায়ের বৈধতা।

বক্তারা বলেন, অনুষ্ঠানের শেষে বক্তারা লেখক এহসান মাহমুদকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন’ বইটি বর্তমান সময়ের রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

চর্চা ডটকমের সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, এহ্সান মাহমুদ বিবেকবোধ থেকে যেমন কাজটি করেছেন ঠিক তেমনি ঐতিহাসিক দায়ও আছে তার। নব্বইয়ের স্বৈরাচার শাসন থেকে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি শুরু হয়েছিলো। এরপর কখনো কমেছে কখনো বেড়েছে; শেষ হয়নি। কেন এমনটা হয়, কী হওয়ার কথা ছিল তা এহসানের বইয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।

তিনি বলেন, এই সরকারের মধ্যে লক্ষহীনতা লক্ষ করা গেছে। তারা কী চান, কতটুকু এগোবেন স্পষ্ট নয়Ñকখনো হটকারিতা, দূর্বলতা, কখনো সিদ্ধান্তহীনতা দেখি। ফলে যে আশা নিয়ে অভ্যুত্থান হয়েছিলো তা অনেকটা স্থিমিত।

কবি ও সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী বলেন, এহ্সানকে দীর্ঘদিন ধরে চিনি। তার বইয়ে লেখাগুলো তিনভাগে বিভক্তÑ বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।

অনুভূতি প্রকাশে গ্রন্থের লেখক কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক এহ্সান মাহমুদ বলেন, আমার যা বলার তা বইয়ে বলেছি। নতুন করে বলার কিছু নেই। এতটুকু বলব, লেখালেখি করতে গিয়ে স্বৈরাচার সরকারের সময়ে চাকুরিচ্যুত হয়েছিলাম। ভবিষ্যতে কেউ যেন লেখালেখি, অভিনয় বা নিজ নিজ মত প্রকাশ করতে গিয়ে বাধাগ্রস্থ না হয়, চাকুরিচ্যুৎ না হয়।

বইটির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আদর্শ’র প্রকাশ মাহবুবুর রহমান বলেন, শাসকের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে লেখালেখি করতে হয়। যেমনটি করেছেন এহ্সান মাহমুদ। তা না হলে শাসক স্বৈরাচার হয়ে ওঠে। যেমনটি হয়েছিল হাসিনা সরকার।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দীপান্ত রায়হান।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মো. রাজু আহমেদ। #

এইরকম আরও খবর

সর্বশেষ খবর

ব্রেকিং নিউজ
ঐকমত্য কমিশন ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দিয়েছে, এটা প্রতারণা : মির্জা ফখরুল রাজশাহী’র গোদাগাড়ী সীমান্ত হতে জাটকা ইলিশসহ কারেন্ট জাল আটক রাজশাহীতে উদীচীর ৫৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের উন্নয়নে কৃষির প্রতি মনোযোগ দিয়েছিলেন : মিলন মোরেলগঞ্জে ধানের শীষে ভোট চেয়ে গণসংযোগ চীনের সঙ্গে আসিয়ান জোটের বাণিজ্য চুক্তি কী বার্তা দিল যুক্তরাষ্ট্রকে তেলাপিয়া মাছ খেলে কি সত্যিই বিপদ? সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বই আকারে প্রকাশে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা বলয় নিশ্চিত করেছে সরকার : ধর্ম উপদেষ্টা নির্বাচন নাকি জুলাই সনদ কোনটি বেশি জরুরি, জানালেন তাহের