উত্তাল তরঙ্গ ফ্যাসিবাদী সরকারকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে : মির্জা ফখরুল

ঢাকা প্রতিনিধি: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে জনসমুদ্রের মধ্যে যে উত্তাল তরঙ্গের সৃষ্টি হয়েছে তা এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। আসুন, আজকে আমরা তারেক রহমানের কারাবন্দি দিবসে সবাই শপথ নেই, তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন। যেদিন আসবেন সেদিন সমস্ত বাংলাদেশের মানুষ উত্তাল তরঙ্গের মতো সুনামিতে এই সরকারকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। দেশের জনগণ সেই অবস্থা তৈরি করবে যে অবস্থার মধ্য দিয়ে তিনি দেশে ফিরে আসবেন।’
আজ সোমবার এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম ও বাংলাদেশ ছাত্র ফোরামের যৌথ উদ্যোগে তারেক রহমানের ১৭তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
১/১১-এর সেনা সমর্থিত ফখরুদ্দিন আহমেদ সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমান হন ১৮ মাস কারাগানে থাকার পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ আদালতের জামিনে মুক্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য স্বপরিবারে লন্ডন যান। সেই থেকে লন্ডনেই আছেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘পরিস্কার করে বলতে চাই- কোনো নির্বাচন এদেশে হবে না তত্ত্বাধায়ক সরকার ছাড়া। এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নতুন একটি নির্বাচন কমিশনের গঠনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন হবে যে নির্বাচনে জনগন ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। সেই সময়ে তারেক রহমান দেশে এসে আমাদের নেতৃত্ব গ্রহণ করবে এবং বাংলাদেশকে নতুন করে স্বপ্ন দেখাবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারেক রহমান একজন অসাধারণ মেধাবী একজন নেতা। তিনি আজ থেকে নয়, যখন রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন সেই সময়ে প্রমাণ করেছেন তার অসাধারণ দক্ষতা. অসাধারণ দূরদৃষ্টি এবং জনগনকে সংগঠিত করবার তার একটা অসাধারণ যোগ্যতা।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, আজকে যারা ক্ষমতায় আছেন তারা সেই (১/১১) ষড়যন্ত্র থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। বরঞ্চ তারা সেই ষড়যন্ত্রের বড় অংশীদার। আওয়ামী লীগ সব সময়ই গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, আওয়ামী লীগ সব সময়ই বাংলাদেশের স্বাধিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, আওয়ামী লীগ সব সময়ই জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, ১৯৭৫ সালে যখন আওয়ামী লীগ মাত্র ১১ মিনিটের মধ্যে সংসদে গণতন্ত্রকে ধবংস করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেদিন থেকেই বাংলাদেশকে ধ্বংস করবার, তার জাতীয়তাবাদীকে বিনষ্ট করবার সেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ১৯৮১ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয় সেটা ছিল একই ষড়যন্ত্রের ফসল। একইভাবে ১/১১-তে সামরিক বাহিনীর সমর্থনে একটি অবৈধ সরকার ক্ষমতা দখল করল সেই সময়ের ফখরুদ্দিন (ফখরুদ্দিন আহমেদ) শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান হচ্ছিল সেখানে যোগ দিয়ে আজকে আওয়ামী লীগ তাদের সমর্থন দিয়েছিল।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেদিন তারেক রহমানের গ্রেপ্তার বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এই গ্রেপ্তার ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে গ্রেপ্তার করা, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে গ্রেপ্তার করা, বাংলাদেশের মানুষের বিকশিত হওয়ার, তাদের যে নিজেদের তৈরি করবার, অর্থনৈতিক-সমৃদ্ধি সৃষ্টি করবার যে ভিশন ছিল সেটাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আজকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রচুর ক্যাম্পেইন হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সেই অপপ্রচারের মূল্যটা কী? লক্ষ্যটা হচ্ছে তারেক রহমানকে খলনায়ক হিসেবে দেখানো, তার নেতৃত্বে যোগ্যতা নাই এক ধরনের একটা কথা প্রচার করতে চায়। এই প্রচারের সঙ্গে কারা যুক্ত হয়েছে যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, যারা বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তারাই এই প্রচারগুলোর সঙ্গে জড়িত হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কুৎসা যতই রচনা করে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে- কোনোটাই লাভ হবে না। মামলা করেও লাভ হবে না। ৪০ লাখ মানুষের্ বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে তাতে কি বিএনপিকে ঠেকাতে পেরেছে? ৬০০ নেতাকর্মীকে গুম করেছে তাতে কি ঠেকাতে পেরেছে? কোনো কিছুই ঠেকাতে পারবে না।’
উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের উপদেষ্টা, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.