ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নাটোরের কামাররা


নাটোর প্রতিনিধি: দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলমানরা প্রতি বছর আল্লাহকে রাজি খুশি করতে ঈদুল আজহায় পশু জবাই করে। আর এই পশু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজন হয় বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি। মাংস কাটা এবং কোরবানির পশু জবাই করার বিভিন্ন ধাপে ছুরি, দা, চাপাতি এসব ব্যবহার করা হয়।
ঈদের বাকি আর ৩ দিন। তাই পশু কোরবানিকে কেন্দ্র করে নাটোরের কামারপল্লীগুলো অনেকটাই ব্যস্ত সময় পার করছে। দগদগে আগুনে গরম লোহায় ওস্তাদ-সাগরেদের পিটাপিটিতে মুখর হয়ে উঠেছে কামারশালাগুলো। আবার এসব ধাতব সরঞ্জামাদি শান দিতে শানের দোকানগুলোতেও ভিড় ক্রমেই বাড়ছে। ভ্রাম্যমাণ শানদানিদেরও অনেক ভালো সময় কাটে এই মৌসুমে। নাটোরের বড়হরিশপুর কামারপাড়া, পালপাড়া, তেবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।
নাটোরের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি বাজার শহরের হরিশপুর কামারপাড়ার কামারশালাগুলোর ব্যস্ততা এখন সবচেয়ে বেশি। নিরেন কর্মকাররাও ব্যস্ত সময় পার করছেন জবাই সামগ্রী প্রস্তুতে। ঈদে হাজার হাজার গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ, ইত্যাদি পশু কোরবানি করা হয়ে থাকে। এসব পশু জবাই থেকে শুরু করে রান্নার চ‚ড়ান্ত প্রস্তুতি পর্যন্ত দা-বঁটি, ছুরি-ছোরা, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার আবশ্যকীয় হয়ে যায়।
তেবাড়িয়া হাট ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন দামে ছুরি, বঁটি, চাপাতি বিক্রি হচ্ছে দোকানগুলোতে। বড় ছুরির দাম ১ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। ছোট ছুরির দাম ২৫০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত। বড় ছুরিগুলো ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকাচ্ছে দোকানিরা। দেশি চাপাতিগুলো কেজি হিসেবে বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ওজনের চাপাতির দাম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এছাড়া বিদেশি চাপাতির দাম ৭০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। বঁটি প্রতিটির দাম ৩০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। হাড় কাটার ছোট চাইনিজ কুড়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত।
শহরের কামারপাড়ায় কথা হয় এক দোকানে বসে থাকা জিতেন কর্মকারের সাথে। তিনি জানান, সারা বছর বেচাকেনা টুকটাক থাকে। কোনোরকম দিন যায়। এই সময়ের জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকি।
কোরবানির ঈদের আগে এক সপ্তাহ ভালো বেচাকেনা হয়। ওই সময় দামও ভালো পাওয়া যায়। শহরের পৌরসভা মোড়ে মিন্টুর মিয়ার দোকানে কাঁচা লোহার তৈরি ছোট ছুরি (গরুর চামড়া ছাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত) ৬০ এবং পাকা লোহার তৈরি ছুরি ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জবাই ছুরি মিলছে ৫০০-৬০০ টাকায়। বিভিন্ন সাইজের চাপাতি ৬০০-৮০০ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে। দা-বঁটি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০০ টাকায়।
দোকানি দীপু কর্মকার বিটিসি নিউজকে জানান, নাটোরের অন্যতম ব্যস্ত কামারপট্টি শহরের হরিশপুরে। এখান থেকেই সারা শহরে মোটামুটিভাবে সব কামার সামগ্রী সরবরাহ করা হয়।
এ ব্যাপারে কামার মনোজ রায় বিটিসি নিউজকে বলেন, এখন আমরা তৈরি করে রাখছি। বেচাকেনা শুরু হয়নি। আশা করতেছি ঈদের আগের দুইদিন পুরোদমে বেচাকেনা হবে।
এ ব্যবসায়ী অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বেচাকেনা খারাপ হবে বলে জানান। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন-করোনার মহামারির বছর। সুতরাং কুরবানি সংখ্যা খুবই কম । সে কারণে তাদের বেচাকেনাও ভালো হবে না।
অন্যদিকে ঈদ সামনে রেখে ক্রেতারাও দর দাম করছে। দেখছে কেমন ছুরি বা চাপাতি নেবে। অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর বিবেচনা করে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সকলেই আসছে মার্কেটে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.