উজিরপুর থানা জামে মসজিদের গাছ অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগ

উজিরপুর প্রতিনিধি: বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী থানা জামে মসজিদের প্রায় তিন লক্ষ টাকার গাছ পানির দামে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন কি এ ঐতিহ্যবাহী মসজিদটির শুধুমাত্র কর্তৃত্ব ধরে রাখার জন্য স্থানীয় একটি মহল রাতারাতি নাম পরিবর্তন আল আকসা জামে মসজিদ বলে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছিলেন।
অবশেষে এলাকাবাসীর তোপের মুখে উজিরপুর থানা জামে মসজিদ হিসেবে পূর্ণবহাল করতে বাধ্য হন কমিটি। এলাকাবাসী পক্ষে মোঃ শাজাহান হাওলাদার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় ঐতিহ্যবাহী থানা জামে মসজিদের কক্ষে লক্ষ টাকার ছোট বড় গাছ অল্প দামে বিক্রি করে। এ বিষয়ে তিনি প্রতিবাদ করেন ও গাছ কাটতে নিষেধ করেন এতে তোয়াক্কা না করে ঢাকায় অবস্থানরত মসজিদ কমিটির সভাপতির মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন খান এর নির্দেশে ইমাম সাহেবের নেতৃত্বে তড়িঘড়ি করে অল্প দামের গাছ বিক্রি করে দেন বলে জানান।
তিনি আরো জানান এ মসজিদে শত শত বছর ধরে উজিরপুর থানা জামে মসজিদ হিসেবে স্থানীয় মুসল্লিদের সহায়তায় মসজিদ পরিচালনা করে আসছেন উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ। তারই ধারাবাহিকতায় উজিপুর মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জকে সভাপতি করে কমিটি পরিচালনা করা হতো।
কয়েক বছর পূর্বেও মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন উজিরপুর মডেল থানার সাবেক অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ সরোয়ার হোসেন, তার বদলি জনিত কারণে ওসি শিশির কুমার পাল অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করলে তিনি আর মসজিদ কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেননি।
এই সুযোগে স্থানীয় একটি মহল মসজিদ কমিটির সভাপতি সহ সকল দায়িত্ব গ্রহণ করে উজিরপুর থানা মসজিদ না বিলুপ্ত করে আল আকসা জামে মসজিদ নামকরণ করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মুসল্লি জানান , থানা জামে মসজিদ হিসেবে নামকরণ থাকলে স্থানীয় একটি মহল মসজিদ কমিটি কর্তৃত ধরে রাখতে পারতো না বলেই তারা মসজিদের নাম পরিবর্তন করেছে অবশেষে আল্লাহর রহমতে মুসল্লিদের দাবির মুখে মসজিদের উন্নয়নের কল্পে মসজিদে পূর্বের নামে ফিরে আসতে বাধ্য হয়।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মোঃ সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, ইমাম সাহেবের থাকার ঘর নির্মাণ ও পুকুরের ঘাটলা মেরামত কল্পে নিয়ম মেনে রেজুলেশন করে গাছ বিক্রি করা হয়েছে কিন্তু কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ কামাল হোসেন সবুজ সিকদার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে গাছ বিক্রিতে বাধা প্রদান করছেন।
মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি কামাল হোসেন সবুজ শিকদার জানান, মসজিদের বর্তমান সভাপতি মোঃ সাখাওয়াত হোসেন খান কোন দিনই মসজিদে নামাজ আদায় করেন না, তিনি ঢাকায় অবস্থান করেন এবং মসজিদ দেখিয়ে বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছে অর্থ আদায় করে আত্মসাৎ করেন এই অর্থ আত্মসাতে ব্যর্থ হবেন বলে তিনি উজিরপুর উপজেলা মডেল মসজিদ করতে দেননি, এমনকি মসজিদের দুর্নীতির বিষয়ে যদি কেউ প্রতিবাদ করেন তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্যাড ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে হয়রানি করে থাকেন।
তিনি আরো বলেন মসজিদের অর্থ আত্মসাৎকে টার্গেট করে তিনি তার আপন ভাইকে সভাপতি থেকে সরিয়ে দিয়েছেন অবৈধভাবে সভাপতি হয়ে মসজিদের ইমাম ও কোষাধ্যক্ষ সালাম মাস্টারকে নিয়ে যা খুশি তাই করে থাকেন। এমনকি মসজিদের চার পাঁচ লাখ টাকার গাছ মাত্র দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন এবং মুসল্লিদের মিথ্যা কথা বলে আগাম রেজুলেশন স্বাক্ষর নিয়েছেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই খাইরুল আলম জানান, স্থানীয় ও গাছ ব্যবসায়ীদের ধারণা মোতাবেক মেহগনি, চাম্বল ও রেন্ট্রি গাছ মিলে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকার গাছ অজ্ঞত কারণে মাত্র এক লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়েছে। এ নিয়ে মুসল্লিদের মধ্যে মতোবিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুল হাসান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিটিসি নিউজকে জানান, গাছ বিক্রয়ে আনিয়ম নিয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং গুরুত্ব সহকারে তদন্ত চলছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর উজিরপুর প্রতিনিধি আঃ রহিম সরদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.