এক দশকের সর্বোচ্চ শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত রাখাইন

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অতি শক্তিশালী রূপে ঘূর্ণিঝড় মোচা রোববার বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের উত্তর রাখাইন রাজ্যে আঘাত হেনেছে। এর ফলে প্রবল বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়ায় ভেঙে পড়েছে টেলিযোগাযোগ সেবা, উপড়ে পড়েছে বহু গাছ। সেই-সঙ্গে আকস্মিক বন্যাসহ বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে।
দ্য ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫৯ কিলোমিটার বেগে মিয়ানমারের ওপর আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘মোচা’। এটি প্রথম আঘাত হানে মিয়ানমারের পশ্চিম উপকূল রাখাইনের রাজধানী সিটওয়েতে। গত দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে মিয়ানমারে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় এটি।
ঘূর্ণিঝড় কবলিত স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টিপাত এবং তীব্র বাতাসের কারণে বহু গাছ উপড়ে পড়েছে। অসংখ্য ঘরবাড়ি ও উপরের অংশ উড়ে গেছে।
সিটওয়ে’র এক বাসিন্দা দ্য ইরাবতীকে বলেন, প্রচণ্ড বাতাস এবং প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। আমি অনুভব করছি আমার চারপাশের সবকিছু কাঁপছে এবং কাঁপছে…।
ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে কিছু বাসিন্দা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে উপড়ে পড়া বড় বড় গাছ, উড়ে যাওয়া ছাদের ছবি শেয়ার করেছেন। সিটওয়েতে নিস্তব্ধ বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া রাস্তাগুলোর ছবিও অনেকে শেয়ার করেন।
ঝড়ের কারণে একই ধরনের ধ্বংসযজ্ঞের খবর পাওয়া গেছে রাজ্যের গোয়া এবং কিয়াউকফিউর মতো অন্যান্য শহর থেকে। স্থানীয়রা আশেপাশে জলোচ্ছ্বাসের কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যার কথা জানিয়েছেন। সিটওয়ে অঞ্চল বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে যুক্ত।
প্রবল বাতাসে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সিত্তে, কিয়াউকতাও, মংডু, মিনবায়া এবং অন্যান্য অঞ্চলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। প্রথমে মোবাইল ফোনের সংযোগ থাকলেও বিকেলের দিকে সেটিও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
রাখাইনের ফাইবার ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘মেগা নেট’ তাদের ফেসবুক পেজে ঝড়ের কারণে সেবা বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে।
রোববার বিকেল পর্যন্ত রাখাইনের রাজধানী ও আশেপাশের এলাকায় ঝড়ের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঝড়ের কেন্দ্র সিটওয়ে ও আশেপাশের অঞ্চলগুলো অতিক্রম করেছে।
তবে স্থানীয় আবহাওয়াবিদরা আরও মারাত্মক ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করেছেন, যা সাধারণত ঘূর্ণিঝড় কেটে গেলে ঘটে। মিয়ানমারের আবহাওয়া ও হাইড্রোলজি বিভাগ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি এখন দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সেখানে চিন রাজ্য, মাগওয়ে ও সাগাগিং অঞ্চল রয়েছে। এসব অঞ্চলও ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
গ্লোবাল ডিজাস্টার অ্যালার্ট অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন সিস্টেম অনুমান করছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা মিয়ানমারের ২ মিলিয়ন লোককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.