উত্তরাঞ্চলের চার নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে !

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তায় অব্যাহতভাবে পানি বাড়ছে। এসব নদ-নদীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে। এর প্রভাবে উত্তরাঞ্চলের অন্তত আটটি জেলায় স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
এই কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, বহ্মপুত্র ও যমুনার পানি আগামী ১০ দিন বাড়তে পারে। এ ছাড়া আজ শনিবার কুড়িগ্রামের উলিপুর ও চিলমারী পয়েন্টে বহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, আগামী দুই এক দিনের মধ্যে ধরলা ও তিস্তার পানি কিছুটা কমলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, লালমনিরহাট,নীলফামারি ও রংপুরের বেশ কিছু স্থানে বন্যা দেখা দিতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ জানান, ভারি বর্ষণের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
পীরগাছা (রংপুর): সেখানে তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এর প্রভাবে এরই মধ্যে নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে পীরগাছা এলাকার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। তবে পানি দ্রুত কমে যাবে বলে জানিয়েছেন রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান।
কুড়িগ্রাম: এরই মধ্যে অনেক এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এ দুটি নদীর অববাহিকার দুই শতাধিক চরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। জানা যায়, ধরলার পানি বিপদ সীমার ১৩ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ছে তিস্তা ও দুধকুমারেও। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এসব এলাকার পাট, সবজি ও বীজতলা নিমজ্জিত হয়েছে। গ্রামীণ সড়কগুলো ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা।
লালমনিরহাট: তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ শনিবার দুপুরে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি। নিম্নাঞ্চল গুলো প্লাবিত হয়েছে।
গাইবান্ধা: জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রবাহিত হয় বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। এর ফলে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি ডুবে গেছে। পানি উঠতে শুরু করেছে চর ও নিম্নাঞ্চলের অনেক ঘরবাড়িতেও।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আগামী দুই এক দিনের মধ্যে ধরলা ও তিস্তার পানি কিছুটা কমলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.