‘এই জয় বাংলার জয়। বাংলাই পারে।’ বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

(‘এই জয় বাংলার জয়। বাংলাই পারে।’ বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা–ছবি: প্রতিনিধির)
কলকাতা প্রতিনিধি: নন্দীগ্রামে জিতেছেন। জিতেছেন গোটা বাংলার মন। ভোটের যুদ্ধে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আজ রবিবার হুইলচেয়ারও ছাড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের পায়ে হেঁটেই এলেন দলীয় কার্যালয়ে। বার্তা দিলেন, বাংলাই পারে।
নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজারে পায়ে চোট পাওয়ার পরে এই হুইলচেয়ারই ছিল তাঁর অষ্টপ্রহরের সঙ্গী। নন্দীগ্রামের ভোটের দিন এই হুইলচেয়ারে বসেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুই ঘণ্টা ধর্না দিয়েছিলেন বয়ালের ভোট কেন্দ্রে।
এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে এখন নন্দীগ্রামে গণনা শেষ হয়নি। তবে জয়ের অভিমুখেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর দল নিরঙ্কুস সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে সে বিষয়ে আর কোনও সন্দেহ নেই কারণ।
নন্দীগ্রামে জয় ছাড়াও গোটা রাজ্যেই তৃণমূলের ঝড় দেখা যাচ্ছে। তৃণমূল বলছে, বাংলা নিজের মেয়েকে চায় এই স্লোগানকে প্রমাণ করা এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। এমনকি গত লোকসভা নির্বাচনে পিছিয়ে থাকা জেলা মালদহ, ঝাড়গ্রাম, নদিয়া জেলাতেও তৃণমূলের প্রার্থীদের ফল অভাবনীয়।
২০২১ নির্বাচনে বিজেপির টার্গেট ছিল এবার পূর্ব-মেদিনীপুর, বলা হচ্ছিল শুভেন্দু অধিকারীর গড় এই এলাকা। তাঁকেই পোস্টার বয় বানিয়ে লড়াইয়ে নেমেছিল বিজেপি। কিন্তু ভোটের দিন বেলা গড়াতে দেখা যাচ্ছে ব্র্যান্ড মমতার সামনে দাঁড়াতেই পারছে না বিজেপি।
গোটা রাজ্যে সকাল থেকেই ট্রেন্ড পরিষ্কার হয়ে গেলেও নন্দীগ্রামে (Nandigram) সাপ-লুডোর খেলা চলছিল শুরু থেকেই। শেষ পর্যন্ত নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীকে ১২০০ ভোটে হারালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর তারপরই হুইল চেয়ার ছেড়ে বাড়ির বাইরে বেরোলোন মমতা।
সাংবাদিক বৈঠক এখনও না করলেও কালীঘাটে উপস্থিত হওয়া অগণিত কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে মমতা বললেন, ‘এই জয় বাংলার জয়। বাংলাই পারে।’ এরপরই মমতা স্পষ্ট করে দেন, ‘এখন প্রথম কাজ করোনা নিয়ন্ত্রণ। কোভিডের জন্য সকলে যত্ন নিন।’
বিজয় মিছিল নিয়েও দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘বিজয় মিছিল এখনই নয়। আপনারা সকলে বাড়ি গিয়ে ভালো করে স্নান করুন। সকলে মাস্ক পরুন। বিজয় মিছিল নিয়ে পরে জানানো হবে।’
এদিন, রাজ্যের ফল নিশ্চিত হতেই দেখা গেল কালীঘাটে নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পায়ে হেঁটে অফিসে ঢুকছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১১ মার্চ নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজারে পায়ে চোট পেয়েছিলেন মমতা।
তারপর থেকে হুইলচেয়ারই ছিল তাঁর সবসময়ের সঙ্গী। সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, বাড়ি ফিরতে পারছেন না বলে প্লাস্টার কাটাতে পারছেন না পায়ের। অবশেষে রাজ্যে ফের ক্ষমতায় আসার দিনই নিজের পায়ে উঠে দাঁড়ালেন মমতা।
অমিত শাহ প্রায় পড়েই ছিলেন বাংলায়। নরেন্দ্র মোদি প্রায় প্রতি সপ্তাহে এসে সভা করেছেন রাজ্যে। দাবি করেছেন, বিজেপির জেতা শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু রবিবার বাংলার ফলাফল ঘোষণা শুরু হতেই দিকে-দিকে সবুজ ঝড় ওঠে। প্রায় ২০০ আসনে এগিয়ে যেতে শুরু করে তৃণমূল।
শাসক দল ছেড়ে বিজেপি নাম লেখানো নেতারাও একেএকে ধরাশায়ী হতে থাকেন। কিন্তু টানটান উত্তেজনা ছিল নন্দীগ্রাম নিয়ে। শেষ লগ্নে এসে সেই নন্দীগ্রামেও তৃণমূল নেত্রী ১২০০ ভোটে হারান শুভেন্দু অধিকারীকে।
এরপরই নিজের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেন তিনি। ভোটের ট্রেন্ড স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরপরই জাতীয় স্তরের সকল বিরোধী নেতাই শুভেচ্ছা জানান মমতাকে। অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং’ও।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর বিশেষ (কলকাতা) প্রতিনিধি রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। # 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.