এক সফল ও আত্মনর্ভরশীল নারীর নাম ফাহমিদা হক

বিশেষ (নাটোর) প্রতিনিধি: নারীরা যখন বিভিন্নভাবে আÍনির্ভরতার পথ খুঁজছেন, ঠিক তখনই ফাহমিদার মাথায় আসে বুটিক শিল্প সম্প্রসারণের কাজ। সংসারে আর্থিক কোনো সঙ্কট না থাকলেও ১০ বছর আগে অনেকটা শখের বসেই বুটিক শিল্পের কাজ শুরু করেন ফাহমিদা। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দিনে দিনে তার এ শিল্পে সফলতা আসে।

নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় মানস¤পন্ন কাজের জন্য খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু করলেও এখন অনেকটা বড় পরিসরেই বুটিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করেছেন।

খুলেছেন নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নাম দিয়েছেন ফাহমিদা বুটিক।সরকারি-বেসরকারি চাকরি ছাড়াও বিভিন্ন স্বাধীন পেশায় যুক্ত হয়ে আÍনির্ভরশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিজেকে করেছেন প্রতিষ্ঠিত।

ছোটবেলা থেকে ইচ্ছে ছিল নিজের পাঁয়ে দাঁড়াবেন কিন্তু অল্প বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে গিয়ে ছেদ টানতে হয় সে ইচ্ছের। ইতিমধ্যে কোলজুড়ে আসে এক মেয়ে ও এক ছেলে। ১

৯৯৫ সালের কথা স্বামী চাকরির সুবাদে সারা দিন বাইরে থাকতেন। সে সময় অনলাইনে চোখে পড়ে অনলাইনভিত্তিক বুটিক হাউস, ডিজাইন ও হ্যান্ডিক্রাফটসের সাইটে। এখান থেকে ডিজাইন শিখতে থাকেন। বাজার থেকে কাপড় কিনে নিজের মতো ডিজাইন ও হাতের কাজ শুরু করেন।

একদিন মেয়ের স্কুলের অন্যান্য অভিভাবকদের নিজের ডিজাইন করা ৩/৪ টা এমব্রয়ডারি-জামা দেখান । যেটা তারা মুগ্ধ হয়ে ফাহমিদার জামার প্রশাংসা করেন ।

একজন অভিভাবক একটি এমব্রয়ডারি-জামা অর্ডার দেন এবং অগ্রিম ৩০০ টাকা হাতে গুজে দেয়। সেটাই ফাহমিদার জীবনের প্রথম অর্ডার। এরপর কোনঠাসা স্বপ্নগুলো পুনরায় জেগে উঠে। নিজের পায়ে নিজে দাড়াতে পারবো। সব সময় স্বাবলম্বী হওয়ার বাসনাটা ছিল ফাহমিদার মধ্যে।

সেই ভাবনার বাস্তব রূপ দিতে স বছরই নিজের জমানো তিন হাজার টাকা দিয়ে কাপড় কিনে নিজেই ডিজাইন করে জামা তৈরী করে । প্রতিবেশি ও পরিচিতদের তৈরি পোশাকগুলো দেখাতেই অনেকেই পছন্দ করে কিনে নেন। সেখান থেকে উৎসাহটা আরো বাড়ে।কেনা হয় একটা এমব্রয়ডারি মেশিন এবং একটি সেলাই মেশিন।

দুজন কর্মীও নিয়োগ দেওয়া হয়। এভাবেই বাড়তে থাকে কর্মযজ্ঞ। কাপড়ের গুণগত মান ব্যাপারে জানতে তিনি যান ইসলামপুর, নরসিংদী বাবরহাট, টাংগাইল, যশোর, জামালপুরে। এসব জায়গা থেকে মালামাল সংগ্রহ করে বিক্রির মাধ্যমে তিনি নানান ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন ।

এভাবেই কেটে যায় আরও কিছুটা সময়। স্বপ্ন ছিল নিজে কিছু করার। নিজের একটা পরিচয় থাকবে হোক সেটা ছোট বা বড় এ ভাবনা থেকেই উদ্যোগক্তা হওয়ার ইচ্ছে আসে।

২০১৩ সালে নিজ উদ্যোগে শুরু করেন “ফহমিদা বুটিক” ভালই চলছিল তখন । ঘরে বসে নিরাপদে অনলাইনে ব্যবসা করা যায় তাই অনলাইনে ফাহমিদা বুটিকস এর যাত্রা শুরু করেন ।

ফেসবুক পেজ (https://web.facebook.com/fahmidasboutique4/ ) খোলেন এবং ভাল সাড়া পান। “ফাহমিদা বুটিক” মূলত হ্যান্ডস্টিচের কাজ করে থাকে। কামিজ, শাড়ি, থ্রিপিস সব কিছুর ডিজাইন নিজে করে থাকেন। ভাল মান, কাজের ভিন্নতা ও দাম তুলনামূলক কম হওয়া প্র্রোডাক্টগুলো খুব সহজেই ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ । মানসম্মত পণ্য নিয়ে অনলাইন বিজনেসে সফলতা পান ফাহমিদা বুটিক ।

ইতিমধ্যে অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফাহমিদা বুটিক ছড়িয়ে পড়ে লাখো মানুষের মাঝে । অনলাইনে সারা দেশে বিস্তৃত হচ্ছে তার বুটিকের ব্যবসা ।তিনি মূলত দেশীয় প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করেন ।

ফাহমিদা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন , ওই পেজে আমার ডিজাইন করা পণ্যের ছবি দামসহ আপলোড করতাম। অনলাইনে দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর অর্ডার আসতে থাকল। এখন দেশে-বিদেশে প্রচুর ক্রেতা আমার অনলাইনে নিয়মিত তিনি অর্ডার পাচ্ছেন বিদেশ থেকে। অর্ডার অনুযায়ী ইএমএসের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে পণ্য পাঠান তিনি।

আগামী দিনে বড় পরিসরে অনলাইন কেনাকাটার একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার স্বপ্ন তাঁর। ইতিমদ্যে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত বেশ কয়েকটি মেলায় অংশ গ্রহণ করে তার পোশাকের ভূয়সী প্রশাংসা পেয়েছেন । পরিকল্পনা রয়েছে দুস্থ ও অসহায় নারীদের নিয়ে কাজ করার। নিজের উদ্যোগ ও কাজটাকে ভালবেসে করি।ফাহমিদা হক।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (নাটোর) প্রতিনিধি মো. নাসিম উদ্দিন নাসিম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.