উজিরপুরে জুন ক্লোজিংয়ে শিক্ষা অফিসারের একাউন্টে নিয়ম বহির্ভূত ২ কোটি টাকা জমা বিল নিতে শিক্ষকদের কাছে উৎকোচ দাবীর অভিযোগ

উজিরপুর প্রতিনিধি: বরিশালের উজিরপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতের প্রায় ২ কোটি টাকা নিয়ম বহির্ভূত ভাবে জুন ক্লোজিং এর নাম করে শিক্ষা অফিসারের একাউন্টে জমা রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ক্লোজিং এর নামে এজি অফিসে দেওয়ার কথা বলে শিক্ষকদের কাছ থেকে ১৫শত থেকে ২১শত টাকা চাঁদা দাবীর অভিযোগ রয়েছে ঐ অফিসের বিরুদ্ধে। তথ্য সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৮৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

প্রতিটি বিদ্যালয়ে বছরে স্লিপের টাকা বাবাদ ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার প্রদান করে মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া প্রায় বিদ্যালয়েই রুটিন মেইনটেনেন্স বাবদ ৪০ হাজার টাকা করে, প্রধান শিক্ষকদের ভ্রমণ ভাতা বাবদ ২৫শত থেকে ৩ হাজার, কন্টিজেন্সি ৩হাজার ৬’শ টাকা, প্রাক প্রাথমিক বাবদ ১০ হাজার টাকা করে, প্রতি শিক্ষক ৩ বছর পর পর শ্রান্তি বিনোদন বাবদ মূল বেতনের সম পরিমান ১১ হাজার থেকে ২৭ হাজার টাকা তাদের নামে বরাদ্দ হয়।

উপজেলায় প্রতি বছর সাড়ে ৩শত থেকে ৪শত শিক্ষক এই ভাতার আওতায় রয়েছেন। উপজেলায় ৩টি বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ দেড় লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়।

এ ছাড়া ১১৪টি বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট বিল বাবদ ১১৫০ টাকা করে জমা হয়। এ নিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার উপরে বিল ভাউচার করে একাউন্টস অফিস থেকে শিক্ষা অফিসারের এসটিডি একাউন্টে জমা করেন।

তবে শুধুমাত্র ২/১টি খাত ছাড়া সকল খাতের টাকা শিক্ষকদের স্ব স্ব একাউন্টে ৩০ জুনের মধ্যে স্থানান্তর হওয়ার কথা থাকলেও একই একাউন্টে জমা হওয়া নজির বিহিন ঘটনা বলে শিক্ষকরা জানান।

তবে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করায় তড়িঘড়ি করে রবিবার থেকে কিছু কিছু শিক্ষকদের একাউন্টে টাকা দেওয়া শুরু করেছেন বলে জানা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, এ বছরই প্রথম শিক্ষকদের সকল খাতের টাকা শিক্ষা অফিসের একাউন্টে জমা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিল ছাড়িয়ে নিতে হলে প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে ১৫শত থেকে ২১শত টাকা পর্যন্ত উৎকোচ দিতে হবে।

বিষয়টি শিক্ষা অফিসারের দপ্তরে বসে শিক্ষা অফিসার তাছলিমা বেগম ও হিসাব রক্ষক পারুল রানীসহ কতিপয় শিক্ষকের উপস্থিতিতে প্রতিটি স্কুল থেকে এই টাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয় বলে শিক্ষকরা অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে হিসাব রক্ষক পারুল রানী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, এই উপজেলায় আমি নতুন যোগদান করায় সবকিছু বুঝে উঠতে পারিনি। তবে উৎকোচ দাবীর ব্যাপারে শিক্ষা অফিসার বিষয়টি বলতে পারবেন বলে তিনি জানান।

শিক্ষা অফিসার তাছলিমা বেগম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, জুনের শিক্ষকদের বিভিন্ন বিলের ব্যাপারে হিসাব রক্ষক কি করছেন আমি জানিনা। উনি নতুন আসায় তড়িঘড়ি করে অনেক কিছু করতে হয়েছে। তবে জুন ক্লোজিং এ এজি অফিসসহ বিভিন্ন অফিসে কিছু খরচ আছে। কোন অনিয়ম বা দূর্নীতি হওয়ার কোন সুযোগ নেই।

উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ আশ্রাফুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, শিক্ষা অফিস থেকে কোন খরচা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে সকল বিল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রনতি বিশ্বাস বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ মজিদ সিকদার বাচ্চু বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, শিক্ষা অফিসার আমার সাথে কোন বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করেননি। তবে কোন অনিয়ম হলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর উজিরপুর প্রতিনিধি আঃ রহিম সরদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.