বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক:ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির প্রথম ম্যাচে জিতে এগিয়ে গিয়েছিল সফরকারী ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচে জয় তুলে সমতা আনে অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে ড্র হওয়ায় সদ্য শেষ হওয়া মেলবোর্ন টেস্ট ছিল এগিয়ে যাওয়ার লড়াই। উত্থান-পতনে ভরা এই ম্যাচে রোমাঞ্চকর লড়াই শেষে জয়ী হলো অস্ট্রেলিয়া। তাতে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল প্যাট কামিন্সের দল।
মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৭৪ রানের পাহাড়সম স্কোর গড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। জবাব দিতে নেমে প্রথম ইনিংসে এক পর্যায়ে ২২১ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসে ভারত। সেখান থেকে নীতীশ কুমার রেড্ডি আর ওয়াশিংটন সুন্দরের অনবদ্য জুটির ওপর ভর করে ৩৬৯ তুলে থামে সফরকারীরা। অজিদের দ্বিতীয় ইনিংসও ছিল উত্থান-পতনের গল্পে ভরপুর। ৯১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসা দলটিকে ২৩৪ রান পর্যন্ত নিয়ে যান শেষের দিকের প্যাট কামিন্স-নাথান লায়নরা। তাতে ভারতের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৪০ রানের।
চতুর্থ ইনিংসে জয় পাওয়া সম্ভব নয়, তাই ড্রয়ের মানসিকতায় খেলতে নামে ভারত। শেষ দিকে চা বিরতি পর্যন্ত ৩ উইকেট হারিয়ে ১১২ রান করে ভারত। অর্থাৎ, শেষ সেশনে ৭ উইকেট হারাতে হবে ভারতকে। তবে দিনের প্রথম দুই সেশনে দৃঢ়তা দেখানো ভারত শেষ সেশনে খেই হারায়। ২৫ ওভার ১ বলে ৩৪ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারে রোহিত শর্মার দল।
আগের দিনের ৯ উইকেটে ২২৮ রান নিয়ে পঞ্চম ও শেষ দিনে ব্যাটিং করতে নেমেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার নাথান লায়ন ও বোল্যান্ড। এদিন আর মাত্র ৬ রান যোগ করতেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। তাতে ভারতের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৪০ রানের। উইকেটে মাটি কামড়ে পড়ে থাকার মিশনে নেমে বরাবরের মতোই ব্যর্থ হন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ৪০ বলে ৯ রান করে আরও একবার প্যাট কামিন্সের বলে ধরাশয়ী হন ভারত অধিনায়ক।
৫ বলে ‘শূন্য’ করে বিদায় নেন ওয়ান ডাউনে নামা লোকেশ রাহুলও। নিজের নামের প্রতি আরও একবার সুবিচার করতে ব্যর্থ হয়েছেন বিরাট কোহলি। ২৯ বল টিকে ৫ রান করে আউট ভারতের সবচেয়ে বড় তারকা। এরপর দলের হাল ধরেন তরুণ যশস্বী জয়সোয়াল ও রিশাভ পান্ত। ৩৩ রানের ৩ উইকেট হারানো দলকে নিয়ে যান ১২১ রান পর্যন্ত। দুজনে মিলে উইকেটে কাটিয়ে দেন ২৮ ওভার ৩ বল।
চা বিরতির পর খেই হারায় ভারত। অনিয়মিত বোলার ট্রাভিস হেডের বলে পান্ত ক্যাচ দিয়ে ফিরলে ভারতের স্বপ্নের ড্রয়ের পথে বাধা পড়ে। এরপর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ভারতীয় ইনিংস। রবীন্দ্র জাদেজা আর নীতীশ কুমার ফেরেন ২ ও ১ রানে। তারপরও ওয়াশিংটন সুন্দরকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন জয়সোয়াল। তবে কামিন্সের বলে নাটকীয়ভাবে জয়সোয়াল আউট হলে শেষ হয় ভারতের সব আশা। মাঠের আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেন কামিন্স।
স্নিকোমিটারে বল ও গ্লাভসের স্পর্শ স্পষ্ট না হলেও বলের গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় আউটের সিদ্ধান্ত জানান বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। সপ্তম ব্যাটার হিসেবে জয়সোয়ালের আউটের পর আকাশ দীপ, জাসপ্রিত বুমরাহ ও মোহাম্মদ সিরাজকে ফেরাতে বেশি বেগ পেতে হয়নি অজিদের। তখনো অবশ্য ৪৫ বলে ৫ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন ওয়াশিংটন।
বলে-ব্যাটে সামনে থেকে দুর্দান্ত পারফর্ম করে ম্যাচ জিতিয়েছেন অধিনায়ক কামিন্স। ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে তার হাতেই। প্রথম ইনিংসে ৪৯ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি করেছেন মূল্যবান ৪১ রান। দুই ইনিংসেই ৩টি করে উইকেট আদায় করেন এই পেসার। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.