ঈশ্বরদী প্রেসক্লাব নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র; বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান


ক্রাইম (পাবনারিপোর্টার: করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে সারাবিশ্ব এখন স্তব্ধ। প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে মৃত্যুর মিছিল। চরম সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে জনজীবন। করোনা মহামারীর এই দুঃসময়ে আবারো ঐতিহ্যবাহী ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সুনাম নষ্ট ও সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে একটি কুচক্রী মহল।

প্রেসক্লাবের সদস্য পদ থেকে বাদ পড়া অসাংবাদিকদের সাথে নিয়ে এই চক্রটি বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান এবং তাদের পোষ্য পত্রিকায় অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় সংবাদ প্রকাশ করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও প্রেসক্লাবের সুনাম ক্ষুন্ন করছে। তাদের এই অপতৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি।

প্রেসক্লাব কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী সাংবাদিকবৃন্দ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নিয়মতান্ত্রিকভাবে কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করে। এরপর হতেই প্রেসক্লাবের ক্ষমতা হারানোর শোকে একটি চক্র বিভিন্নভাবে বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নানাবিধ ষড়যন্ত্র শুরু করে।

নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের পর বিগত কমিটি কর্তৃক বিপুল অংকের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সামনে আসে। গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। সেই কমিটি আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে বারবার বিগত কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং কোষাধ্যক্ষকে জবাবদিহিতার জন্য নোটিশ প্রদান করে পুনরায় স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হিসাব দাখিলের আহব্বান জানালেও তারা কর্ণপাত করেনি। উল্টো তারা বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে অপতৎপরতা শুরু করে।

প্রায় ৩০ বছর ধরে তিন জন সাংবাদিক নেতা পর্যায়ক্রমে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এদের বাইরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়া অত্যন্ত দুরুহ ব্যাপার ছিল। এই তিনজনের কেউ না কেউ প্রতিটি কমিটির সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক পদে থাকতেন। শুধুমাত্র এবারেই এর ব্যতিক্রম ঘটেছে।

বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুই পদেই নতুন নেতৃত্ব আসে। এতে পুরোনো কমিটির কতিপয় ক্ষমতালোভী সাবেক সভাপতি, সম্পাদক ও তাদের দোসরদের গাত্রদাহ শুরু হয়। নেতৃত্ব হারিয়ে তারা শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়ে। শুরু করে নতুন নতুন ষড়যন্ত্র। কিন্তু আল্লাহর রহমতে কোন ষড়যন্ত্রই তারা সফল হতে পারেনি। এবার করোনা সংকটের এই দুঃসময়েও তারা ক্ষমতার লোভে আবারো ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন।

ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রের বিধি অনুযায়ী সদস্যপদ যাচাই-বাছাই একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে সদস্যপদ যাচাইবাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করে। সদস্যপদ যাচাই-বাছাই কমিটির সুপারিশ মোতাবেক সাংবাদিকতার সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন ৯ জন সদস্যের সদস্যপদ বাতিল হয়। বিগত কমিটির সাংবাদিক নেতারা শুধুমাত্র প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি নিজেদের দখলে রাখার জন্য কিছু অসাংবাদিককে ভোটার বানিয়ে রেখেছিল। ইতোপূর্বেও একই প্রক্রিয়ায় প্রায় ৫০ জনেরও অধিক সদস্যের সদস্যপদ বাতিল করা হয়। সাংবাদিকদের প্রাণকেন্দ্র প্রেসক্লাবকে অসাংবাদিক মুক্ত রাখতে প্রেসক্লাবের এই ধারা চলমান রয়েছে।

জানা যায়, বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ দুই বছর পূর্তির পর নিয়মতান্ত্রিকভাবে সাধারণ সভা আহব্বান এবং নির্বাচনের সকল প্রক্রিয়া চুড়ান্ত হয়। এসময় কুচক্রি মহল বাতিলকৃত উল্লেখিত সদস্যদের দিয়ে পাবনা আদালতে মামলা দায়ের করে। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের এক দিন আগে সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। এতে গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের পথ রুদ্ধ হয়।

এমনকি আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক সাধারণ সভা যাতে না হয় এজন্য ঘোষিত সাধারণ সভার দিনে অসত্য তথ্য দিয়ে র‌্যাব সদস্যদের হাজির করা হয়। আদালতে মামলা এখন পর্যন্ত বিচারাধীন থাকায় বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সাধারণ সভা ও নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব হচ্ছে না। তদুপরি করোনা পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখারও সরকারি বিধান রয়েছে। জোর পূর্বক অবৈধভাবে বা অনিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন ও পরিচালিত হওয়ার অভিযোগ অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই নয় বলে তারা জানিয়েছেন।

ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের নেতারা অপশক্তির অপকর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে আরো বলেন, বর্তমান কার্যনির্বাহী গঠনের পর হতে এযাবত সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত এই কমিটি এযাবত যেসকল কর্মকান্ড করেছে তা ঈশ্বরদীর সকল মহলে প্রশংসিত হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় বুকে ধারণ করে সমাজের সকল অসংগতি তুলে ধারার পাশাপাশি বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড প্রচারের কাজে বর্তমান কমিটি নিষ্ঠার সাথে কাজ করে চলেছে। যা ঈশ্বরদীর সকল রাজনৈতিক সংগঠন, সামাজিক সংগঠন এবং সুধিমহলে প্রশংসিত হয়েছে।

যারা প্রেসক্লাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন তারা অতীতে দীর্ঘদিন প্রেসক্লাবে ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে প্রেসক্লাবের অর্থ আত্মসাত, নারী কেলেংকারী ও বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। যা সকল সাংবাদিক ও ঈশ্বরদীর সচেতন মানুষ জানেন। জনধিকৃত এসব সাংবাদিকরা ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে সাংবাদিকদের তীর্থস্থান প্রেসক্লাবের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছেন।

এব্যাপারে কমিটির সহ-সভাপতি কেএম আবুল বাসার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এমন কিছু সাংবাদিক রয়েছেন, যারা কার্যনির্বাহী কমিটিতে থাকতে ব্যর্থ হলে প্রেসক্লাবের বিরোধী শিবিরে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এটি চিরাচরিত স্বভাবে পরিণত হয়েছে। ইতিপূর্বেও তারা প্রেসক্লাব নির্বাচনে পরাজিত হয়ে সাংবাদিক ফোরাম গঠন করে প্রেসক্লাবের বিরোধীতায় লিপ্ত ছিল।

ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক প্রভাষক আব্দুর বাতেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, প্রেসক্লাবের বর্তমান কমিটি অত্যন্ত সক্রিয় ও শক্তিশালী। এই কমিটির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। গত রবিবার কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় প্রেসক্লাব বিরোধী অপতৎপরতাকারী সদস্যদের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

কমিটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক স্বপন কুমার কুন্ডু বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, গঠনতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেই প্রেসক্লাব সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। অনিয়মান্ত্রিক ও অচলবস্থার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা অপপ্রচার। এই কমিটি সকল সাংবাদিককে সাথে নিয়েই এযাবত সকল কর্মকান্ড পরিচালিত করে আসছে। করোনা পরিস্থিতিতে সারাদেশে জাতীয় সংসদ ও সিটি নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন বন্ধ রেখেছে সরকার। সেখানে গঠনতান্ত্রিকভাবে সুষ্ঠধারায় পরিচালিত প্রেসক্লাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যাচার করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ক্রাইম (পাবনারিপোর্টার মো: ময়নুল ইসলাম লাহিড়ী মিন্টু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.