উজির মিয়ার ঘটনায় বিন্দুমাত্র ছাড় নয় : পরিকল্পনামন্ত্রী

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় উজির মিয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, এ ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। যে কারও সঙ্গে এমনটি হওয়া উচিত নয়। এর সুষ্ঠু বিচার হবে। অপরাধী যে কেউ-ই হোক তার বিচার নিশ্চিত করা হবে। তবে অবশ্যই অপরাধীর দোষ প্রমাণিত হতে হবে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কাজ চলমান আছে। আমাদেরকে ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আমি উজির মিয়ার বিষয়টি বিন্দুমাত্র ছাড় দেব না। প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে এ ঘটনাটিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নজরে আনব।
আজ শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৫টায় উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের শত্রুমর্দন (বাঘেরকোনা) গ্রামে পুলিশের নির্যাতনে উজির মিয়া নিহত হওয়ার অভিযোগের ঘটনায় তার বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
নিহত উজির মিয়ার মা, স্ত্রী-সন্তান ও পরিবারকে সান্ত্বনা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, উজির মিয়াকে যদি নির্যাতন করা হয়, আর তা প্রমাণ হয় অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। বর্তমান সরকার এমন হত্যাকাণ্ডকে কোনোভাবেই সমর্থন করে না। আইনের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে। এমন ঘটনায় আরও বিচার নিশ্চিত করা হয়েছে, এটা দেশবাসী জানেন। নতুন করে আইন তৈরি করে উজির মিয়া হত্যার বিচার করতে হবে না।
মন্ত্রী বলেন, সরকার চায় না বিনা কারণে দেশের একজন মানুষও হয়রানির শিকার হোক। সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে আমি দেখভাল করব। তবে সব কিছু যেতে হবে প্রক্রিয়া মেনে। তদন্ত হচ্ছে। রিপোর্ট আসুক। প্রতিবেদন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ডিসি এবং এসপি দু’জনের সঙ্গে আমার দেখা হবে। তাদের সঙ্গে কথা বলব। যত দ্রুত সম্ভব ঘটনার শেষ দেখতে চাই। তবে একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে, কোনও কুচক্রী মহলের উসকানি নিয়ে কেউ যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটায়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইঙ্গিত দানকারী কেউ থাকলে তাকেও খুঁজে বের করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আইন মেনে চলতে হবে। আমাদের জন্য যে আইন সেটা সকল সরকারি কর্তা-কর্মচারীদের জন্যও। সুতরাং আইনে মানত হবে। মনে রাখতে হবে, আইন আমরা কেউ বানাইনি। সেটা ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
তিনি বলেন, উজির মিয়ার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এ ঘটনা ঢাকা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর এমনটি করার কোনও প্রয়োজনও নেই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এ ঘটনার সার্বক্ষণিক খোঁজখবর আমি নেব। সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত হোক সেটাই আমি চাই।
এ সময় নিহত উজির মিয়ার পরিবারের লোকজন, উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে একটি গরু চুরির মামলার সন্দেহজনক হিসেবে নিজ বাড়ি থেকে উজির মিয়াকে গ্রেপ্তার করে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) আদালত থেকে জামিন পেয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি উজির মিয়া নিজ বাড়িতে অসুস্থতা আরও বাড়লে স্থানীয় কৈতক হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে গত (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নিহত উজির মিয়ার স্বজনরা পুলিশের নির্যাতনে উজির মিয়ার মৃত্যুর অভিযোগ করে পাগলা বাজারে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে। পরে প্রশাসনের সুবিচারের আশ্বাসে এলাকাবাসী অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
বর্তমানে জেলা প্রশাসক কর্তৃক ৩ সদস্যবিশিষ্ট পৃথক দুটি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে উজির মিয়ার নিহতের ঘটনার তদন্ত চলছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি মো. হাবিব সরোয়ার আজাদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.