উলিপুরে বকাটে কর্তৃক পিতাকে মারপিটের অপমান সইতে না পেরে শিক্ষার্থীর বিষপান

প্রতীকী ছবি
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের উলিপুরে বখাটেরা মেয়েকে জোড়পুর্বক তুলে নেয়ার চেষ্টা এবং বাবাকে শারীরিক ভাবে মারপিটের অপমান সইতে না পেরে এক শিক্ষার্থী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে, পৌরএলাকার নারিকেলবাড়ি তেলিপাড়া গ্রামে। সে নারিকেলবাড়ি পন্ডিত মহির উদ্দিন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এঘটনায় ভূক্তভোগি ওই শিক্ষার্থীর পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন।
পারিবারিক ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের জুলফিকার আলী মানিকের কন্যা জুই আক্তার (১৫) কে একই গ্রামের জেয়াদুল হকের পুত্র শেখ ফরিদ (২১) ও তার বন্ধু আকবর আলী ভেদুর পুত্র সেনা মিয়ার(২০) সহযোগীতায় দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। বিষয়টি ওই শিক্ষার্থী তার বাবা-মাকে জানায়।
পরে শিক্ষার্থীর পিতা জুলফিকার আলী মানিক বখাটেদের পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এরই জের ধরে গত সোমবার সকাল ১১ টার দিকে শেখ ফরিদ, সেনা মিয়াসহ প্রায় ১৭-১৮ জনের একটি সংঘবদ্ধদল মানিক মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায়।
এসময় মানিক মিয়া বাধা দিলে দূর্বৃত্তরা তাকে এলাপাতারি মারপিট করে। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যায়। বখাটেদের উৎপাত এবং বাবাকে শারীরিক লাঞ্চনার ঘটনা সইতে না পেরে রাগে ক্ষোভে ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থী জুই আক্তার সবার অজান্তে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানকার কর্মরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এরপরও বখাটেদের দল ওইদিন বিকেলে কয়েকদফায় ভূক্তভোগী পরিবারটির উপর ও হামলা চালিয়ে  বাড়ীঘর ভাংচুর করে।
এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় ওই দিন সন্ধ্যায় প্রতিবেশি আব্দুল হাকিমের পুত্র মিলন মিয়াকে কুপিয়ে জখম করে ওই দূর্বৃত্তরা। পরে তাকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে সোমবার রাতেই ওই শিক্ষার্থীর পিতা জুলফিকার আলী মানিক নামীয় ৯ জন ও অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনের নামে উলিপুর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।
জুলফিকার আলী মানিক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, শেখ ফরিদ ও সেনা মিয়া দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছে। আমি বিষয়টি তাদের বাবা-মাকে জানালে গত সোমবার তারা লাঠি শোটা নিয়ে আমার পরিবারের লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমাকে মারপিট করে। এ অপমান সইতে না পেরে আমার মেয়ে বিষপান করে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুভাষ চন্দ্র সরকার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর তাদের অবস্থার অবনতি হলে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনার সত্যতা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে নিশ্চিত করে বলেন, এজাহার পেয়েছি, মামলার প্রস্ততি চলছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাফিজুর রহমান হৃদয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.