উত্তেজনার মধ্যদিয়ে খুলনায় সুজন আয়োজিত মেয়রপ্রার্থীদের মুখোমুখি অনুষ্ঠান সম্পন্ন

 

খুলনা ব্যুরো: শেষের দিকে কিছুটা উত্তেজনার মধ্যদিয়েই শেষ হলো সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন আয়োজিত মেয়রপ্রার্থীদের মুখোমুখি অনুষ্ঠান। শনিবার নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে কেসিসি নির্বাচনের পাঁচ মেয়রপ্রার্থীর সাথে খুলনার নাগরিকদের এ মুখোমুখি অনুষ্ঠানে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির জায়গা থেকে কথা বলেন নাগরিকরা এবং প্রার্থীরা।

পাঁচ মেয়রপ্রার্থীই হাতে হাত রেখে অঙ্গিকার করেন খুলনার উন্নয়নে নিজেদের সম্পৃক্ত রাখার। সেই সাথে কেসিসিকে দুর্নীতিমুক্ত রেখে নাগরিক সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখারও অঙ্গীকার করেন। পাশাপাশি খুলনার নাগরিকদের মুখেও উচ্চারিত হয় ‘আমার ভোট আমি দেব, দেখে শুনে বুঝে দেব’ এবং ‘আমার ভোট আমি দেব, যোগ্য প্রার্থী দেখে দেবে’ এ শ্লোগান।

শিক্ষাবিদ প্রফেসর জাফর ইমামের সভাপতিত্বে এবং সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মমুজদারের সঞ্চালনায় মেয়রপ্রার্থীদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, আওয়ামীলীগের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক, বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টির এসএম শফিকুর রহমান ওরফে মুশফিক, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক ও সিপিবি’র মিজানুর রহমান বাবু।

লটারির মাধ্যমে বক্তা নির্বাচিত হওয়ায় প্রথমেই নগরবাসীর উদ্দেশ্যে কথা বলেন, ইসলামী আন্দোলনের মেয়রপ্রার্থী মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক। তিনি আদর্শ নাগরিক ছাড়া আদর্শ নগর গড়া সম্ভব নয় উল্লেখ করে বলেন, যুব সমাজের মধ্যে ইসলামী আদর্শ ছড়িয়ে দেয়ার মধ্যদিয়ে আদর্শ নাগরিক গড়া হবে। সেই সাথে আদর্শ নগর গড়তে মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত খুলনা গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

এরপর সিপিবির মিজানুর রহমান বাবু তার বক্তৃতায় বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’ এই শ্লোগানের পরিবর্তে ‘আমার ভোট আমি দেব, তোমার ভোটও আমি দেব’ এই ইচ্ছা কারও থাকলে পরিহার করা উচিত। কারা এই শহরে মাদক বিক্রির সাথে জড়িত তাদের তালিকা ইতোমধ্যে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, শুধু তালিকা দিলেই হবে না, এদের ছবিও প্রকাশ করতে হবে।

নগরীর বস্তি উন্নয়ন, শিল্প নগরীর উন্নয়নসহ গরীব মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে তার সংগ্রাম সবসময় অব্যাহত থাকবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।
এরপর লটারিতে বক্তৃতার সুযোগ পান আওয়ামীলীগের তালুকদার আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, এই শহরে ছাত্র রাজনীতি থেকে তিনি বড় হয়েছেন। সবাই তার কর্মকান্ড সম্পর্কে জানেন। বিশেষ করে ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর তিনি খুলনার মেয়র ছিলেন।

তখন কি উন্নয়ন হয়েছে তাও খুলনাবাসীর অজানা নয়। এরপর ১৩ সালে তিনি পরাজিত হয়ে রামপাল-মংলা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সেখানেও অর্থনৈতিকভাবে বিভিন্ন কর্মকান্ড সচল হয়েছে। সুতরাং তার বিগত দিনের কার্যক্রম দেখলেই প্রমানিত তিনি উন্নয়ন করতে পারেন কি না। সবার পক্ষে উন্নয়ন করা সম্ভব নয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

আবারো খুলনার মেয়র হলে খুলনাকে তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করবেন বলেও জানান তিনি। জাতীয় পার্টির প্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান বক্তৃতার সুযোগ পেয়ে বলেন, সিটি কর্পোরেশনের রূপকার জাপা চেয়ারম্যান হুসেই মুহাম্মদ এরশাদ। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অনেক উন্নয়নের সাথেই এরশাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। সুতরাং নগরীর উন্নয়নে এরশাদের আদর্শের বিকল্প নেই।

মাদকমুক্ত খুলনা গড়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আল্লাহর হুকুম আর নবীর তরিকা ছাড়া মাদক থেকে যুব সমাজকে দূরে রাখা যাবে না। এজন্য তিনি ঈমানদার ব্যক্তিকে ভোট দেয়ার আহবান জানান। সবশেষে বক্তৃতা দেয়ার সুযোগ পান বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্রের সংকট চলছে। আইনের শাসন নেই, ভোটাধিকার হরণ করা হচ্ছে, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার হরণ করা হচ্ছে।

৪০ বছরের রাজনৈতিক জীবনের তিনি একজন পরীক্ষিত মানুষ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিল-কল-কারখানার সাথে তার নাড়ির সম্পর্ক। স্বপ্ন দেখানো আর স্বপ্ন বাস্তবায়ন এক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি এমন কোন স্বপ্ন দেখাবেন না যা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। খুলনার মানুষের চাওয়া-পাওয়ার সাথে সামঞ্জস্য রেখে তিনি ইতোমধ্যে ১৯ দফা ইশতেহার দিয়েছেন। যাতে নাগরিকদের স্বপ্নের কথাই উল্লেখ রয়েছে।

এই শহরে মাদক কারা নিয়ন্ত্রণ করে তাও সবাই জানে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির কেউ থাকলে তাকে বহিষ্কার করা হবে। ইজিবাইকের চাঁদাবাজি, ষ্টিকার বাণিজ্য ইত্যাদির সাথেও সরকারি দলের লোকেরা জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেয়র নির্বাচিত হলে তিনি ফুটপাত, ইজিবাইক থেকে সকল প্রকার চাঁদাবাজি বন্ধ করবেন। শুরুতে নাগরিকরা মাদক-সন্ত্রাসমুক্ত, মশা-দুর্গন্ধমুক্ত, গ্রীন সিটি ক্লীন সিটি, ফুটপাত দখলমুক্ত, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজমুক্ত, সিসি টিভি স্থাপন ও বস্তি উন্নয়নসহ বিভিন্ন #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.