উন্নয়ন এর ধারা বজায় রাখতে নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

 

ময়মনসিংহ ব্যুরোআজ শুক্রবার বিকেলে ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দেশ ও জনগণের উন্নয়নে সরকারের নানা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি চাই এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন হবে। এদেশের মানুষ দু’বেলা পেট পুরে ভাত খাবে। কেউ গৃহহারা থাকবে না, সবার উন্নয়ন হবে।

এসময় তিনি দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন জানিয়ে কবির ভাষায় বলেন, ‘নিঃস্ব আমি, রিক্ত আমি দেবার কিছু নাই/ আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’।

এর আগে সরকারপ্রধান মঞ্চের পাশে ১৯৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহে আলাদা শিক্ষাবোর্ড, বিভাগীয় স্টেডিয়াম ও নভোথিয়েটার করার ঘোষণাও দেন। একইসঙ্গে নেত্রকোনায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং প্রতিটি উপজেলায় মডেল মসজিদ গড়ার কথাও বলেন।

বক্তব্যের শুরুতেই জাতির জনককে স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, সদ্য স্বাধীন একটি দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়। বাবা-মা-ভাই, সবাইকে হারিয়েছি। মানুষ তার আপনজনকে হত্যার বিচার চাইতে পারে, আমাদের সেই বিচার চাওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়নি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করতে চেয়েছিল জিয়াউর রহমান।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু ২০০১ সালে ষড়যন্ত্র করে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হলো না। সে সময় ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করে।

‘২০০২ সালের ৭ ডিসেম্বর ঈদের পর দিন ময়মনসিংহের ৪টি সিনেমা হলে বোমা ফুটলো। নিহত ১৮ জন। প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছে। সেই সময় আমাদের আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান ও জালাল উদ্দিনসহ অনেককে গ্রেফতার করে অত্যাচার করেছে। এই এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলের নারীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, গণধর্ষণ করেছে, ৭১’র পাক হানাদারদের মতো। আমাদের যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামানের হাতের ১০টি আঙুল কেটে দিয়েছিলো। বসতবাড়ি দখল করে ওই গফরগাঁওয়ে রাতারাতি পুকুর করা হয়েছিল।’

খুন, হত্যা, দখল, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বাংলা ভাই সৃষ্টি আর মানিলন্ডারিং এসব ছিলো বিএনপির কাজ- উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সময় সরকার ছিলো হাওয়া ভবন। ওই হাওয়া ভবনের খাওয়া মেটাতে গেয়ে দেশের কোনো উন্নয়ন হয়নি, সব অর্থপাচার হয়েছে। ২০০৮ সালে দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়। আর সেই ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা সরকার গঠন করি। ২০০৮ থেকে আজ ২০১৮ প্রায় ১০ বছর আমরা আপনাদের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছি। আজকে আমি এই ময়মনসিংহ বিভাগ ঘোষণা দিয়েছি। এই বিভাগের সার্বিক উন্নয়নে আপনাদের জন্য আমি উপহার নিয়ে এসেছি। কিছুক্ষণ আগেই আমরা সেগুলো উদ্বোধন করেছি।

তিনি বলেন, আগামী ২১০০ সাল পর্যন্ত উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছি। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নয়নশীল ও সমৃদ্ধিশালী দেশ। দেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে আপনাদের সহযোগিতা চাই। নৌকা মার্কায় ভোট চাই। যারা আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন তারা হাত তুলে ওয়াদা করেন।এসময় উপস্থিত জনতা হাত তুললে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি সবার সহযোগিতা চাই। সবাই সুন্দরভাবে বাঁচবেন। উন্নত জীবন পাবেন, সেটা আমরা চাই।#

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.