উজিরপুর প্রতিনিধি: বরিশাল জেলার উজিরপুরে স্ত্রীর মোবাইল ফোনে ভিডিও কল দিয়ে স্বামীর আত্মহত্যা। ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী রিফাত জোমাদ্দার (২২) নামে এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্র।
১১মার্চ শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উজিরপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ মাদারর্শী গ্রামে হাসপাতালের সামনে ভাড়াটিয়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
সুত্রে জানা যায় নিহত রিফাত জোমাদ্দার(২২),পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার বাইশঘর গ্রামের ফোরকান জোমাদ্দারের ছেলে। রিফাত বরিশাল নগরীর ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অষ্টম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন।
তার স্ত্রী আসমা বেগম (২০) বরিশাল রহমতপুর কৃষি কলেজের পঞ্চম সেমিষ্টারের শিক্ষার্থী। কলেজের হলে থেকেই তারা পড়াশুনা করে। আসমা বেগম ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার আবুল হোসেন হাওলাদারের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রিফাত জোমাদ্দারের নানা বাড়ি উজিরপুর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডে। তার মা- বাবা ঢাকায় থাকেন । সেই সুবাদে নানা বাড়ির পাসেই পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মাদার্শী গ্রামে হাসপাতালের সামনে মৃত মোঃ হান্নান খানের বাড়িতে ১ মাস ধরে ভাড়ায় থাকেন। কিছু দিন ধরে স্ত্রীর সাথে ভালো সম্পর্ক ছিলো না বলে জানান রিফাতের পরিবারের লোকজন।
রিফাত জোমাদ্দারের স্ত্রী আসমা বেগম বলেন, রিফাতের সাথে ১ বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক করে তাদের বিবাহ হয়। রিফাত রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমার সাথে কথা বলেছে। তখন রিফাত বলেন তোমাকে বিয়ের পর থেকে আমার বাবা মা কেউ ভালোবাসেন না, এখন তুমিও আমাকে ভালোবাসো না’। রিফাত আমাকে সবসময় বোরকা পরে চলাফেরা করতে বলতো। কিন্তু কিছুদিন আগে ফেসবুকে বোরকা ছাড়া ছবি আপলোড দেওয়ায় রাগ করে ৪ দিন ধরে আমার সাথে ঠিক করে কথা বলতো না। আমাকে ভিডিওতে কল দিয়ে কথা বলে আত্মহত্যা করেছে রিফাত। আমি বিষয়টি তাৎক্ষণিক তার বন্ধু রিয়াদ ও সাওনকে জানাই। তারা সংবাদ পেয়ে রিফাতের মামা শান্তকে জানায়।
এছাড়া শান্ত লোকজন নিয়ে রিফাতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাঃ রাকিব তাকে মৃত বলে ঘোষনা দেয়। উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের প্রেরণ করেন।
উজিরপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ তৌহিদুজ্জামান সোহাগ বিটিসি নিউজকে বলেন, বছর খানেক আগে প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে করেন তারা। গত ৪-৫ দিন ধরে আসমা বোরকার পরে মুখ খোলা রেখে ছবি তুলে তা ফেসবুকে দেন। এনিয়ে অভিমান করে শনিবার রাতে স্ত্রীকে ভিডিও কল দেন। এ সময় স্ত্রীর সাথে কথার কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগান। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে উজিরপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.