ঈদ সামনে রেখে ভুয়া ডিবি’র টার্গেটে গরুর হাটের ক্রেতা-বিক্রেতা

ঢাকা প্রতিনিধি: ভুয়া গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে রাজধানী ও আশেপাশের বিভিন্ন জেলার সড়কে স্বল্প সময়ের জন্য চেকপোস্ট বসিয়ে ডাকাতি করে আসছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাট কেন্দ্রীক ক্রেতা-বিক্রেতাদের নগদ অর্থ ডাকাতির পরিকল্পনা ছিল তাদের।
এমন পরিস্থিতিতে ডিবি পুলিশের জ্যাকেট পরা বা ওয়্যারলেস সঙ্গে থাকলেই কাউকে পুলিশ মনে করে সর্বস্ব না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ।
আজ বুধবার (১৪ জুলাই) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
গতকাল মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) ডিবি তেজগাঁও বিভাগ কর্তৃক মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করা চক্রের ৪ সদস্যকে আটকের বিষয়ে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আটকরা হলেন: (১) জাহিদ হাসান ওরফে রেজাউল, (২) মানিক ব্যাপারী ওরফে দারোগা মানিক, (৩) ফারুক হোসেন ওরফে নাসির উদ্দিন ও (৪) রুবেল সিকদার ওরফে রুস্তম।
এসময় তাদের হেফাজত হতে একটি বন্দুক, একটি চাপাতি, দু’টিলোহার বাটযুক্ত ছোরা তিনটি ডিবি লেখা জ্যাকেট, একটিখেলনা পিস্তল কভারসহ, ১ টি ওয়্যারলেস সেট, হ্যান্ডক্যাপ, স্টিলের বাঁশি ও নগদ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার বলেন, আটকরা সংঘবদ্ধ আন্তঃনগর ডাকাত দলের সদস্য। তারা ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাটে আগত ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের নগদ অর্থ ডাকাতি করার পরিকল্পনা করছিল। তারা ডিবি পুলিশের ছদ্মবেশ ধারণ করে রাতে রাজধানী ও আশেপাশের বিভিন্ন জেলার সড়কে স্বল্প সময়ের জন্য পুলিশের চেকপোস্ট বসিয়ে ডাকাতি করে আসছে।
এছাড়া তারা বিভিন্ন ব্যাংকের আশেপাশে ওঁত পেতে বিপুল পরিমাণ টাকা উত্তোলন ও পরিবহনকারী ব্যক্তিকে অনুসরণ করে। পরবর্তী ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ওই টাকা পরিবহনকারী ব্যক্তিকে গাড়িতে তুলে নিয়ে ডাকাতি করে এবং ভিকটিমের হাত পা বেঁধে দূরে কোথাও ফেলে দেয়।
আটকদের নামে ডিএমপিসহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলা রয়েছে এবং তারা সবাই বিভিন্ন মেয়াদে হাজতবাস ও জেল খেটেছে বলে জানা যায়। তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি এবং অস্ত্র আইনে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশিদ বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে গরুর পাইকার, গার্মেন্টস ব্যবসায়ী কিংবা যেকেউ যদি মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করেন তাহলে পুলিশকে জানান। পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে মানিস্কট সেবা নিন। মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেনে অলি গলিপথ এড়িয়ে চলুন, যেখানে সিসি ক্যামেরা রযেছে সেখানে বসে লেনদেন করুন।
গরুর গাড়ি, গরু কিংবা পশুর হাটে পাইকার ও ক্রেতার টাকা যেন কেউ ছিনতাই করতে না পারে সেজন্য ডিবি পুলিশসহ ডিএমপির অন্যান্য ইউনিট সক্রিয় রয়েছে।
তিনি বলেন, ডিবি পুলিশ সব সময় বা সব জায়গায় চেকপোস্ট বসায় না। সুতরাং ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কেউ সবকিছু নিতে চাইলেই দিয়ে দেবেন না। ভেরিফাই করুন, আশপাশে পোশাকে অন ডিাউটিতে থাকা অন্য পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হন।
ভুয়া ডিবি পুলিশের অপতৎপরতা রোধে সকলেরই সচেতনতা ও দায়িত্ব দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
আমরা এই চক্রে জড়িত আরো অনেকের নাম পেয়েছি। ঈদকে সামনে রেখে যাতে তারা কোনো ধরনের অপতৎপরতা চালাতে না পারে সেজন্য গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.