এমন রোজা আগে দেখেনি ইউক্রেন!

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্করমজান। পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস। সামনে এলেই খুশির হিড়িক পড়ে যায় পুরো মুসলিমবিশ্বে। কিন্তু ইউক্রেনের মুসলিম জনগোষ্ঠীর কাছে এবারের রমজান একেবারেই ভিন্ন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে খুশির চেয়ে শঙ্কাই এবার বেশি। বসতবাড়ি-পরিবারের নেই কোনো ঠিকঠিকানা, তার সঙ্গে আছে খাদ্যসংকটও! অথচ চাঁদ দেখা গেলেই শনিবার ঈদ। চলমান এ যুদ্ধ সংকটের সীমাবদ্ধতার মাঝেও আশাহত হননি নিয়ারা নিমাতোভা।
ক্রিমিয়ার মুসলিম সম্প্রদায় তাতার গোষ্ঠীর প্রধান। শরণার্থী পরিবারগুলো নিয়ে একসঙ্গে ইফতার তৈরি করবেন সবার জন্য। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে বলেন, ‘নতুনভাবে গুছিয়ে আনতে হবে সব। আমরা সব কিছুর সঙ্গে নতুন করে মানিয়ে নিচ্ছি।’
রাশিয়ার অভিযানে বাস্তুচ্যুত হওয়া মুসলিম পরিবারগুলোর জন্য ইফতারের আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন এই মুসলিম নেতা। তিনি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা জাপোরিঝিয়া থেকে ফোনে আলজাজিরাকে বলেন, ‘অনেক মুসলিম এরই মধ্যে ইউক্রেন ছেড়ে বিদেশে চলে গেছে, যারা আছেন তাদেরও সাহায্য দরকার।’
রুশ সেনা অভিযানের পাঁচ সপ্তাহে ইউক্রেনে বাস্তুচ্যুত হয়েছে এক কোটির মতো মানুষ। যাদের মধ্যে ৪০ লাখের বেশি মানুষ বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে, আর বাকিরা দেশের মধ্যেই হয়েছেন বাস্তুহারা। ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যার এক শতাংশ মানুষ মুসলিম। যুদ্ধের আগে ইউক্রেনে ২০ হাজারের বেশি তুরস্কের মানুষ অবস্থান করছিল।
এবারের রমজানটা ইউক্রেনের মুসলিমদের জন্য যেমন কঠিন, তেমন আবেগের। কারণ এবার তাদের দেশে মুহুর্মুহু বোমা পড়ছে। কারফিউ চলছে, চলাচলেও আছে নিষেধাজ্ঞা। যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়ায় অনেক মুসলিমই তাদের পরিবারের সঙ্গে ইফতারের মতো আয়োজনে অংশ নিতে পারবেন না। কেউ আছেন নিজের ঘর থেকে অনেক দূরে।
নিমাতোভা বলেছেন, ‘আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা পেতে সর্বোচ্চ করতে প্রস্তুত আছি। আমরা আমাদের পরিবার, আত্মা, দেশ ও ইউক্রেনের মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করব।’ ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া রুশ অধিকারে চলে যায় তখন নিজের এলাকা ছেড়ে নিমাতোভা জাপোরিঝিয়ায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। বলেন, ‘যখন আমরা ক্রিমিয়ায় ছিলাম, কখনো ভাবিনি একদিন আমাদের এই এলাকা ছাড়তে হবে।’ #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.