উজানের ঢলে কাকিনা-রংপুর সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: তিস্তার প্রবল স্রোতে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা-রংপুর সংযোগ সড়কের পাকা রাস্তা ধসে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে ২ জেলার সঙ্গে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে দুপাশে আটকা পড়েছে হাজার হাজার মানুষসহ যানবাহন।
আজ বুধবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার কাকিনা রুদ্রশ্বর মিলনবাজার এলাকার গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা বিটিসি নিউজকে জানান, দুপুর থেকে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীর গতিপথ পরির্বতন হয়ে কাকিনার রুদ্রেশ্বর গ্রামে ঢুকে যায়। ফলে গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়কে চাপ পেয়ে তা ধসে যায়। ফলে লালমনিরহাট জেলার সাথে রংপুরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
এদিকে রাত থেকে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নঞ্চলে পানিবন্দি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ শুরু করেছেন। উদ্ধার কার্যক্রমে উপজেলা প্রসাশনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সহায়তা করছেন।
ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদ ঘটনার সত্যতা বিটিসি নিউজকে নিশ্চিত করে বলেন, সড়ক ধসে যাওয়ায় কাকিনা-রংপুর যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল হক শহিদ বিটিসি নিউজকে জানান, কাকিনা ইউনিয়নে ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া কাকিনার মহিপুর সেতু রুদ্রেশ্বর এলাকায় পাকা সড়ক ধসে রংপুরের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল মান্নান বিটিসি নিউজকে জানান, কাকিনা ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে জেনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।বন্যার্তদের  শুকনো খাবার বিতরণ চলছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম বিষয়টি বিটিসি নিউজকে নিশ্চিত করে বলেন, উজানের ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, দেশের উজানে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সিকিম, দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতে ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে তিস্তা নদীর পানি সমতল বাংলাদেশে মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) মধ্যরাত হতে বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করেছে। বর্তমানে ডালিয়া পয়েন্টে ৫৩.২০ মি. লেভেল-এ, বিপৎসীমার ৬০ সে.মি. ওপর অবস্থান করছে।
গত ১২ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি সমতল ডালিয়া পয়েন্টে প্রায় ২০০ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পানি বৃদ্ধি আজ বুধবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আরও ১০-১৫ সে.মি. বৃদ্ধি পাবার শঙ্কা রয়েছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) ভোর নাগাদ এ পানি বিপৎসীমার নিচে চলে আসতে পারে।
উল্লেখ্য, ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৫ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। রাজ্যজুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়িঘর, সেতু ও রাস্তাঘাট।
ভূমিধসে রাস্তা আটকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাজ্যের নৈনিতাল, কালাঢুঙ্গি, হলদিবানি, ভবালিসহ আরও অনেক এলাকা। সৃষ্ট এ পানির চাপ কমাতেই ব্যারেজের গেট খুলে দিয়েছে দেশটি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.